Hawkers

কেন্দ্রের প্রস্তাব মেনে হকার সমীক্ষা শুরু রাজ্য সরকারের

কোভিডের অভিঘাতে অন্যান্য ক্ষেত্রের সঙ্গে হকারদের জীবন-জীবিকাও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। বিশেষজ্ঞদের মতে, স্বল্প পুঁজি নিয়ে হকারেরা ব্যবসা করেন।

Advertisement

চন্দ্রপ্রভ ভট্টাচার্য

শেষ আপডেট: ২৪ জানুয়ারি ২০২৫ ০৫:৪৮
Share:

— প্রতীকী চিত্র।

অতীতে নানা ব্যাপারে আপত্তি তুললেও, কেন্দ্রের হকার-সমীক্ষার প্রস্তাব কার্যত নিঃশব্দেই মেনে নিল রাজ্য সরকার। প্রশাসনিক সূত্রের খবর, প্রতিটি পুর এলাকায় কেন্দ্রের বিধি মেনে ইতিমধ্যেই নথিবদ্ধ প্রত্যেক হকার-পরিবারের আর্থ-সামাজিক খুঁটিনাটি তথ‍্য নেওয়ার কাজ শুরু করেছে নবান্ন। প্রশাসনিক কর্তাদের একাংশ মনে করছেন, অর্থ বড় বালাই। এই প্রকল্পটি গ্রহণ না করলে নগরোন্নয়নের অন্যান্য ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় বরাদ্দের উপর আঁচ আসতে পারে। ফলে অনুদান অবাধ রাখার তাগিদে সমীক্ষায় সবুজ সংকেত দিয়েছে রাজ্য। সংশ্লিষ্ট মহলের ধারণা, গ্রামাঞ্চলে আর্থিক ভাবে পিছিয়ে থাকা অংশের মানুষদের জন্য অনেক ধরনের প্রকল্প রয়েছে। এ বার তেমন প্রকল্পের নিরিখে গ্রামের পাশাপাশি শহরের সংশ্লিষ্ট অংশের মানুষের দিকেও অভিমুখ ঘোরাতে চলেছে কেন্দ্র। এটা তারই অঙ্গ।

Advertisement

কোভিডের অভিঘাতে অন্যান্য ক্ষেত্রের সঙ্গে হকারদের জীবন-জীবিকাও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। বিশেষজ্ঞদের মতে, স্বল্প পুঁজি নিয়ে হকারেরা ব্যবসা করেন। তাতে বিভিন্ন জিনিস সুলভে কেনার সুযোগ পান ক্রেতারা। এমন একেকটি ব্যবসা ছোট মাপের হলেও, অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়ে থাকেন হকারেরা। এই অবস্থায় কেন্দ্রীয় আবাস এবং পুর বিষয়ক মন্ত্রক ‘পিএম স্ট্রিট ভেন্ডর্স আত্মনির্ভর নিধি’ প্রকল্পটি চালু করেছে। যাতে এক একজন নথিবদ্ধ হকার ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত ঋণ (সুদে ভর্তুকির সুবিধাযুক্ত) পেতে পারেন। সেই কারণেই পুরসভা বা পুরনিগম এলাকাগুলিতে হকারদের সবিস্তার তথ্য সংগ্রহের পরামর্শ দিয়েছিল কেন্দ্র। তাতে একজন হকার এবং তাঁর পরিবারের প্রত্যেক সদস্যের যাবতীয় তথ্য সংগৃহীত হচ্ছে। রাজ্য নগরোন্নয়ন সংস্থার (সুডা) অধীনে যা শুরু করেছে এ রাজ্যও। এক কর্তার কথায়, “নির্দিষ্ট জায়গায় শিবির করে কাজটি হচ্ছে। শুরুতে খুব বেশি সংখ্যক মানুষ যোগাযোগ না করলেও, এখন সংখ্যাটা বাড়ছে।”

তাঁর সংযোজন, “পুর-বিষয়ক ব্যবস্থায় বহু প্রকল্পে কেন্দ্রীয় বরাদ্দ রয়েছে উল্লেখযোগ্য হারে। আবাস, গ্রাম সড়ক বা একশো দিনের কাজে বরাদ্দ আটকে থাকলেও, নগরোন্নয়নে কেন্দ্রীয় বরাদ্দ এখনও অবাধ। সংশ্লিষ্ট প্রকল্পটি গ্রহণ না করলে সেই বরাদ্দেও প্রভাব পড়ার আশঙ্কা থাকে। সম্ভবত সেই কারণে কেন্দ্রীয় পরামর্শ মানা নিয়ে টানাপড়েন হয়নি।”

Advertisement

প্রশাসনিক কর্তাদের অনেকেই জানাচ্ছেন, গ্রামীণ এলাকার আর্থিক ভাবে পিছিয়ে থাকা মানুষদের জন্য অনেক ধরনের প্রকল্প রয়েছে সরকারের। এ বার শহুরে এলাকায় এমন অংশের মানুষদের নজরে আনা হচ্ছে। এই প্রকল্পে আর্থ-সামাজিক সমীক্ষার ফলাফল প্রয়োজনের নিরিখে অন্য একাধিক প্রকল্পের জন্ম দিতে পারে। বিশেষজ্ঞদের একাংশের মতে, ব্যক্তি এবং দেশের অর্থনীতির উন্নয়নের প্রশ্নে এমন প্রকল্পগুলি ইতিবাচক। তবে ভিন্ন উদ্দেশ্যে তথ্যভান্ডারের ব্যবহার নিয়েও সতর্ক থাকতে হবে সরকারকে। মন্ত্রকের তথ্য অনুযায়ী, হকার-ঋণ পেতে গোটা দেশে এখনও পর্যন্ত প্রায় ১১.৫৪ কোটি বৈধ আবেদন জমা পড়েছে। তার মধ্যে প্রায় ৬৮ লক্ষ উপভোক্তার জন্য ঋণ দেওয়া হয়েছে ১৩ হাজার ৭৩২ কোটি টাকা। এ রাজ্যে বৈধ আবেদনের সংখ্যা প্রায় ৩.১৬ লক্ষ। প্রায় ২ লক্ষ উপভোক্তাকে এখনও পর্যন্ত প্রায় ২৬৯ কোটি টাকার ঋণ দেওয়া হয়েছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement