Left Front

WB Municipal Election 2022: বিরোধীর অধিকার কই, পুরভোটে সরব বামেরা

পুরসভার জন্য স্থানীয় স্তরে বাম ইস্তাহার তৈরি হয়েছে। তার পাশাপাশি রাজ্য স্তরে বামফ্রন্ট পুরসভার নির্বাচনের জন্য একটি আবেদন প্রকাশ করেছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ০৯:১২
Share:

প্রতীকী ছবি।

কলকাতা এবং তার পরে চার পুর-নিগমের নির্বাচনে বিধানসভার তুলনায় কিছুটা ভোট বেড়েছে বামেদের। কিন্তু অল্প কয়েকটি ওয়ার্ড ছাড়া জয় হাসিল হয়নি কোথাও। এ বার রাজ্যের ১০৮টি পুরসভার নির্বাচনের মুখে গণতন্ত্রে বিরোধীদের অধিকারের প্রশ্নকে হাতিয়ার করল বামফ্রন্ট। রাজ্যে বাম জমানায় বিরোধী দলের হাতে একাধিক জেলা পরিষদ, পঞ্চায়েত সমিতি থেকে শুরু করে পুরসভার বোর্ড ছিল, এই তথ্য উল্লেখ করে শাসক দলকে বিঁধল তারা।

Advertisement

পুরসভার জন্য স্থানীয় স্তরে বাম ইস্তাহার তৈরি হয়েছে। তার পাশাপাশি রাজ্য স্তরে বামফ্রন্ট পুরসভার নির্বাচনের জন্য একটি আবেদন প্রকাশ করেছে। সেখানেই বলা হয়েছে, ‘বামফ্রন্ট সরকারের সময়ে অনেক কর্পোরেশন, পুরসভা বা পঞ্চায়েত পরিচালনা করেছে বিভিন্ন বিরোধী রাজনৈতিক দল। কিন্তু বিরোধী দল জিতেছে বলে কোনও বৈষম্যমূলক আচরণের অভিযোগ বিরোধী দলগুলিও তুলতে পারেনি। বিরোধীরা জিতে যেতে পারে, তাই নির্বাচন বন্ধ করে রাখা বা পুলিশ-প্রশাশন-দুষ্কৃতীদের ব্যবহার করে অবাধ ভোট লুঠের ব্যবস্থাও করেনি বামফ্রন্ট, যা তৃণমূলের আমলে প্রতিটি নির্বাচনে ঘটে চলেছে’। বাম জমানায় পুরসভা বা পঞ্চায়েতের মতো স্থানীয় প্রশাসনিক সংস্থার মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে যাওয়ার পরেও নির্বাচন না হওয়ার চল ছিল না বলেও স্মরণ করিয়ে দেওয়া হয়েছে রাজ্য বামফ্রন্টের ওই আবেদনে।

বামফ্রন্টকে সরিয়ে রাজ্যে তৃণমূল কংগ্রেস ক্ষমতায় আসার পরে উত্তরবঙ্গে শিলিগুড়ি পুর-নিগমে শুধু বোর্ড গড়তে পেরেছিল বিরোধী বামেরা। সদ্য হওয়া নির্বাচনে সেই শিলিগুড়ি এ বার বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতায় জিতে নিয়েছে তৃণমূল। আর এক বিরোধী দল কংগ্রেস দক্ষিণবঙ্গে একমাত্র জয়নগর-মজিলপুর পুরসভায় বোর্ড ধরে রাখতে পেরেছিল। বিরোধীরা হাতে-গোনা কিছু পুরসভায় ভোটে জিততে পারলেও পরবর্তী কালে কাউন্সিলরদের দল বদলের সৌজন্যে বোর্ড চলে গিয়েছে শাসক দলের হাতে। তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের অবশ্য বক্তব্য, ‘‘বামেরা, বিজেপি আগে মানুষের কাছে যান। মানুষের আস্থা ফেরান, তবে তো বোর্ড গঠন। আর তার পরে তো সহযোগিতার প্রশ্ন।’’ সেই সঙ্গেই তাঁর কটাক্ষ, ‘‘বাম আমলে আমি বিরোধী দলনেতা ছিলাম। আমি জানি, ঠিক কী রকম সহযোগিতা করা হত!’’

Advertisement

বামেদের এ বারের আবেদনে আরও অভিযোগ করা হয়েছে, ‘দুর্নীতিই তৃণমূলের নীতি’। গত ১১ বছরে রাজ্য জুড়ে শাসক দলের কাউন্সিলরদের সম্পত্তির পরিমাণ কী ভাবে বেড়েছে, সে দিকে জনতার দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চেয়েছেন বাম নেতৃত্ব। সেই সঙ্গেই পরিসংখ্যান তুলে ধরে তাঁদের আশ্বাস, বামফ্রন্ট বোর্ড গঠন করলে পুরসভায় শূন্য পদে স্থায়ী নিয়োগের জন্য সচেষ্ট হবে। এখন ৭টি পুর-নিগম ও ১১৯টি পুরসভার মোট ৭৯ হাজার ৩৯৭টি পদের মধ্যে ৩৭ হাজার ৮৩টি পদে কর্মী নিযুক্ত আছেন। যা নিয়োগ হয়েছে, তার অধিকাংশই চুক্তিভিত্তিক।

রাজ্যে ‘গণতন্ত্র হত্যার উৎসব’ চলছে বলে লিখিত আবেদনের পাশাপাশি মুখেও সরব বামেরা। সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তীর অভিযোগ, ‘‘দমদমে প্রার্থী প্রচারে যাচ্ছে, আক্রমণ হল। এক জন কর্মীর হাত ভেঙে গেল, পুলিশ চুপ! এত ভয় কেন? বিরোধীশূন্য রাজনীতি যা বিজেপি চায়, তা তৃণমূলও চায়। আবেদন করব, মানুষকে ভোট দিতে দিন।’’ তৃণমূলের পার্থবাবুর পাল্টা বক্তব্য, ‘‘কোথায় কে হুমকির মুখে পড়েছেন, কমিশনকে এবং পুলিশকে জানান। একই কথা বলে নির্বাচন থেকে সরে যাচ্ছেন!’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement