চাকরির দাবিতে বিক্ষোভ। — ফাইল চিত্র।
উচ্চ প্রাথমিকের ২০১৬ সালের মেধাতালিকা প্রকাশের বিজ্ঞপ্তি দিল স্কুল সার্ভিস কমিশন (এসএসসি)। সোমবার বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানানো হয়েছে, আগামী বুধবার, ২৫ সেপ্টেম্বর প্রকাশ করা হবে মেধাতালিকা। ১০ শতাংশ আসন সংরক্ষিত রাখা হবে অস্থায়ী শিক্ষকের জন্য। বাকি পদে নিয়োগের মেধাতালিকা প্রকাশ করা হবে। যদিও চাকরিপ্রার্থীদের দাবি, শুধু মেধাতালিকা প্রকাশ করলে হবে না, নিয়োগ প্রক্রিয়াও শীঘ্র শুরু করতে হবে।
কলকাতা হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ গত ২৮ অগস্ট এসএসসিকে জানিয়েছিল, এক মাসের মধ্যে ১৪ হাজারের বেশি শূন্যপদে নিয়োগের জন্য নতুন করে মেধাতালিকা প্রকাশ করতে হবে। রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু তখন জানিয়েছিলেন, পুজোর আগেই নিয়োগ শুরু করার চেষ্টা করা হচ্ছে। সোমবার মেধাতালিকা প্রকাশের বিজ্ঞপ্তি জারি করে এসএসসি। সেই আবহে সোমবার সকালে সল্টলেকের আচার্য ভবন ঘেরাও করেন চাকরিপ্রার্থীরা। যদিও প্রার্থীরা অনড়। তাঁদের দাবি, নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করতে হবে দ্রুত।
২০১৫ সাল থেকে উচ্চ প্রাথমিকের নিয়োগ প্রক্রিয়া ঝুলে রয়েছে। হাই কোর্টের নির্দেশে বার বার এই নিয়োগ প্রক্রিয়া স্থগিত হয়ে গিয়েছে। ২০২০ সালে নিয়োগ প্রক্রিয়াটি বাতিল করে দিয়েছিল উচ্চ আদালত। তার পর ২০২৩ সালে প্যানেল প্রকাশ করার অনুমতি দিয়েছিল হাই কোর্ট। তখন ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়েছিল, প্যানেল প্রকাশ করা যেতে পারে, তবে কাউকে নিয়োগের সুপারিশ করতে পারবে না এসএসসি। এর পরে মামলাটি যায় নতুন ডিভিশন বেঞ্চে। গত ১৮ জুলাই বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী এবং বিচারপতি পার্থসারথি চট্টোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চে এই সংক্রান্ত শুনানি শেষ হয়। ২৮ অগস্ট রায় ঘোষণা করা হয়।
উচ্চ প্রাথমিকের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় একাধিক ত্রুটির অভিযোগ তুলে হাই কোর্টে মামলা দায়ের হয়েছিল। ২০২৩ সালে শুধুমাত্র অনুমানের ভিত্তিতে ইন্টারভিউ প্রক্রিয়া থেকে ১,৪৬৩ জনকে বাদ দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। মামলাকারীরা জানান, ওই সিদ্ধান্তের নেপথ্যে কী কারণ রয়েছে, চাকরিপ্রার্থীদের তা জানানো হয়নি। পরে চার বার তা খতিয়ে দেখে এসএসসি। শেষে ইন্টারভিউ থেকে বাদ পড়েন ৭৪ জন। সে ক্ষেত্রেও সঠিক নিয়ম মানা হয়নি বলে অভিযোগ ওঠে।
এসএসসির নিয়োগ প্রক্রিয়ার বিরুদ্ধে আরও অভিযোগ ছিল, কাউন্সেলিংয়ের সময়ে সংরক্ষণ নীতি মানা হয়নি। তফসিলি জাতি এবং জনজাতিদের সংরক্ষণ নিয়ে একাধিক প্রশ্ন ওঠে। এমনকি, সেখানে মহিলাদের সংরক্ষণ নিয়েও ত্রুটি ছিল বলে আদালতে জানান মামলাকারীদের আইনজীবী। ওএমআর শিটেও গোলমালের আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছিল আদালতে। দীর্ঘ সাত বছর ঝুলে থাকার পর অবশেষে উচ্চ প্রাথমিকের ওই ১৪,০৫২টি পদে নিয়োগের জন্য নতুন মেধাতালিকা প্রকাশের নির্দেশ দিয়েছিল হাই কোর্ট। তাকে চ্যালেঞ্জ করে ১৬ সেপ্টেম্বর আবার মামলা হয় সুপ্রিম কোর্টে। সোমবার এসএসসি সেই নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করল। তাতে যদিও থামছে না বিক্ষোভ।