Dilip Ghosh

গাছে বাঁধার দাওয়াই দিলীপের, তৃণমূলের পাল্টা শুভেন্দু-খোঁচা

দিলীপকে পাল্টা কটাক্ষে বিঁধে তৃণমূল অবশ্য পরামর্শ দিয়েছে, তাঁর ওই দাওয়াই নারদ-কাণ্ডে অভিযুক্ত বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর উপরেই প্রথমে কাজে লাগানো হোক!

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৬ ডিসেম্বর ২০২২ ০৫:৩৫
Share:

বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষ। ফাইল চিত্র।

চুরি-দুর্নীতি এবং গা-জোয়ারির অভিযোগ ঘিরে পঞ্চায়েত ভোটের আগে শাসক ও বিরোধীদের তরজার পারদ চড়ছে। পঞ্চায়েতে যাঁরা গুন্ডামি বা দুর্নীতি করেছেন, তাঁদের গাছে বেঁধে রাখা, কলার ধরা এবং প্যান্ট খুলে নেওয়ার নিদান দিয়ে ফের বিতর্কে জড়িয়েছেন বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষ! পুলিশ-প্রশাসনের জোরেই শাসক তৃণমূল কংগ্রেস পার পেয়ে যাচ্ছে বলে সরব সিপিএমও। দিলীপকে পাল্টা কটাক্ষে বিঁধে তৃণমূল অবশ্য পরামর্শ দিয়েছে, তাঁর ওই দাওয়াই নারদ-কাণ্ডে অভিযুক্ত বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর উপরেই প্রথমে কাজে লাগানো হোক! জনবিচ্ছিন্ন বিরোধীরা পঞ্চায়েত ভোটের আগে বাজার গরম করার চেষ্টা করছে, এমনই দাবি তৃণমূলের।

Advertisement

বর্ধমানে দলের কর্মসূচিতে গিয়ে রবিবার বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ বলেছেন, ‘‘আবার পঞ্চায়েত নির্বাচন আসছে। গত বার পঞ্চায়েতে মারপিট করে, পুলিশ ও গুন্ডা দিয়ে মনোনয়ন করতে দেওয়া হয়নি। আমাদের মনোনয়ন করতে না দিয়ে যারা জিতেছিল, পাঁচ বছর তারা লুট করেছে। পাবলিকের মারের ভয়ে তারা এখন পালাচ্ছে।’’ এর পরেই দিলীপের আহ্বান, ‘‘ছাড়বেন না কাউকে। এই পঞ্চায়েতের লোকেদের নিম গাছে বেঁধে রেখে দেবেন, খেজুর গাছে বেঁধে দিয়ে হিসাব চাইবে! কলার ধরবেন, প্যান্ট খুলে দেবেন! কারণ, তারা যে টাকা চুরি করে বাড়ি করেছে, সেটা আপনার টাকা।’’ তাঁর কথায়, ‘‘পাই-পয়সা বুঝে নেবেন পঞ্চায়েতের কাছ থেকে। নির্বাচন আসছে, বাড়িতে এলে ধরবেন গলায় গামছা দিয়ে, সেই দিন আসছে!’’

রাজ্য তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ পাল্টা বলেছেন, ‘‘গাছে বাঁধা বা প্যান্ট খোলার পাইলট প্রকল্পটা শুভেন্দু অধিকারীকে দিয়েই শুরু করুন না! তাঁর তো নারদ-কাণ্ডে সিবিআইয়ের এফআইআরে নাম আছে, প্রতিষ্ঠিত চোর! সেই রকম লোককে নেতার পদে বসিয়ে এই সব কথা বলছেন কাদের? কল্যাণীর এম্‌স হোক বা আবাস যোজনা, সামান্য সুযোগে বিজেপি যেখানে পেরেছে, দুর্নীতি করেছে। তৃণমূল অনেক বড় দল, তারা সংযত।’’ রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের কটাক্ষ, ‘‘ওঁর দলে দিলীপদা’র কথার গুরুত্ব আছে? শুনেছি, ক’দিন আগেই তো বিক্ষুব্ধ হয়ে অন্য দলের সঙ্গে যোগাযোগ করছিলেন!’’

Advertisement

পূর্ব মেদিনীপুরের তমলুকে এ দিন সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তীও দিলীপকে বিঁধে বলেছেন, ‘‘তৃণমূলের যারা চোর, কেলেঙ্কারির নায়ক, তাদের নিয়েই তো বিজেপি দল করেছে! ওঁর মুখে এ সব কথার কী মানে আছে? তৃণমূলকে স্বস্তিতে থাকতে দিচ্ছেন বিজেপির দিল্লির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। নড়বড়ে খুঁটিতে অমিত শাহের পাইলিং যোগ হচ্ছে! দিলীপবাবুরা পারলে আগে সে দিকটা দেখুন!’’ তবে একই সঙ্গে তৃণমূলকে নিশানা করেও সুজনবাবুর বক্তব্য, ‘‘সমবায় ভোটেও মারামারি হচ্ছে। এই ভাবেই পঞ্চায়েত ভোটে জিতেছিল শাসক দল। পুলিশ-প্রশাসন আছে বলেই তৃণমূল আছে। যে পরিমাণ লুট-চুরি, অন্যায় তৃণমূল নেতারা করেছেন, পুলিশ সরে গেলে এঁদের ঘর থেকে বেরোনে মুশকিল হয়ে যাবে জনরোষের চাপে!’’ বালুরঘাটে এমপি কাপের অবসরে বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারেরও অভিযোগ, ‘‘তৃণমূল মানুষের এবং বিরোধীদের অধিকার কেড়ে নিচ্ছে। যে দিন ক্ষমতা থাকবে না, ব্যুমেরাং হয়ে যাবে!’’

তৃণমূলের তরফে কুণালের পাল্টা দাবি, ‘‘সংগঠন নেই, লোক নেই। জনবিচ্ছিন্ন বিরোধীরা অর্থহীন কথা বলে বাজার গরম করছে!’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement