বানভাসি বাংলায় ‘জল ধরো জল ভরো’ প্রকল্প চালু হয় বেশ কিছু দিন আগে। বন্যার প্রকোপ ঠেকাতে রাজ্যের সেই প্রকল্প কার্যকর হয়েছে বলে মঙ্গলবার বিধানসভায় দাবি করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
এ দিন সেচ দফতরের প্রশ্নোত্তর পর্বে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘গত আট বছরে তিন লক্ষ পুকুর কাটা হয়েছে। একে যুক্ত করা হয়েছে ১০০ দিনের কাজ প্রকল্পের সঙ্গে। গত বারের অভিজ্ঞতা, এই প্রকল্পের জন্য বন্যার জল অনেকাংশে আটকেছে।’’ মমতা বিধানসভায় জানান, ডিভিসি প্রতি বার জল ছাড়লে খানাকুল, গোঘাট-সহ বিস্তীর্ণ অঞ্চল ভেসে যায়। তিন লক্ষ পুকুর কাটা ছাড়াও ৫০০ কোটি টাকা খরচ করে চেকড্যাম তৈরি করেছে রাজ্য। সেগুলিই বন্যার জল রুখতে সাহায্য করেছে। তা ছাড়া পুকুরগুলিতে মাছ চাষের সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। তাতে বিকল্প কর্মসংস্থানও বেড়েছে ।
মুখ্যমন্ত্রী জানান, বিশেষ করে গরমকালে ভূগর্ভস্থ জলস্তর কমে গেলে ওই সব পুকুরের জল চাষের কাজে লাগানো সম্ভব। তা ছাড়া ২৭০০ কোটি টাকা ব্যয়ে নিম্ন দামোদর প্রকল্প সম্পূর্ণ হলে কয়েক হাজার হেক্টর জমিতে সেচের সুবিধা মিলবে।
গীতারানি ভুঁইয়ার প্রশ্নের উত্তরে সেচমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী এ দিন জানান, কেলেঘাই-কপালেশ্বরী প্রকল্পের কাজ চলছে। কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকার তাদের অংশীদারি ৭৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৫০% করেছে। অতিরিক্ত অনেক অর্থ বরাদ্দ করেছে রাজ্য। এর ফলে স্থায়ী ভাবে বন্যামুক্ত হচ্ছে সংলগ্ন এলাকাগুলি। কেলেঘাই নদীর উপরে একটি রাবার ড্যাম নির্মাণ ছাড়া প্রকল্পের কাজ প্রায় শেষ হয়েছে। সেই প্রকল্পের জন্য দরপত্র ডাকা হয়েছে। সেটি চূড়ান্ত হলে নভেম্বর থেকে কাজ শুরু হবে।
কেন্দ্রীয় বঞ্চনা নিয়ে সর্বদলীয় কমিটি গড়ে কেন চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছে না, তা নিয়ে সেচ দফতরের বাজেট আলোচনার সময় প্রশ্ন তোলেন সিপিএম বিধায়ক রামশঙ্কর হালদার। ২০১৭ সালে উত্তরবঙ্গের বন্যার কারণ হিসেবে বিহারের সেচ ব্যবস্থার ‘করুণ’ অবস্থাকেই এ দিন দায়ী করেছেন সেচমন্ত্রী। তাঁর মন্তব্য, ‘‘বন্যার সময় কোনও দল থাকে না। কোনও বিধায়ক, মন্ত্রী, সাংসদ কখনও ত্রাণ কেন্দ্রে থেকেছেন বলে শুনিনি। থাকতে হয় সাধারণ মানুষকেই। ফলে বন্যা নিয়ে রাজনীতির সুযোগ নেই।’’ শুভেন্দু জানান, আয়লা-সহ রাজ্যের বিভিন্ন প্রকল্পের ক্ষেত্রে জমি অধিগ্রহণ একটা সমস্যা। তবে সিঙ্গুরের মতো লাঠিপেটা বা নন্দীগ্রামের মতো গুলি চালানোর পরিবর্তে জমি-মালিকদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে সরকারি কাজে জমির ব্যবস্থা করা হয়।