মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপে শেষ পর্যন্ত শান্ত হন বিধায়করা। ছবি: ফাইল চিত্র
শুক্রবার বেনজির গন্ডগোলের সাক্ষী হল রাজ্য বিধানসভা। শুক্রবার শাসক এবং বিরোধী দলের বিধায়কদের একে অপরের দিকে রীতিমতো তেড়ে যেতে দেখা গিয়েছে। পরিস্থিতি সামলাতে শেষমেশ ওয়েলে নেমে আসেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর হস্তক্ষেপে শেষ পর্যন্ত শান্ত হন বিধায়করা।
ঘটনার সূত্রপাত এ দিনের প্রশ্নোত্তর পর্বে। মুর্শিদাবাদের কংগ্রেস বিধায়ক প্রতিমা রজক পরিবহণমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীকে তাঁর দফতরে চাকরি দেওয়ার প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন করেন। তিনি শুভেন্দুকে প্রশ্ন করেন, ‘‘বিভিন্ন জায়গা থেকে অভিযোগ আসছে যে, পরিবহণ দফতরে ৩-৪ লাখ টাকা নিয়ে চাকরি দেওয়া হচ্ছে। এটা কি সত্যি?” বিধানসভায় উপস্থিত এক বিধায়ক জানান, এই প্রশ্ন শুনেই নিজের আসনের সামনে দাঁড়িয়ে পড়েন মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী। তিনি প্রতিমা রজকের উদ্দেশে বলেন, ‘‘এ রকম কোনও অভিযোগ থাকলে আপনি প্রমাণ করুন। যদি না করতে পারেন তা হলে এখানেই ক্ষমা চান।”
কংগ্রেস বিধায়কদের অভিযোগ, এ কথা বলেই থেমে থাকেননি মন্ত্রী। তিনি আরও বলেন, গোটা মুর্শিদাবাদ ফাঁকা হয়ে গিয়েছে। কংগ্রেস নেই। অভিযোগ, প্রতিমাকে উদ্দেশ্য করে তিনি মন্তব্য করেন,‘‘পরের নির্বাচনে আপনি হারবেন।” মন্ত্রীর কথা শুনে প্রচণ্ড উত্তেজিত হয়ে ওঠেন ভরতপুরের কংগ্রেস বিধায়ক কমলেশ চট্টোপাধ্যায়। তিনি নিজের জায়গা ছেড়ে বেরিয়ে আসতে যান। তাঁকে বাধা দিয়ে থামাতে গিয়ে সামান্য আঘাত পান তাঁর দলেরই সূতির বিধায়ক হুমায়ুন রেজা।
আরও পড়ুন: ছাত্রদের মতোই পেঁচাও কথা শোনে শিক্ষকের
আরও পড়ুন: মহুয়ার ‘নির্দেশে’ ক্ষুব্ধ তৃণমূল বিধায়কের চিঠি মমতাকে
আরও পড়ুন: নীরবতা ভাঙলেন শোভন, নিশানায় মহুয়া-জয়প্রকাশ
কমলেশ এর পর হুমায়ুন রেজাকে টপকে বেরিয়ে আসেন এবং মন্ত্রীর দিকে ছুটে যান। তাঁকে ছুটতে দেখে নিজের জায়গা ছেড়ে বেরিয়ে আসেন শাসক দলের বিধায়করা। কমলেশের সঙ্গী হন অন্য কংগ্রেস বিধায়করা যোগ দেন বাম বিধায়করাও। রীতিমতো হাতাহাতির উপক্রম হয়। মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম এবং অরূপ বিশ্বাস দু’পক্ষকে সামলানোর চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। আব্দুল মান্নান এবং সুজন চক্রবর্তীও ওয়েলে নেমে বিক্ষোভ, হাতাহাতি সামাল দিতে থাকেন।
বিরোধীরা ওয়েলে নেমে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে দেন। তখন পরিস্থিতি সামলাতে উদ্যোগী হন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ওয়েলে নেমে বিরোধীদের তিনি অনুরোধ করেন, নিজেদের জায়গায় ফিরে যেতে। নিজের দলের বিধায়কদেরও তিনি ‘বকাবকি করে’ নিজেদের জায়গায় ফিরে যেতে বলেন। তাঁর হস্তক্ষেপে শেষ পর্যন্ত পরিস্থিতি শান্ত হয়।
স্পিকার বলেন, ‘‘বিধানসভার অন্দরে এই অবস্থা কাম্য নয়। আমি আব্দুল মান্নান এবং সুজনবাবুকে বলব, এক জন বিধায়ক এ রকম আর এক জনের দিকে মারতে উঠে আসছে এটা উচিত নয়। আপনারা দেখুন। মন্ত্রীকে বলব, উত্তর দেওয়ার ক্ষেত্রে আরও সংযত হন। আপনি ক্ষমা চাওয়ার যে কথা বলেছেন সেটা আমি রেকর্ড রাখছি না।’’