—ফাইল চিত্র।
রাস্তার নাম পরিবর্ত নিয়ে এবার তরজা শুরু হল মন্ত্রী এবং মেয়রের। শনিবার পর্যটনমন্ত্রী দাবি করেন, রাস্তার নাম পরিবর্তনে রাজ্য সরকারের সম্মতি নিতে হবে। না হলে সেটি অবৈধ। পূর্ত দফতর, জাতীয় সড়কের মতো রাস্তায় কোনও নামকরণ পুরসভার এক্তিয়ারে পড়ে না বলেই দাবি করেন তিনি। তার পরেও এমন কিছু রাস্তা, সেতুর নামকরণ পুরসভা গায়ের জোরে করছে বলে অভিযোগ তুলেছেন মন্ত্রী।
শনিবার পর্যটনমন্ত্রী বলেন, ‘‘রাস্তার নামকরণ রাজ্য সরকারের অনুমতি নিয়ে করতে হয়। বারবার এটা বলেছি। বাধ্যতামূলক ভাবে আইনে এটা বলাও রয়েছে। রাজ্যের অনুমোদন নিয়ে পুরসভা রাস্তার নাম পরিবর্তন করতে পারে। কিন্তু যে রাস্তাটা রাজ্য সরকারের রাস্তা, জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের রাস্তা, সেগুলির নামকরণ পুরসভা করতে পারে না। এটা যদি না বোঝেন, বেআইনি কাজ করেন, তা বৈধতা পাবে না।’’
এই বক্তব্যের প্রেক্ষিতে মেয়র অশোক ভট্টাচার্যের কটাক্ষ, ‘‘উনি জানেন না কেন, বুঝতে পারছি না। আবার উনি শুনছি মেয়র হতে চাইছেন। আইনের বই তো পড়তে হবে। পুর এলাকায় রাস্তার নামকরণের এক্তিয়ার একমাত্র পুরসভারই রয়েছে। ওই কাজের জন্য পুর-আইন মেনে পুরসভার উপদেষ্টা কমিটি রয়েছে। তারাই কোনও রাস্তা বা সেতুর নামকরণ বা নাম পরিবর্তনের বিষয়টি ঠিক করে। সেই কমিটিতে কারা থাকবেন, তা ঠিক করে সদস্যদের নাম পুর দফতরে পাঠানো হয়। পুর দফতর থেকেই ওই কমিটিকে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।’’
আরও পড়ুন: ‘গো ব্যাক মোদী, গো ব্যাক মমতা’, স্লোগান মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধেও
মন্ত্রীর পাল্টা কটাক্ষ, ‘‘মেয়র অনেক প্রবীণ, বেশি বয়স হয়েছে। সেই মতো তাঁর বুদ্ধিমত্তা অভিজ্ঞতা। তাঁর কাছ থেকে আমরা শিখব। ভীমরতি তো বলতে পারব না। পদ্ধতি মেনে দিলেই তো হয়। তা ছাড়া আর তো তিন মাস রয়েছে। বিদায়ের সময় হয়ে এসেছে।’’ মেয়রের আবার জবাব, ‘‘মন্ত্রীরই মেয়াদ ফুরিয়েছে। বিদায় মন্ত্রীকেই নিতে হবে। তাঁকে একের পর এক বিভিন্ন দায়িত্ব থেকে সরানো হচ্ছে। মান-ইজ্জত থাকলে ছেড়ে চলে আসতেন।’’
পুরভোটের মুখে সম্প্রতি একযোগে ১০টি রাস্তার নাম পরিবর্তন, উড়ালপুল এবং সেতুর নামকরণ করেছে বাম পরিচালিত পুরসভা। এই নিয়ে রাজনীতি করার অভিযোগ তুলেছে বিরোধীরা। কী কারণে সেবক রোডকে হাসমিচক করা হয়েছে, সেই প্রশ্ন তুলেছেন তৃণমূল, কংগ্রেসের মতো বিরোধী কাউন্সিলররা। হিলকার্ট রোডে মহানন্দা সেতু লাগোয়া মোড় মহাত্মা গাঁধী চক বলে নতুন নামকরণ করেছে পুরসভা। সেখানে গাঁধী মূর্তিও বসাবেন বলে আগেই মেয়র জানিয়েছিলেন। মূর্তি বসানো নিয়ে এর আগেই মন্ত্রীর সঙ্গে তাঁর তরজা হয়েছে। মন্ত্রী জানান, রাজ্য সরকারের তরফে ওই মোড়ে গাঁধী মূর্তি তাঁরাই বসাবেন।
পর্যটনমন্ত্রীর যুক্তি, বিমানবন্দরে নামকরণ বা নাম পরিবর্তন রাজ্য সরকার চাইলে বোর্ড লাগিয়ে করতে পারবে না। জাতীয় সড়কের নামকরণে রাজ্য করতে পারে না। প্রস্তাব পাঠাতে পারে। জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ ঠিক করবে, সেই নাম কী হবে। তেমনই পূর্ত দফতরের রাস্তার নাম পুরসভা বদলাতে বা দিতে পারে না। শিলিগুড়ি শহরে পুরসভা ছাড়া এসজেডিএ, পূর্ত দফতরের রাস্তা রয়েছে। মহানন্দা সেতু লাগোয়া ভেনাস মোড়, সেবক মোড় পূর্ত দফতরের রাস্তা বলে দাবি। তেমনই নৌকাঘাট মোড় এশিয়ান হাইওয়ে কর্তৃপক্ষের অধীনে। অথচ ওই সমস্ত রাস্তার নামকরণ পুরসভা কী ভাবে করছে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।