চুনকাম করে দেওয়া হচ্ছে শাহজাহানের নাম লেখা দেওয়াল। — নিজস্ব চিত্র।
এত দিন যে মাঠ ছিল ‘বাঘ’-এর অনুগামীদের দখলে, তা পুনর্দখল করলেন মানুষ। পুলিশ প্রশাসন এবং স্থানীয় তৃণমূল বিধায়কের উপস্থিতিতে সন্দেশখালির ঋষি অরবিন্দ মিশন ময়দানের দখল ফিরল। গ্রামবাসীদের একটি অংশের অভিযোগ, এই মাঠটি দখল করে রেখেছিলেন শেখ শাহজাহান, শিবু হাজরারা। বৃহস্পতিবার সকালে মাঠের আশপাশে শাহজাহানের নাম লেখা দেওয়ালেও চুনকাম করে দেওয়া হয়। বসিরহাট পুলিশ জেলার সুপার হোসেন মেহেদি রহমান গ্রামের বাচ্চাদের ফুটবল দেন, জার্সি পরিয়ে দেন। তার পরেই মাঠে শুরু হয় খেলা।
একটা সময় ছিল যখন সন্দেশখালি এলাকায় সবচেয়ে বড় এবং ভাল মাঠ হিসাবে ক্রীড়াবিদদের মুখে মুখে ফিরত ঋষি অরবিন্দ মিশন ময়দানের নাম। কিন্তু টুর্নামেন্ট করার নাম করে সেই প্রকাণ্ড মাঠেরই দখল নেওয়ার অভিযোগ শাহজাহানবাহিনীর বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবার সকালে সেই মাঠেরই দখল নিল মানুষ, তা-ও আবার পুলিশ প্রশাসনের উপস্থিতিতে। মাঠের আশপাশের সীমানা প্রাচীরে ছিল শাহজাহান ফ্যান ক্লাবের নাম লেখা। সকালে সেই সমস্ত দেওয়াল থেকে শাহজাহানের নামের উপর চুনকাম করে দেওয়া হতে থাকে। এ ভাবেই একদা দখল হয়ে যাওয়া অরবিন্দ মিশনের মাঠ আবার মানুষের হেফাজতে ফিরল।
ফেব্রুয়ারির গোড়া থেকেই শাহজাহানের গ্রেফতারির দাবিতে পথে নামেন সন্দেশখালির মহিলাদের একাংশ। তাঁদের অভিযোগ, প্রত্যন্ত এই এলাকায় নিজের রাজপাট কায়েম করে ফেলেছিলেন শাহজাহান, উত্তম, শিবুরা। সরকারি জমি দখল থেকে শুরু করে খেলার মাঠের দখল, বিঘার পর বিঘা কৃষিজমির দখল নিয়ে মাছ, চিংড়ি, কাঁকড়ার ভেড়ি তৈরি— শাহজাহানবাহিনীর অত্যাচারের অভিযোগ করেছিলেন গ্রামবাসীদের একটি অংশও। শিবু, উত্তম গ্রেফতার হলেও এখনও শাহজাহানের খোঁজ নেই। এ বার সেই শাহজাহানের দখলদারিও হঠানো শুরু হল সন্দেশখালি থেকে। বৃহস্পতিবার সকালে গ্রামবাসীদের একাংশ মাঠের কাছে জড়ো হন। প্রশাসনের সহায়তায় তাঁরা শাহজাহানের নামাঙ্কিত দেওয়ালে চুনকাম করে দেন। মাঠ ঘিরে গাছের চারাও পোঁতার কাজ শুরু হয়। এক গ্রামবাসী দাবি করেন, এই মাঠে এক সময় গ্রামের ছেলেমেয়েরা খেলাধুলো করত। কিন্তু টুর্নামেন্ট করার নাম করে সেই মাঠই কার্যত দখল করে নেয় শাহজাহান অনুগামীরা। তাঁর অভিযোগ, তার পর থেকে মাঠে আর ঢোকা যেত না। তালাবন্ধ করে রাখা হত। এ বার সেই মাঠ আবার ফিরল কচিকাঁচাদের কাছে। প্রতিদিন আবার ‘খেলা হবে’ সবুজ মাঠে।