রাজ্য সভাপতির দায়িত্ব পাওয়ার পরে এখনও পর্যন্ত দলের কোনও ভাল ফল দেখতে পাননি সুকান্ত। তবে সেই সব নির্বাচনের থেকে বালুরঘাট ও গঙ্গরামপুর পুরসভার ভোট আলাদা। এই দুই এলাকা থেকেই ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে ভাল ফল করেছিলেন তিনি। সেটাই ছিল তাঁর জীবনের প্রথম নির্বাচনী যুদ্ধ। তার পরে ফের এ বার প্রার্থী না হয়েও যেন দুই পুরসভা এলাকায় যুদ্ধে নেমেছেন সুকান্ত।
শুভেন্দুর থেকে বড় চ্যালেঞ্জের সামনে সুকান্ত, দিলীপ। ফাইল চিত্র
১০৮ পুরসভার ভোটই চ্যালেঞ্জ গেরুয়া শিবিরের কাছে। বিধানসভা নির্বাচনে আশানুরূপ ফল না হলেও ৭৭টি আসনে জয় পেয়েছিল গেরুয়া শিবির। তবে তার পরেই কলকাতা-সহ পাঁচ পুরনিগম ভোটে বিপর্যস্ত হয়েছে পদ্ম। তবে যে সব জায়গায় দল বিধানসভা নির্বাচনে জয় পেয়েছে তার মধ্যে থাকা পুরসভাগুলিতে ভাল ফল করাই চ্যালেঞ্জ। এরমধ্যেই আবার নিজের নিজের এলাকায় ভাল ফল করতে পারাটা বড় চ্যালেঞ্জ দলের হেভিওয়েট নেতেদার কাছে। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর কাছে বড় রাজনৈতিক চ্যালেঞ্জ নিজের শহর কাঁথিতে জয় পাওয়া। অন্যদিকে রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের কাছে চ্যালেঞ্জ নিজের লোকসভা এলাকার অন্তর্গত দুই পুরসভায় ভাল ফল করা। আবার প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি তথা এখন সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষের কাছে প্রধান চ্যালেঞ্জ খড়্গপুর পুরসভার ভোট। সঙ্গে রয়েছে নিজের এলাকার আরও দু’টি পুরসভা মেদিনীপুর ও এগরায় ভাল ফল করা।
তিন নেতাই রাজ্যের অন্যত্র বিভিন্ন পুরসভায় প্রচারে যাচ্ছেন কিন্তু সকলেই নিজের নিজের এলাকায় বাড়তি সময় দিচ্ছেন। ইতিমধ্যেই পাঁচদিন কাঁথিতে প্রচারে অংশ নিয়েছেন শুভেন্দু। এ ছাড়াও দিনের শেষে রোজই তিনি কাঁথি পুরসভা নির্বাচনে বিজেপি যাতে ভাল ফল করতে পারে তার জন্য প্রচার পরিকল্পনা থেকে সংগঠন মজবুত রাখার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। কাঁথির প্রার্থীরা যাতে ব্যক্তিগত নিরাপত্তা পান সেই দাবিতে আদালতের লড়াইয়ে আড়াল থেকে তিনিই রয়েছেন বলেও বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে।
একই ভাবে সুকান্তও গত কয়েকটা দিন নিজের লোকসভা এলাকাতেই বেশি সময় দিচ্ছেন। বালুরঘাট ও গঙ্গারামপুরে ভাল ফল না হলে তাঁর যে মুখরক্ষা হবে না সেটা বুঝেই সুকান্ত নিজের এলাকায় বাড়ি বাড়ি প্রচার থেকে জনসভা করে চলেছেন। রাজ্যের সভাপতির দায়িত্ব পাওয়ার পরে এখনও পর্যন্ত দলের কোনও ভাল ফল দেখতে পাননি সুকান্ত। তবে সেই সব নির্বাচনের থেকে বালুরঘাট ও গঙ্গরামপুর পুরসভার ভোট আলাদা। এই দুই এলাকা থেকেই ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে ভাল ফল করেছিলেন তিনি। সেটাই ছিল তাঁর জীবনের প্রথম নির্বাচনী যুদ্ধ। তার পরে ফের এ বার প্রার্থী না হয়েও যেন দুই পুরসভা এলাকায় যুদ্ধে নেমেছেন সুকান্ত।
মেদিনীপুরের সাংসদ দিলীপের কাছেও লড়াই সহজ নয়। ২০১৬ সালে বিধানসভা নির্বাচনে খড়্গপুর সদর আসন থেকে জয় পেয়েছিলেন তিনি। এর পরে মেদিনীপুরের সাংসদ হয়ে গেলে ওই আসনে ছেড়ে দেন। তার পরে উপনির্বাচনে বিজেপি আর ধরে রাখতে পারেনি খড়্গপুর সদর। তবে গত বিধানসভা নির্বাচনে ফের ওই আসন থেকে অভিনেতা হিরণ চট্টোপাধ্যায়কে বিধায়ক হিসেবে পেয়েছে বিজেপি। এখন বিধানসভা এলাকার মধ্যেই খড়্গুপর পুরসভা জেতাটা হিরণ ও দিলীপ দু’জনের কাছেই চ্যালেঞ্জ। নিজের বিধানসভা এলাকার মধ্যেই খড়্গপুর শহরের ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী হিসেবে নিজের জয়ের পাশাপাশি পুরসভায় ভাল ফল করাটা বড় চ্যালেঞ্জ বিধায়ক হিরণের কাছে। আবার চ্যালেঞ্জ দিলীপের কাছেও। কারণ, এই পুরসভা তাঁরও নির্বাচনী এলাকার মধ্যে। প্রচারে তাই তাঁর সঙ্গে হিরণের চেনা দূরত্ব যাতে প্রকট না হয় সে ব্যাপারেও নজর রাখছেন দিলীপ। সেই সঙ্গে সময় দিচ্ছেন মেদিনীপুরেও। তবে বিজেপি শিবির ততটা আশাবাদী নয় এগরা পুরসভা নিয়ে।