মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ফাইল চিত্র।
আমপানের তাণ্ডবে সুন্দরবনের একটা বড় অংশ বিপর্যস্ত হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চলও। নতুন করে ওই সব এলাকায় ম্যানগ্রোভ গাছ লাগানোর সিদ্ধান্ত নিল রাজ্য সরকার। বুধবার নবান্নে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, আগামী এক মাসের মধ্যে সুন্দরবন অঞ্চলে ধাপে ধাপে ৫ কোটি ম্যানগ্রোভ গাছ লাগানো হবে।
আগামী ৫ জুন পরিবেশ দিবস। রাজ্য জুড়ে বৃক্ষরোপণ এবং ঘূর্ণিঝড়ের তাণ্ডবে ক্ষতিগ্রস্ত গাছগুলি নতুন করে প্রতিস্থাপনের কর্মসূচি হাতে নিয়েছে বন দফতর, পরিবেশ দফতর এবং কলকাতা পুরসভা। কলকাতাতে ঘূর্ণিঝড়ের জেরে পাঁচ হাজারের কাছাকাছি গাছ পড়েছে। বনমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, রাজ্যে প্রায় ১৬ লক্ষ গাছ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ঝড়ের তাণ্ডবে। তার জন্য রাজ্য জুড়ে প্রায় সাড়ে ৬ কোটি গাছ লাগানো হবে। এ দিন মুখ্যমন্ত্রী নবান্ন থেকে বিভিন্ন জেলার জেলাশাসক, পুলিশ সুপার এবং জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে ভিডিয়ো কনফারেন্সের মাধ্যমে বৈঠক করেন। আমপান পরবর্তী ক্ষয়ক্ষতি পূরণের লক্ষ্যে রূপরেখা ঠিক করে দেন। তিনি বলেন, “সুন্দরবনে ক্ষয়ক্ষতি ভালই হয়েছে। ওই এলাকায় মাটি শক্ত করতে আরও ম্যানগ্রোভ লাগাতে হবে। নতুন করে সবুজ তৈরি করতে হবে। রাজ্যের থানাগুলোকে বলছি, কম লোক নিয়ে নিজের নিজের এলাকায় গাছ লাগাতে হবে।”
মুখ্যমন্ত্রী এ দিন প্রতিটি জেলার পুলিশ-প্রশাসন এবং জনপ্রতিনিধিদের উদ্দেশে বলেন, ‘‘কৃষি থেকে পরিযায়ী শ্রমিকদের দেখভাল— সব কিছুই অত্যন্ত যত্ন সহকারে করতে হবে। ১০ জুনের মধ্যে প্রায় সাড়ে দশ লাখ পরিযায়ীরা রাজ্যে এসে যাবে। ওঁদের ট্রেন ভাড়া রাজ্যের তরফে দেওয়া হচ্ছে। রাজনৈতিক প্ররোচনায় পা দেবেন না। আমাদের বদনাম হবে।’’ পরিযায়ী শ্রমিকেরা কে কোনও বিষয়ে দক্ষ, তার একটি তালিকাও তৈরি করতে এ দিন জেলাগুলোর প্রশাসনকে নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, “কেউ সোনার কাজে দক্ষ, কেউ ইলেকট্রিক, কেউ জরির কাজ পারেন। এমন একটি তালিকা তৈরি থাকলে, পরবর্তী ক্ষেত্রে এখানে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পে সুবিধা হবে। ওঁরা কাজ পেতে পারেন।”
আরও পড়ুন: পুরসভার কাজ চালাবে রাজ্য সরকার নিযুক্ত বোর্ড, শীর্ষ আদালতের নির্দেশে স্বস্তি নবান্নের
উপকূল এলাকায় মৎস্যজীবীদের ক্ষয়ক্ষতির বিষয়টি নিয়েও ভিডিয়ো কনফারেন্সে আলোচনা করেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘‘নৌকা ভেঙে গিয়েছে যাঁদের, তাঁদেরও আর্থিক সাহায্য করা হচ্ছে।’’ সব জেলায় প্রত্যেকে যাতে রেশন পান, সে বিষয়টি এ দিন মুখ্যমন্ত্রী মনে করিয়ে দিয়েছেন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিককে। এ দিন হুগলি, নদিয়া, দুই ২৪ পরগনা, মালদহ, পশ্চিম বর্ধমান-সহ বিভিন্ন জেলার জেলাশাসক, পুলিশ সুপার এবং জনপ্রতিনিধিরা ভিডিয়ো কনফারেন্স বৈঠকে অংশ নেন। কোথায় কী সমস্যা রয়েছে, তাঁদের কাছে তা জানতে চান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
আরও পড়ুন: মমতা-ধনখড় কথা, আপাতত সঙ্ঘর্ষে ইতি, তবে পার্থর জন্য ‘ক্ষতস্থান’ খোঁচা