গ্রাফিক— শৌভিক দেবনাথ
নেটমাধ্যমে ব্যঙ্গবিদ্রুপ থেকে রেহাই মিলল না মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদেরও।
মঙ্গলবার ফল প্রকাশের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ১০০ শতাংশ পাশের হার, বেশি নম্বর এবং ‘প্রথম স্থানাধিকারী’র সংখ্যা নিয়ে ‘মিম’-এ ভাসতে শুরু করে ফেসবুক। এই ব্যঙ্গস্রোত দেখে অবশ্য চুপ থাকেননি সবাই। পাল্টা লেখা শুরু করে দেন অনেকে। কেউ কেউ ব্যঙ্গকারীদের শিক্ষা এবং রুচি নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন।
করোনার কারণে এ বার মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক কোনও পরীক্ষাই হয়নি। স্কুলে হওয়া নানা পরীক্ষার ভিত্তিতে দেওয়া হচ্ছে নম্বর। মঙ্গলবার সকাল ৯টায় মধ্যশিক্ষা পর্ষদ মাধ্যমিকের ফল প্রকাশ করে। ঘোষণা করা হয়, এ বছর সব পরীক্ষার্থীই পাশ করেছে। সেই ঘোষণার কিছু ক্ষণের মধ্যেই নেট দুনিয়ায় ভেসে ওঠে একটি ‘মিম’। কালোর উপর সাদা দিয়ে লেখা কয়েকটি শব্দ—‘ডেটল ৯৯.৯ শতাংশ, মাধ্যমিক ১০০ শতাংশ।’ সঙ্গে বিস্ময়সূচক ছোট্ট একটি উক্তি, ‘শেষ পর্যন্ত ডেটলকেও হার মানাল...!’ এর পর নেটমাধ্যমে ভেসে ওঠে এ ধরনেরই একের পর এক মন্তব্য। কোনওটির লক্ষ্য মাধ্যমিকের পাশের হার। কোনওটি আবার বাঁকা চোখে দেখেছে সর্বোচ্চ নম্বর পাওয়াদের সংখ্যাকে। ৭০০তে ৬৯৭ পাওয়া ৭৯ জন পরীক্ষার্থীকে ব্যঙ্গ করে লেখা হয়, ‘আরে এ তো দুয়ারে টপার প্রকল্প! করোনাকে ধন্যবাদ দেওয়া উচিত ছাত্রছাত্রীদের।’
এ ধরনের মন্তব্যের বিরুদ্ধে অবশ্য পাল্টা পোস্ট আসতে খুব বেশি সময় লাগেনি। যাঁরা এই ধরনের ব্যঙ্গচিত্র প্রকাশ করেছেন তাঁদের রুচি নিয়ে প্রশ্ন তুলে নেটাগরিকদের একাংশ পাল্টা প্রশ্ন তোলেন, ‘ক্লাস টেন এর বাচ্চাগুলোকেও ছাড়ছেন না? এতটাই ইনসিকিউরিটি-তে ভুগছেন? নিজেদের অশিক্ষা নিয়ে গর্ববোধ করা উচিত আপনাদের!’
কারও মন্তব্য, ‘রেজাল্ট নিয়ে খিল্লি করে ছাত্রছাত্রীদের অসম্মান করা বন্ধ করুন। এই অতিমারির বাজারে তাঁরা যে ভাবে পড়াশুনো করেছেন তা কুর্নিশ করার মতো।’
আর এক ব্যবহারকারী লিখেছেন, ‘আজকালকার ছাত্রছাত্রীদের আমি আমাদের সময়ের তুলনায় অনেক বেশি মেধাবী এবং ‘ফোকাসড’ মনে করি। এবং এই অতিমারির বাজারে তাঁরা যে ভাবে পড়াশুনো করেছেন তা কুর্নিশ করি। সম্পূর্ণ নির্বান্ধব অবস্থায় (ভার্চুয়াল বন্ধুতার কথা বলবেন না) তাঁদের দিন কাটছে। এগুলো মাথায় রাখুন এবং খিল্লি বন্ধ করুন। আমি সমস্ত ছাত্রছাত্রীকে কুর্নিশ জানাচ্ছি। আমি এই অবস্থায় পড়াশুনো করতে পারতাম না।’
একই সঙ্গে শিক্ষকদেরও প্রশংসা করে এক নেটাগরিক লিখেছেন, ‘বরাবরের মতো আমি নতজানু শিক্ষকদের সামনে। যে ভাবে স্মার্টফোন ব্যবহার শিখে তাঁরা ছাত্র-ছাত্রীদের অনলাইনে পড়াচ্ছেন, প্র্যাকটিকাল ক্লাস বোঝাচ্ছেন, মিড-ডে মিলের ব্যবস্থা করছেন এবং মানসিক ভাবে পাশে থাকছেন। সব কিছুই প্রশংসনীয়।’
মাধ্যমিক পরীক্ষার ফলাফল নিয়ে আর কী কী লিখেছেন নেটাগরিকরা, তার এক ঝলক—