প্রতীকী ছবি।
করোনা পরিস্থিতিতে স্কুল খোলার সম্ভাবনা প্রায় নেই। কবে খুলবে তা নিয়েও দিশা দেখা যাচ্ছে না। তাই পড়ুয়াদের পড়াশোনার অভ্যাস টিকিয়ে রাখার জন্য রাজ্য সরকার টেলিফোনের মাধ্যমে পড়ুয়াদের সঙ্গে শিক্ষকদের যোগাযোগের চিন্তাভাবনা করছে। বিকাশ ভবন সূত্রের খবর, টোল ফ্রি নম্বরে শিক্ষকের কাছে পড়ুয়ারা টেলিফোনে প্রশ্ন করতে পারবে। শিক্ষকেরা যতটা পারবেন বুঝিয়ে দেবেন। এর সঙ্গে রেডিয়োর মাধ্যমে কিছু সম্প্রচার করা যায় কিনা, তা-ও দেখছে শিক্ষা দফতর।
লকডাউন পরিস্থিতিতে প্রথম দিকে রাজ্য সরকার টেলিভিশনের মাধ্যমে কিছু ক্লাসের ব্যবস্থা করেছিল। ‘বাংলার শিক্ষা’ পোর্টালের মাধ্যমেও চেষ্টা হয়েছিল। কিন্তু দেখা গিয়েছে, অনেকের কেব্ল টিভি, ইন্টারনেট পরিষেবা নেই। তাই টেলিফোনের উপরে ভরসা করতে চাইছে রাজ্য। বিকাশ ভবন সূত্রের খবর, স্কুলে-স্কুলে অনলাইন পড়াশোনা কত দূর এগিয়েছে তার খোঁজ নিচ্ছে স্কুলশিক্ষা দফতর। কিন্তু শিক্ষা মহলের বক্তব্য, কলকাতা এবং জেলা শহরগুলিতে কিছুটা অনলাইন পড়াশোনা হলেও গ্রামাঞ্চলে কিছুই হচ্ছে না। পরিকাঠামোর অভাবে অনলাইনে ছাত্রদের পড়ানোর পরিস্থিতি শিক্ষকদের নেই। বেশির ভাগ পড়ুয়ারও স্মার্টফোন বা ল্যাপটপ নেই। কিছু এলাকায় ইন্টারনেট পরিষেবাও দুর্বল। এমনকি ইন্টারনেট পরিষেবা নেই এমন জায়গাও রাজ্যে রয়েছে। গ্রামাঞ্চলে এবং শহরতলিতে বহু অভিভাবকের স্মার্টফোন কেনার সঙ্গতিও নেই। তাই অনলাইন পড়াশোনা তাঁদের কাছে অলীক স্বপ্ন। শিক্ষা জগতের অনেকের বক্তব্য, এই পরিকাঠামোয় অনলাইন মূল্যায়ন বর্তমানে কার্যত অবাস্তব। তাই যেখানে পড়াশোনা হয়েছে, সেখানেও পড়ুয়াদের মূল্যায়ন কঠিন।
এ দিকে, কেন্দ্রীয় সরকার ইতিমধ্যেই অনলাইনে ছাত্রছাত্রীরা প্রতিদিন ক'টা ক্লাস করবেন সে বিষয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে। বিকাশ ভবনের এক অফিসারের মতে, ২০০৯ সালের শিক্ষার অধিকার আইনে স্কুলশিক্ষা হল, বিনামূল্যে বাধ্যতামূলক শিক্ষা। কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকার এই সমস্যাগুলির না-দেখে অনলাইনে কতগুলি ক্লাস হচ্ছে, কত ক্ষণ ক্লাস হচ্ছে তার উপরে গুরুত্ব দিচ্ছে। তাই যারা পরিকাঠামোর অভাবে অনলাইন ক্লাসের সুযোগ পাচ্ছে না, তারা বঞ্চিতই থেকে যাচ্ছে।