বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিমান বসু।
করোনা-যুদ্ধে আর্থিক সহায়তা দিতে এগিয়ে আসছেন সব রাজনৈতিক দলের নেতা-নেত্রীরাই। তারই সঙ্গে করোনা মোকাবিলায় চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মী ও রোগীদের প্রতি সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিচ্ছে বিভিন্ন সংগঠন। আবার ত্রাণ দেওয়াকে ঘিরে প্রশাসন ও শাসক দলের সঙ্গে বিরোধীদের সংঘাতও মাথা চাড়া দিতে শুরু করেছে। গোটা পরিস্থিতি সম্পর্কে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে অবহিত করতে তাঁর কাছে সাক্ষাতের সময় চাইছেন বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিমান বসু।
চিকিৎসক, নার্স-সহ সব ধরনের স্বাস্থ্যকর্মীদের ব্যবহারের জন্য রাজ্যে তাদের সব বাড়ি ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্টুডেন্টস হেল্থ হোম। সংগঠনের সভাপতি পবিত্র গোস্বামীর বক্তব্য, রাজ্যের সর্বত্র চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা দিনরাত এক করে লড়ছেন করোনা মোকাবিলায়। কিন্তু সংক্রমণ ছড়ানোর গুজবের জেরে অনেক জায়গায় তাঁদের ভাড়া বাড়িতে থাকতে দেওয়া হচ্ছে না। এমতাবস্থায় চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা হেল্থ হোমের বাড়িগুলোয় নিখরচায় থাকতে পারবেন। এর আগে আইডি হাসপাতালের চিকিৎসকদের ব্যবহারের জন্য বেলেঘাটায় শিলিগুড়ি পুরসভার গেস্টহাউস রাজ্য সরকারকে ছেড়ে দেওয়ার কথা জানিয়ে দিয়েছেন শিলিগুড়ির মেয়র অশোক ভট্টাচার্য। অন্য দিকে, জমিয়তে উলামায়ে হিন্দের সাধারণ সম্পাদক মাহমুদ মাদানি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠি দিয়ে জানিয়েছেন, করোনায় কোয়রান্টিন সেন্টার হিসেবে ব্যবহারের জন্য সারা দেশে তাঁদের সংগঠনের সব বাড়ি তাঁরা দিতে চান।
রোগের সঙ্গে যুদ্ধের আবহেই মঙ্গলবার আলিমুদ্দিনে ‘দূরত্বের নীতি’ মেনে চেয়ার সাজিয়ে বৈঠকে বসেছিলেন বামফ্রন্টের নেতৃত্ব। তাঁদের মতে, মুখ্যমন্ত্রী কলকাতায় নিজে দাঁড়িয়ে তদারকি এবং নানা নির্দেশ দিলেও বাকি রাজ্যে সব কিছু সে ভাবে চলছে না। কৃষক, ইটভাটা, চটকল, চা-বাগান শ্রমিকদের সমস্যা আছে। নানা জেলায় রেশন বিলির তদারকি শাসক দলের নেতারা করছেন বলে ‘দলবাজি’র অভিযোগ আসছে। ভিডিয়ো-বার্তায় বিমানবাবু বলেন, ‘‘সব সমস্যা একত্রিত করে আমরা মুখ্যমন্ত্রীকে অবহিত করতে চাই। তাঁর সাক্ষাতের সময় চাইব।’’
বিপন্ন মানুষকে ত্রাণ দেওয়ার জন্য দলের সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নড্ডার নির্দেশে রাস্তায় বেরিয়ে পুলিশ-প্রশাসনের বাধার মুখে পড়ার অভিযোগে সরব হয়েছেন বিজেপি নেতারা। বাধা পেয়ে এ দিন হেয়ার স্ট্রিট থানায় ত্রাণ সামগ্রী রেখে এসেছেন সায়ন্তন বসু। বিধাননগরে পুলিশের সঙ্গে বচসা হয়েছে বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ ও বিধায়ক সব্যসাচী দত্তের। সব্যসাচী বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর অনুপ্রেরণায় রাস্তায় বেরিয়েছিলাম। দমকলমন্ত্রীও লোকজন নিয়ে ত্রাণ দিলে পুলিশ পাশে দাঁড়ায়। আর আমরা বেরোলে প্রশাসনের অন্য রং!’’ দমকলমন্ত্রী সুজিত বসুর পাল্টা কটাক্ষ, ‘‘উনি বিধাননগরের নন, রাজারহাট-নিউটাউনের বিধায়ক। সেখানে তাপস চট্টোপাধ্যায় ত্রাণের ব্যবস্থা করছেন। ওঁদেরকে মানুষই ত্রাণ দিয়ে দেবেন!’’