West Bengal State Election Commission

WB Election Commission: ভবানীপুর-সহ পাঁচ কেন্দ্রে ভোটযন্ত্র পরীক্ষা অগস্টের প্রথম সপ্তাহে শেষ করার নির্দেশ

রাজ্যে উপনির্বাচন নিয়ে শাসক তৃণমূল এবং বিরোধী বিজেপি-র মধ্যে চাপানউতর শুরু হয়েছে। তৃণমূল চাইছে দ্রুত উপনির্বাচন করাতে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২১ জুলাই ২০২১ ১২:৪২
Share:

ইভিএম।

ভবানীপুর-সহ রাজ্যে পাঁচটি কেন্দ্রের উপনির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি আরও জোরাল করার নির্দেশ দিল রাজ্য নির্বাচন দফতর। প্রাথমিক ভাবে ওই পাঁচটি কেন্দ্রের ইভিএম এবং ভিভিপ্যাট পরীক্ষার কাজ অগস্টের প্রথম সপ্তাহে শেষ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যা থেকে মনে করা হচ্ছে, অগস্টে বা সেপ্টেম্বরে উপনির্বাচন হতে পারে ধরে নিয়েই এগোচ্ছে রাজ্য নির্বাচন দফতর। যদিও নির্বাচনের মতোই উপনির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণার বিষয়েও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশন। ঘটনাচক্রে, রাজ্যে উপনির্বাচন নিয়ে শাসক তৃণমূল এবং বিরোধী বিজেপি-র মধ্যে চাপানউতর শুরু হয়েছে। তৃণমূল চাইছে দ্রুত উপনির্বাচন করাতে। পক্ষান্তরে, বিজেপি বলছে, তাড়াহুড়োর কিছু নেই। সমস্ত নজর, কৌতূহল এবং চাপানউতর আসলে ভবানীপুর ঘিরে। যেখানে তৃণমূলের প্রার্থী মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আগামী ৫ নভেম্বরের মধ্যে তাঁকে নির্বাচিত হয়ে বিধানসভায় আসতে হবে।

Advertisement

রাজ্যে যে পাঁচটি বিধানসভা কেন্দ্রে উপনির্বাচন হবে, সেগুলি হল— ভবানীপুর, খড়দহ, বাসন্তী, শান্তিপুর এবং দিনহাটা। ওই কেন্দ্রগুলির জন্যই প্রস্তুতিতে গতি আনার নির্দেশ দিয়েছে রাজ্য নির্বাচন দফতর। তবে জঙ্গিপুর ও সামশেরগঞ্জের ক্ষেত্রে এমন নির্দেশ দেওয়া হয়নি। কমিশন সূত্রে খবর, এই দু’টি বিধানসভায় নির্বাচনের যাবতীয় প্রস্তুতি বিধানসভা ভোটের আগেই সারা হয়ে গিয়েছিল। কারণ, ওই দু’টি আসনে ভোট স্থগিত ছিল প্রার্থীদের মৃত্যুতে। ফলে সেখানে আর নতুন করে ভোটযন্ত্র পরীক্ষার প্রয়োজন নেই। কিন্তু যে পাঁচটি আসনে ভোট হয়েছিল, সেখানে নতুন করে ইভিএম এবং ভিভিপ্যাট পরীক্ষার প্রয়োজন আছে। রাজ্য নির্বাচন দফতরের এক আধিকারিকের কথায়, "আমরা সবরকম প্রস্তুতি রাখছি। রাজ্যসভা হোক বা বিধানসভা— সব রকম নির্বাচনের জন্য দফতর প্রস্তুত।"

এখন রাজ্যসভার নির্বাচন নিয়ে আধিকারিকরা ব্যস্ত। মঙ্গলবার বিধানসভায় এসে রাজ্যসভার ভোটের পরিকাঠামো খতিয়ে দেখে যান নির্বাচন দফতরের অতিরিক্ত নির্বাচনী আধিকারিক সঞ্জয় বসুর নেতৃত্বে চার সদস্যের প্রতিনিধিদল। তারপরেই জানা যায়, রাজ্যের পাঁচ উপনির্বাচনের প্রক্রিয়ায় গতি আনা হচ্ছে। গত শুক্রবার রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক আরিজ আফতাবের দফতর থেকে পাঠানো এক চিঠিতে সংশ্লিষ্ট জেলাশাসকদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল, তাঁরা যেন দ্রুত ইভিএম এবং ভিভিপ্যাটের ‘ফার্স্ট লেভেল চেকিং’-এর কাজ শুরু করেন। যে সব জেলায় ভোট হবে, সেই সমস্ত জেলার জেলাশাসককে ওই নির্দেশ কার্যকর করতে বলা হয়। উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, মুর্শিদাবাদ, নদিয়া, কোচবিহার ও দক্ষিণ কলকাতা জেলাকে এ ব্যাপারে দ্রুত পদক্ষেপ করতে নির্দেশ দেয় রাজ্য নির্বাচন দফতর। এবার সেই কাজে গতি আনতে নির্দিষ্ট সময়সীমাও বেঁধে দিল তারা। তাই রাজনৈতিক মহলে জল্পনা, অগস্টে উপনির্বাচনের প্রস্তুতিপর্ব সম্পন্ন হয়ে গেলে সেপ্টেম্বরে হতে পারে উপনির্বাচন।

Advertisement

অবশ্য ভবানীপুর বিধানসভার ক্ষেত্রে জুলাই মাসের ২ তারিখ থেকেই ইভিএম এবং পোস্টাল ব্যালট পরীক্ষা পদ্ধতির কাজ খানিকটা এগিয়ে রেখেছে রাজ্য নির্বাচন দফতর। দক্ষিণ কলকাতার চারটি বিধানসভা কেন্দ্রে যে সমস্ত ইভিএম এবং ভিভিপ্যাট কাজে লাগানো হয়েছিল, মূলত সেগুলি পরীক্ষার কাজ ইতিমধ্যে সম্পন্ন হয়ে গিয়েছে। ভবানীপুর, রাসবিহারী, বালিগঞ্জ এবং কলকাতা বন্দর কেন্দ্রে যে সব ইভিএম এবং ভিভিপ্যাট ভোটের কাজে লাগানো হয়েছিল, সেগুলির ‘ফার্স্ট লেভেল চেকিং’-এর কাজ শেষ হয়েছে। প্রসঙ্গত, গত সপ্তাহেই তৃণমূলের লোকসভার দলনেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে এক প্রতিনিধিদল দিল্লিতে মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক সুশীল চন্দ্রের সঙ্গে দেখা করে রাজ্যে দ্রুত উপনির্বাচন করার দাবি জানিয়েছিলেন। তৃণমূলের একাংশের দাবি, তার পরেই উপনির্বাচনের বিষয়ে ‘তৎপরতা’ বেড়েছে কলকাতায় রাজ্য নির্বাচন আধিকারিকের দফতরে।

এই উপনির্বাচন পর্বে ভবানীপুর থেকে প্রার্থী হতে পারেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাই রাজনীতির কারবারিদের মধ্যে ভবানীপুরের উপনির্বাচন নিয়ে আগ্রহই বেশি। এছাড়াও কৃষিমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়কে ৫ নভেম্বরের মধ্যে উপনির্বাচনে জিতে আসতে হবে। কারণ, মুখ্যমন্ত্রী যেমন ৫ মে মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ নিয়েছেন। তেমনই শোভনদেব ওই সময়ে কৃষিমন্ত্রী পদে শপথ নিয়ে ২১ মে ভবানীপুরের বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন। দিনহাটা ও শান্তিপুর থেকে যথাক্রমে বিধায়কপদ ত্যাগ করেছেন বিজেপি-র সাংসদ নিশীথ প্রামাণিক ও জগন্নাথ সরকার। উপনির্বাচন হবে সেখানেও। আর ফলাফল ঘোষণার আগেই করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের কারণে প্রয়াত হয়েছেন খড়দহের বিজয়ী তৃণমূল প্রার্থী কাজল সিংহ। সম্প্রতি প্রয়াত হয়েছেন গোসাবার বিধায়ক জয়ন্ত নস্কর। পাশাপাশিই করোনা সংক্রমণে প্রার্থীদের মৃত্যুর কারণে নির্দিষ্ট সময়ে ভোট করা যায়নি মুর্শিদাবাদ জেলার জঙ্গিপুর ও সামশেরগঞ্জে। তাই এই সাতটি আসনে একসঙ্গে ভোট হবে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement