State news

ভিড়ের চাপে পাঁচিল ভাঙল কচুয়ার লোকনাথ মন্দিরে, পদপিষ্ট হয়ে মৃত অন্তত ৩, জখম ২৭

বৃহস্পতিবার রাত থেকেই উত্তর ২৪ পরগণার কচুয়ার লোকনাথ মন্দিরে পুজো দিতে ভিড় বাড়াচ্ছিলেন প্রচুর ভক্ত।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কচুয়া শেষ আপডেট: ২৩ অগস্ট ২০১৯ ১২:০৭
Share:

দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শন করছেন জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। —নিজস্ব চিত্র।

জন্মাষ্টমীতে লোকনাথ মন্দিরে পুজো দিতে গিয়েছিলেন ওঁরা। কিন্তু ভিড়ের চাপে আচমকাই মন্দিরের পাঁচিল ভেঙে যায়। শুরু হয় হুড়োহুড়ি। আর তাতেই পদপিষ্ট হয়ে প্রাণ গেল অন্তত ৩ জনের। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা। এই ঘটনায় আহত হয়েছেন অন্তত ২৭ জন। আহতদের সকলকে বিভিন্ন হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। পুলিশ যদিও জানিয়েছে, আহতের সংখ্যা ১৬।

Advertisement

বৃহস্পতিবার রাত থেকেই উত্তর ২৪ পরগণার কচুয়ার লোকনাথ মন্দিরে পুজো দিতে ভিড় বাড়াচ্ছিলেন প্রচুর ভক্ত। প্রতি বছরই কচুয়ার এই মন্দিরে জন্মাষ্টমীর দিন ভক্তদের ভিড় হয়। সে জন্য আগের রাত থেকে ভক্তেরা জড়ো হতে শুরু করেন। বৃহস্পতিবার রাত ২টো নাগাদ মুষলধারে বৃষ্টি শুরু হলে প্রচুর ভক্ত মন্দির চত্বরের বাইরে বিভিন্ন জায়গায় আশ্রয় নেন। রাত সাওয়া দুটো নাগাদ বৃষ্টি থামতে একসঙ্গে সকলেই মন্দিরে ঢুকতে শুরু করেন। সেই হুড়োহুড়িতে মন্দিরের পাঁচিলের দেওয়াল ভেঙে যায়। মন্দিরের পাঁচিলের গায়ে বাঁশের কাঠামো এবং বেশ কিছু দোকান ছিল। সেগুলোও ভেঙে যায়। আতঙ্কে আরও হুড়োহুড়ি পড়ে যায়। আর তাতেই রাস্তায় পড়ে গিয়ে পদপিষ্ট হয়ে অনেকে জখম হন।

খবর পেয়ে রাতেই ঘটনাস্থলে পৌঁছন উদ্ধারকারীরা। জখমদের উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে অনেককেই কলকাতার ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ, আর জি কর হাসপাতাল এবং এসএসকেএমে নিয়ে যাওয়া হয়। এখনও পর্যন্ত তিন জনের মৃত্যুর খবর জানিয়েছে পুলিশ। তাঁরা হলেন, দত্তপাড়ার বাসিন্দা অপর্ণা সরকার, হাসনাবাদের তরুণ মণ্ডল এবং রাজারহাটের পূর্ণিমা গড়াই। আহতদের মধ্যে কয়েক জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। মৃত পূর্ণিমা দেবীর মেয়ে পুলিশের বিরুদ্ধে অসহযোগিতার অভিযোগ তুলেছেন। তিনি জানান, দুর্ঘটনার পর মাকে খুঁজতে দেয়নি পুলিশ। তাঁরা পুলিশকে যা জিজ্ঞাসা করেছেন, তার কোনও সঠিক জবাবও পাননি।

Advertisement

আরও পড়ুন: নতুন সদস্য ৭৭ লাখ, সবাইকে ছাপিয়ে এ রাজ্যে নতুন ‘রেকর্ড’ বিজেপির
আরও পড়ুন: ভারতের সঙ্গে কথা বলে কোনও লাভ নেই: ইমরান

শুক্রবার সকাল ১১টা নাগাদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজে আহতদের দেখতে যান। সেখান থেকে এসএসকেএম হাসপাতালে গিয়ে আহতদের সঙ্গে দেখা করেন। চিকিৎসকদের সঙ্গেও কথা বলেছেন তিনি। পরে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘‘খুব বেশি ভিড় এবং সঙ্গে প্রাকৃতিক দুর্যোগের জন্য এই ঘটনা ঘটেছে। পদপিষ্টের মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। খুবই দুঃখজনক ঘটনা। মৃতদের পরিবার পিছু ৫ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ, গুরুতর আহতদের পরিবারকে ১ লক্ষ টাকা এবং কম আহতদের পরিবারকে ৫০ হাজার টাকা দেওয়া হবে।’’

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন দুই আহত (বাঁ দিকের উপরে এবং নীচে) এবং হাসপাতাল থেকে প্রাথমিক চিকিৎসার পর ছাড়া পেয়েছেন আর এক আহত। ছবি: এএনআইয়ের টুইট থেকে।

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে শুক্রবার সকালে কচুয়া পৌঁছন জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। এই দুর্ঘটনা এড়াতে কচুয়ায় মন্দিরের সামনে কংক্রিটের রাস্তা নির্মাণ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তিনি আরও বলেন, ‘‘আমরা এমন রাস্তা করে দেব যাতে একসঙ্গে অনেকে ঢুকতে না পারেন, এক এক করে ঢুকতে হবে এবং এক এক করেই বেরতে হবে। সরকার থেকে সব কিছুই করে দেওয়া হবে।’’ এ দিন সকালে ঘটনাস্থলের কাছে মাটিয়া ফাঁড়িতে যান দক্ষিণবঙ্গের এডিজি এবং ডিআইজি (প্রেসিডেন্সি রেঞ্চ)।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement