বনগাঁ পুরসভা
হাইকোর্টের নির্দেশ মেনে বনগাঁর পুরপ্রধান শঙ্কর আঢ্যের বিরুদ্ধে আনা অনাস্থা প্রস্তাবের উপরে কাউন্সিলরদের বৈঠকের দিন নির্দিষ্ট করলেন উত্তর ২৪ জেলার জেলাশাসক চৈতালি চক্রবর্তী। ওই বৈঠকে ভোটাভুটিও হবে।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার সকাল ১১টায় জেলাশাসকের অফিসে বৈঠক হবে। জেলাশাসক পুরসভার ২২ জন কাউন্সিলরকে চিঠি এ ব্যাপারে দিয়েছেন। চিঠি দেওয়া হয়েছে, পুরসভার এগজিকিউটিভ অফিসারকেও। সকলকে বৈঠকে উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। বৈঠককে কেন্দ্র করে জোরদার করা হচ্ছে পুলিশি নিরাপত্তা।
অনাস্থা ভোটে জয়লাভের বিষয়ে আত্মবিশ্বাসী তৃণমূল। দলের জেলা সভাপতি তথা রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেন, ‘‘অনাস্থা ভোটে জয়ের বিষয়ে আমরা একশো শতাংশ নিশ্চিত। অন্য দিকে, বিজেপির বারাসত সাংগঠনিক জেলার সভাপতি শঙ্কর চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘অনাস্থা বৈঠকে আমরা যোগ দেব। জয়ের বিষয়ে আমরা আশাবাদী। আমরা বিশ্বাস করি, কাউন্সিলরেরা নৈতিকতা মাথায় রেখে ভোট দেবেন।’’
পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, পুরসভার ২২ জন কাউন্সিলরের মধ্যে তৃণমূলের পক্ষে রয়েছেন ১৪ জন কাউন্সিলর। তার মধ্যে কংগ্রেসের একমাত্র কাউন্সিলরও রয়েছেন। বিজেপির পক্ষে রয়েছে ৭ জন কাউন্সিলর। সিপিএমের কাউন্সিলর এক জন। আগের বার অনাস্থার উপরে ভোটাভুটিতে উপস্থিত ছিলেন না তিনি। এ বারও দলের কাউন্সিলর হাজির থাকবে না বলে জানিয়েছেন সিপিএম নেতারা।
৭ ও ৮ জুন পুরপ্রধানের বিরুদ্ধে অনৈতিক কাজের অভিযোগ তুলে পুরসভার ১৪ জন তৃণমূল কাউন্সিলর মহকুমাশাসকের কাছে অনাস্থার চিঠি দিয়েছিলেন। তাঁরা দলীয় নেতৃত্বকেও বিষয়টি জানিয়েছিলেন। পরবর্তী সময়ে দলীয় নেতৃত্ব কোনও পদক্ষেপ করছেন না, এই অভিযোগ তুলে ১২ জন কাউন্সিলর দিল্লিতে গিয়ে বিজেপিতে যোগদান করেন। বনগাঁ উত্তর কেন্দ্রের বিধায়ক বিশ্বজিৎ দাসও বিজেপিতে যোগদান করেন। হাইকোর্টের নির্দেশে ‘বিদ্রোহী কাউন্সিলরেরা’ ১৬ জুলাই অনাস্থা প্রস্তাবের উপরে ভোটাভুটির ডাক দেন। ভোটাভুটিতে দু’পক্ষই দাবি করে, তারা অনাস্থা ভোটে জয়লাভ করেছে। বিষয়টি হাইকোর্ট পর্যন্ত গড়ায়। ভোটের দিন গোলমাল হয়েছিল। বহিরাগতদের বোমা আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে শহরে ঘুরতে দেখা গিয়েছিল। আতঙ্ক ছড়িয়েছিল শহরবাসীর মধ্যে। দৈনন্দিন পুর পরিষেবা কার্যত থমকে যায়। পরিষেবা স্বাভাবিক করার দাবি তুলে পথে নামেন শহরবাসী।
২৬ অগস্ট হাইকোর্ট রায় ঘোষণা করে। বনগাঁ পুরসভায় হওয়া অনাস্থা প্রস্তাবের উপরে দু’টি সিদ্ধান্ত হাইকোর্ট বাতিল করে দেয়। জেলাশাসকের দফতরে নতুন করে অনাস্থা প্রস্তাবের উপরে বৈঠকের নির্দেশ দেয় আদালত। ইতিমধ্যেই অবশ্য বিজেপিতে যোগদান করা ৫ জন কাউন্সিলর তৃণমূলে ফিরে এসেছেন।