Mamata Banerjee and Bidyut Chakraborty

অমর্ত্যদের বাড়ির পাশের রাস্তা মমতার থেকে ফেরত চাইলেন বিদ্যুৎ, হাতিয়ার করলেন ইউনেস্কোকে

যদিও বিশ্বভারতীর পড়ুয়া ও অধ্যাপকদের একটি অংশের মতে, ইউনেস্কোর ঘোষণা নিয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা। বোলপুরে মিছিলও করেছে শাসকদল। সেই সুযোগকেই কাজে লাগাতে চাইছেন উপাচার্য।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

বোলপুর শেষ আপডেট: ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ২০:১২
Share:

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি লিখে রাস্তা ফেরত চাইলেন উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী। —নিজস্ব চিত্র।

উপাসনাগৃহ থেকে কালিসায়র মোড় পর্যন্ত সেই রাস্তা রাজ্য সরকারের কাছে ফেরত চাইলেন বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। সম্প্রতি শান্তিনিকেতনকে ‘বিশ্ব ঐতিহ্যক্ষেত্রে’র স্বীকৃতি দিয়েছে ইউনেস্কো। এই তকমা ধরে রাখার কারণ দেখিয়ে রাজ্যের পূর্ত দফতরের অধীনে থাকা ওই রাস্তাটি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি লিখে ফেরত চাইলেন উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী।

Advertisement

২০১৭ সালে বিশ্বভারতীর তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য স্বপন দত্তের আবেদনের ভিত্তিতে শান্তিনিকেতন থেকে শ্রীনিকেতন সংযোগকারী প্রায় তিন কিলোমিটার ওই রাস্তাটির তত্ত্বাবধানের দায়িত্ব বিশ্বভারতীর হাতে তুলে দিয়েছিল রাজ্য সরকার। অমর্ত্য সেন, ক্ষিতিমোহন সেন, নন্দলাল বসু, গৌরী ভঞ্জ, শান্তিদেব ঘোষ-সহ বহু বিশিষ্ট আশ্রমিকের বাসভবন এই রাস্তার ধারেই। পরে আশ্রমিকদের একাংশ অভিযোগ তোলেন, বিদ্যুতের সময়ে যখন তখন ওই রাস্তা বন্ধ করে দেওয়া থেকে শুরু করে সমস্ত রকম মালবাহী গাড়ির প্রবেশ নিষিদ্ধ করায় তাঁরা অসুবিধার মুখে পড়েছেন। শুধু তাই নয়, সাপ্তাহিক মন্দির বা বিশেষ উপাসনার দিনগুলিতেও শিক্ষাভবন মোড় থেকেই সমস্ত ধরনের যান চলাচল আটকে দেওয়া হত বলেও অভিযোগ আশ্রমিকদের। একই সঙ্গে ওই রাস্তায় সংবাদমাধ্যমের প্রবেশ বা ছবি তোলাও ক্ষেত্রবিশেষে নিষিদ্ধ করে দেওয়া হয়। আশ্রমিকদের পক্ষ থেকে এ নিয়ে চিঠি দেওয়া হয় মুখ্যমন্ত্রীকে। এর পরেই ২০২০ সালে রাস্তাটি ফিরিয়ে নেওয়ার ঘোষণা করেন মমতা। পূর্ত দফতরের (সড়ক) তরফে রাস্তার ধারে লাগানো হয় স্থায়ী হোর্ডিং। সেখানে লেখা, রাস্তার রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে এখন পূর্ত দফতর। ইউনেস্কোর স্বীকৃতিকে কাজে লাগিয়ে এখন সেই রাস্তাই ফেরত পেতে চাইছে বিশ্বভারতী।

মুখ্যমন্ত্রী লেখা চিঠিতে উপাচার্য লিখেছেন, ‘‘১৭ সেপ্টেম্বর ইউনেস্কো শান্তিনিকেতনকে বিশ্ব হেরিটেজ তকমা দিয়েছে। এই তকমা ধরে রাখতে হবে আমাদের সবাইকে। এই রাস্তার দুই ধারে একাধিক ঐতিহ্যবাহী ভবন, স্থাপত্য, ভাস্কর্য আছে। ভারী যান চলাচলের ফলে কম্পনে এগুলি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এগুলিকে রক্ষণাবেক্ষণের জন্য এই রাস্তাটি বিশ্বভারতীকে ফিরিয়ে দেওয়া হোক।’’

Advertisement

যদিও বিশ্বভারতীর পড়ুয়া ও অধ্যাপকদের একটি অংশের মতে, ইউনেস্কোর ঘোষণা নিয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা। বোলপুরে মিছিলও করেছে শাসকদল। সেই সুযোগকেই কাজে লাগাতে চাইছেন উপাচার্য। এক অধ্যাপকের কথায়, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী তাঁর খুশি ব্যক্ত করেছেন এই হেরিটেজ ঘোষণায়। এ বার রাস্তা ফেরতের আবেদনের মধ্যে দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী আদৌ কতটা আন্তরিক শান্তিনিকেতনের প্রতি, তা বেআব্রু করারই কৌশল নিয়েছেন উপাচার্য। রাস্তা ফেরত দিলে বিশ্বভারতীরই ভাল। না দিলে মুখ্যমন্ত্রীকে দোষারোপে সুবিধা হবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement