বর্ধমানে সিপিএমের সমাবেশ। নিজস্ব চিত্র।
জাতীয় নাগরিকপঞ্জির (এনআরসি) বিরুদ্ধে রাজ্য জুড়ে পথে নেমেছে সিপিএম। প্রতিবাদী মিছিল ও সমাবেশের পাশাপাশিই ভোটার তথ্য যাচাই এবং ডিজিটাল রেশন কার্ডের জন্য আবেদন করার কাজে সহায়তা শিবিরও খুলেছে তারা। নানা শহরে ও জেলা সদরে সেই সহায়তা শিবিরে মানুষের লাইন পড়ছে বিরাট। সাধারণ মানুষের সাড়া পাওয়ার পরেই এ বার সিপিএম দাবি তুলল, ১৯৫১ সালের পর থেকে ভোটার তালিকা ওয়েবসাইটে তুলে দেওয়ার ব্যবস্থা করুক রাজ্য সরকার। সেই সঙ্গেই মানুষের হয়রানি এড়াতে ভোটার তালিকার সার্টিফায়েড প্রতিলিপি বিডিও দফতর থেকেও দেওয়ার দাবি করছে তারা।
বাংলায় এনআরসি চালু হবে এবং দু’কোটি মানুষের নাম বাদ যাবে বলে হুমকি দিচ্ছেন বিজেপি নেতারা। ভোটার তথ্য যাচাইয়ের সঙ্গে এনআরসি-র কোনও সম্পর্ক না থাকলেও ওই প্রক্রিয়া ঘিরে আতঙ্কিত হচ্ছেন মানুষ। এক দিকে যেমন তাঁরা ভোটার তথ্য সংশোধন বা সংযোজন করাচ্ছেন, তেমনই পুরনো ভোটার তালিকার খোঁজে হন্যে হচ্ছেন। সিপিএমের বক্তব্য, আগে পুরনো ভোটার তালিকা জেলাশাসক দফতরে সংরক্ষিত থাকত। সরকার পরিবর্তনের পরে পুরনো ভোটার তালিকা নিয়ে এসে রাখা হয়েছে স্টেট আর্কাইভে। সেখানেও পুরনো নথি পাইয়ে দেওয়ার নাম করে দালাল-চক্র চলছে। এই প্রেক্ষিতেই ভোটার তালিকা ওয়েবসাইটে তুলে দেওয়ার দাবি সামনে এনেছে সিপিএম।
বাম পরিষদীয় নেতা সুজন চক্রবর্তী মঙ্গলবার এই দাবি জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি দিয়েছেন। সুজনবাবুর বক্তব্য, ‘‘ডাইক্টরেট অফ স্টেট আর্কাইভে পুরনো ভোটার তালিকা আছে। সাধারণ, গরিব মানুষের হাজার হাজার টাকা খরচ, দালাল-চক্র এবং হয়রানি বন্ধ করতে ১৯৫১ সালের পর থেকে ভোটার তালিকা সাইটে আপলোড করে দেওয়া হোক। ভোটার তালিকার সার্টিফায়েড প্রতিলিপি দেওয়ার ব্যবস্থা একেবারে বিডিও স্তর পর্যন্ত সম্প্রসারিত করা হোক।’’
গত কয়েক দিনে চঁচুড়া, বাঁকুড়া, দুর্গাপুর, আসানসোলের পরে এ দিন মেদিনীপুর ও বর্ধমানে সিপিএমের সমাবেশে ভিড় হয়েছে বিপুল। দলের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র মেদিনীপুরে ফের বলেছেন, এনআরসি তাঁরা হতে দেবেন না। দলের তরফে সহায়তার কাজ করতে হবে আরও নিবিড় ভাবে। সুজনবাবুরও বক্তব্য, সহায়তা শিবিরের সংখ্যা আরও বাড়ানো হবে।