সেই মামলাতেই হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব এবং বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের ডিভিশন বেঞ্চ বুধবার বাহিনী সংক্রান্ত হলফনামা দাখিলের নির্দেশ দিয়েছে। আগামী সোমবার মামলার শুনানির মধ্যেই হলফনামা দিতে হবে।
ফাইল চিত্র।
বিরোধীদের দাবি, মামলা-মকদ্দমা সত্ত্বেও প্রথম দফায় কলকাতা এবং দ্বিতীয় পর্বে বিধাননগর-সহ চার পুর নিগমের ভোট হয়েছে আধাসেনা ছাড়াই। কিন্তু অশান্তি-অনিয়মের অভিযোগ থামেনি। এই অবস্থায় রাজ্যের ১০৮টি পুরসভার আসন্ন ভোটে কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়োগ নিয়ে রাজ্য নির্বাচন কমিশনের হলফনামা তলব করল কলকাতা হাই কোর্ট। আদালতের খবর, পুরভোটের মধ্যে ‘দুয়ারে সরকার’ এবং ‘পাড়ায় সমাধান’ প্রকল্প নিয়ে রাজ্য সরকারের বক্তব্য জানতে চেয়েছে কোর্ট। পরবর্তী শুনানির আগে সেই বিষয়ে রাজ্যকে হলফনামা দিতে বলা হয়েছে।
উচ্চ আদালতের খবর, বাকি শতাধিক পুরসভার ভোটে কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়োগের আবেদন জানিয়ে মামলা দায়ের করেছেন বিজেপি নেতা প্রতাপ বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই মামলাতেই হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব এবং বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের ডিভিশন বেঞ্চ বুধবার বাহিনী সংক্রান্ত হলফনামা দাখিলের নির্দেশ দিয়েছে। আগামী সোমবার মামলার শুনানির মধ্যেই হলফনামা দিতে হবে।
বিজেপি নেতার কৌঁসুলি এ দিন আদালতে জানান, কলকাতা এবং অন্য চারটি পুর নিগমের সদ্য-সমাপ্ত ভোটে অশান্তি হয়েছে, ছাপ্পা ভোট পড়েছে। বিধাননগরে পড়েছে এক প্রয়াত সঙ্গীতশিল্পীর ভোটও। গোলমালের খবর সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে বলেও তিনি জানান। এই পরিস্থিতিতে রাজ্য জুড়ে পরবর্তী দফার পুরভোটে কেন্দ্রীয় বাহিনীর নিরাপত্তা দেওয়া হোক। এই মামলায় বিধাননগরের এক বাসিন্দাও যুক্ত হয়েছেন। তাঁর আইনজীবী জানান, বাম সমর্থক হওয়ায় তাঁর মক্কেলকে মারধর করা হয়। উচ্চ আদালত চারটি পুর নিগমের ভোটের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সংরক্ষণের নির্দেশ দিয়েছে।
রাজ্য নির্বাচন কমিশনের আইনজীবী জয়ন্ত মিত্র এবং সোনাল সিনহা জানান, ২০১৫ সালের তুলনায় এ বার পুরভোট অনেক শান্তিতে হয়েছে। তবে মামলাকারীরা যে-সব অভিযোগ করেছেন, তা খতিয়ে দেখা হোক। এ ভাবে অভিযোগ জানালেই তা মেনে নেওয়া যায় না। ভোটের হার উল্লেখ করে কমিশনের কৌঁসুলিরা জানান, মানুষ ভোট দিতে পেরেছেন।
রাজ্য সরকারের অ্যাডভোকেট জেনারেল (এজি) সৌমেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় কোর্টে জানান, ২০টি অভিযোগের মধ্যে মাত্র দু’টি ক্ষেত্রে এফআইআর হয়েছে। যাঁরা চেয়েছেন, তাঁদের নিরাপত্তা দেওয়া হয়েছে। কী ভাবে কোনও ব্যক্তি জনস্বার্থ মামলায় অভিযোগ করতে পারেন, তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি।
এ দিন দক্ষিণ দমদম পুরসভা নিয়েও একটি মামলার শুনানি ছিল। ওই পুরসভার ২৯ নম্বর ওয়ার্ডে আইনি জটিলতা থাকায় সেটি বাদ দিয়েই নির্বাচন ঘোষণা হয়েছে। কোর্টের খবর, শুনানি শেষ হলেও রায়দান স্থগিত রেখেছে আদালত। কমিশনের খবর, এই ব্যাপারে আদালতের রায় হাতে পাওয়ার পরে সেই অনুযায়ী পদক্ষেপ করবে তারা।