ফাইল চিত্র।
সেপ্টেম্বরে চূড়ান্ত সিমেস্টার নেওয়ার জন্য ইউজিসির পরিবর্তিত নির্দেশিকা অন্য সব রাজ্য মেনে নিচ্ছে কি না বা কী ব্যবস্থা নিচ্ছে, তা দেখেই এ বিষয়ে এগোবে পশ্চিমবঙ্গ। আজ রাত পর্যন্ত সেই ইঙ্গিতই মিলেছে।
প্রসঙ্গত, পশ্চিমবঙ্গে পরীক্ষা এবং শিক্ষাবর্ষ নিয়ে উচ্চ শিক্ষা দফতরের যে পরামর্শ-নির্দেশিকা (অ্যাডভাইজ়রি) রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলির কাছে আগেই পৌঁছেছে, তাতে পরীক্ষা না-নিয়েই পড়ুয়াদের মূল্যায়নের কথা বলা হয়েছিল। যেমন, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে আগে ঠিক হয়েছিল, ইঞ্জিনিয়ারিং ফ্যাকাল্টিতে ৭০-৩০ ফর্মুলায় চূড়ান্ত সিমেস্টারের ছাত্র-ছাত্রীদের মূল্যায়ন হবে। কিন্তু রাজ্য সরকারের পরামর্শ-নির্দেশিকায় কোনও রকম পরীক্ষা না-নেওয়ার কথা বলার পাশাপাশি চূড়ান্ত সিমেস্টার এবং চূড়ান্ত বর্ষের ক্ষেত্রে (পার্ট থ্রি) ৮০-২০ ফর্মুলা দেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ, ৮০% নিতে হবে আগের সিমেস্টারগুলির মধ্যে সব থেকে ভাল ফল যেটির, তার থেকে। ২০% শতাংশ অভ্যন্তরীণ মূল্যায়ন থেকে। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে হোম অ্যাসাইনমেন্ট শেষ করে বেশির ভাগ পড়ুয়া জমাও দিয়েছেন! অর্থাৎ পরীক্ষা হবে না ধরে নিয়েই বিশ্ববিদ্যালয়গুলি এগোচ্ছিল। ফলে আজকের নির্দেশিকরা পর জটিলতা বেড়ে গেল।
শুধু পশ্চিমবঙ্গের ক্ষেত্রেই নয়, সামগ্রিক ভাবেই নির্দেশিকা ঘিরে প্রশ্ন উঠেছে। পরীক্ষার্থী, অভিভাবকদের এক বড় অংশের জিজ্ঞাসা, দেশে প্রতি দিন কোভিড সংক্রমণের সংখ্যা যেখানে ২৫ হাজার ছুঁইছুঁই, সেখানে পরীক্ষা নেওয়ার অনুমতি দেওয়া হল কী করে? কেউ অসুস্থতার কারণে বসতে না-পারলে, কবে আবার পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ মিলবে তারও তো নিশ্চয়তা নেই! অনেকে আবার বলছেন, ইঞ্জিনিয়ারিং, ডাক্তারির সর্বভারতীয় প্রবেশিকাও পিছিয়ে সেপ্টেম্বরে করা হয়েছে। কিন্তু
সেখানে না-বসলে, এক জনের তবু অন্য কিছু পড়ার সুযোগ থাকে। ওই প্রবেশিকাও পরের বার দিতে পারবেন তিনি। কিন্তু এ ক্ষেত্রে কেউ করোনা আক্রান্ত হয়ে পরীক্ষা দিতে না-পারলে, অনিশ্চিত হয়ে পড়বে পরবর্তী স্তরে তাঁর পড়ার সুযোগই।
আরও পড়ুন: নতুন পোস্টাল ব্যালট বিধি নিয়ে কমিশনে চিঠি তৃণমূলের
এই সিদ্ধান্তের কারণ হিসেবে কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকের তরফে জানানো হয়েছে, এক দিকে নিজে চূড়ান্ত পরীক্ষায় বসে পাওয়া নম্বর পড়ুয়াদের আত্মবিশ্বাস জোগাবে, তেমনই তার গ্রহণযোগ্যতা অনেক বেশি হবে দেশ-বিদেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে। ফলে বাড়বে ভাল প্রতিষ্ঠানে ভর্তির সুযোগও। এ-ও জানানো হয়েছে, চূড়ান্ত সিমেস্টারের পরীক্ষা খাতায়-কলমে অথবা অনলাইনে কিংবা দু’য়ের মিশেলে নেওয়া যেতে পারে। যাঁদের আগের কোনও পরীক্ষা বাকি রয়েছে, তাঁদেরও তাতে বসার সুযোগ করে দিতে হবে। কেউ যে কোনও কারণে চূড়ান্ত বর্ষের পরীক্ষায় বসতে না-পারলে, সময়-সুযোগ হলেই তাঁকে পরীক্ষার সুযোগ দেওয়ার দায়িত্ব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেরই।