Visva Bharati University

Visva Bharati University: রবীন্দ্রভবন বন্ধ ২৫ মাস, বিপুল আর্থিক ক্ষয়ক্ষতি

ওই আধিকারিক বলেন, “কেন্দ্র এখন সমস্ত বিধিনিষেধ তুলে নেওয়ায় সংগ্রহশালা খোলার একটা সম্ভাবনা তৈরি হতে পারে। যদি এ সপ্তাহে কোনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়, তাহলে দর্শনার্থীদের প্রবেশের উপযোগী করে তুলে এ মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহের মধ্যে রবীন্দ্র ভবন সাধারণের জন্য উন্মুক্ত হতে পারে।”

Advertisement

সৌরভ চক্রবর্তী

শান্তিনিকেতন শেষ আপডেট: ০৪ এপ্রিল ২০২২ ০৬:৪৪
Share:

ফাইল চিত্র।

প্রকোপ কমেছে কোভিডের। তাই কোভিড বিধিও শিথিল হয়েছে দেশ জুড়ে। কিন্তু কোভিড পর্বের শুরু থেকে বন্ধ হয়ে এখনও খোলেনি বিশ্বভারতীর রবীন্দ্রভবন সংগ্রহশালা। ২৫ মাস ধরে সংগ্রহশালা বন্ধ হওয়ায় এক দিকে যেমন প্রচুর পর্যটক প্রতিদিন হতাশ হয়ে ফিরে যাচ্ছেন, তেমনই বিপুল আর্থিক ক্ষতিও হচ্ছে বিশ্বভারতীর। বিশ্বভারতীর একাধিক আধিকারিক জানান, সংগ্রহশালা খোলা নিয়ে কোনও প্রাথমিক আলোচনাও হয়নি। তবে উপাচার্য ছুটি থেকে ফিরলে আলোচনা হতে পারে আশা প্রকাশ করেছেন তাঁরা। যদিও উপাচার্য কবে ফিরবেন, তা নিয়েও কোনও ধারণা নেই তাঁদের।

Advertisement

বিশ্বভারতীতে পর্যটকদের আকর্ষণের কেন্দ্রগুলির মধ্যে অন্যতম প্রধান রবীন্দ্রভবন। এখানে রবীন্দ্রনাথের পাঁচটি বাড়ি ছাড়াও বিচিত্রা বাড়ির দু’টি তলায় রয়েছে সংগ্রহশালা। সেখানে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রাপ্ত নোবেলের প্রতিকৃতি, পৃথিবীর নানা দেশ থেকে পাওয়া বিভিন্ন স্মারক এবং তাঁর ব্যবহৃত অন্য নানা সামগ্রী রাখা রয়েছে। বন্ধ হওয়ার আগেই রবীন্দ্র ভবন সূত্রে পাওয়া তথ্যে জানা গিয়েছিল, সারা বছরই রবীন্দ্রভবনে আগত পর্যটকদের মাথা পিছু টিকিটের অর্থ ও রবীন্দ্রভবনের পুস্তক বিপণীর বই বিক্রির অর্থ মিলিয়ে দৈনিক মোটা অঙ্কের টাকা জমা হয় বিশ্বভারতীর খাতে। গত ২৫ মাস ধরে সেই আয় সম্পূর্ণ বন্ধ।

রবীন্দ্র ভবন সূত্রে জানা গিয়েছে, বিশ্বভারতীতে সারা বছরই পর্যটকদের আনাগোনা লেগে থাকলেও, দুর্গাপুজোর কিছুদিন আগে থেকে বসন্ত উৎসবের কিছুদিন পর পর্যন্ত পর্যটকের সংখ্যা তুলনায় অনেক বেশি থাকত। এই সময়ে সোমবার থেকে শুক্রবার কমবেশি দৈনিক গড়ে আড়াই থেকে তিন হাজার দর্শক আসতেন। শনি এবং রবিবার সংখ্যাটা পাঁচ হাজার ছুঁয়ে যেত। রবীন্দ্র ভবনের প্রবেশ মূল্য বিদেশিদের জন্য ৩০০ টাকা, সাধারণ ভারতীয় নাগরিকদের জন্য ৫০ টাকা, ছাত্রদের জন্য ১০ টাকা। দৈনন্দিন টিকিট বিক্রির হিসাব অনুযায়ী, সোম থেকে শুক্র পর্যটকদের প্রবেশ মূল্য বাবদ আয়ের অঙ্কটা প্রায় ৭০ থেকে ৮০ হাজার টাকা। শনি ও রবি তা এক লক্ষ ছাড়িয়ে যায়। এ ছাড়াও সংগ্রহশালার ভিতর থাকা পুস্তক বিপণী থেকেও দৈনিক বই বিক্রি বাবদ আয়ের পরিমাণ প্রায় ১০ হাজার টাকা। অর্থাৎ এই ২৫ মাসে ক্ষতির অঙ্কটা ৭ কোটি ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে মত অনেকের। যেখানে বিশ্বভারতীর বিভিন্ন স্থাপত্য ও ভাস্কর্য সংস্কারের জন্য বারবার আর্থিক সমস্যার কথা জানিয়েছেন কর্তৃপক্ষ, সেখানে রবীন্দ্রভবন খোলা নিয়ে এমন অবহেলা কেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন অনেকেই।

Advertisement

এর আগে একবার ২০২১ সালের ডিসেম্বর মাসের দিকে সংগ্রহশালা খোলার পরিকল্পনা করা হয়েছিল বলে জানান এক আধিকারিক। সীমিত সংখ্যক দর্শনার্থীকে প্রবেশাধিকার দেওয়া হবে বলেও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। কিন্তু করোনা সংক্রমণের তৃতীয় ঢেউয়ের ধাক্কায় সেই পরিকল্পনা বাতিল হয়ে যায়। এর পরে ফেব্রুয়ারির প্রথম দিন থেকে কলকাতার জাতীয় সংগ্রহশালা খুলে গেলেও রবীন্দ্র ভবন সংগ্রহশালা খোলা নিয়ে আর কোনও আলোচনা হয়নি। ওই আধিকারিক বলেন, “কেন্দ্র এখন সমস্ত বিধিনিষেধ তুলে নেওয়ায় সংগ্রহশালা খোলার একটা সম্ভাবনা তৈরি হতে পারে। যদি এ সপ্তাহে কোনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়, তাহলে দর্শনার্থীদের প্রবেশের উপযোগী করে তুলে এ মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহের মধ্যে রবীন্দ্র ভবন সাধারণের জন্য উন্মুক্ত হতে পারে।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement