পদার্থবিদ্যা বিভাগের নথিপত্রের এমনই হাল করেছে উইপোকা। নিজস্ব চিত্র।
সৌরভ চক্রবর্তী
শান্তিনিকেতন
কাগজপত্রে উইপোকার হানা নিয়ে পদার্থবিদ্যা বিভাগের সঙ্গে বিরোধে জড়ালেন বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। পদার্থবিদ্যার তিন জন এবং রসায়নের এক অধ্যাপককে বিশ্বভারতী শো-কজও করেছে বলে সূত্রের খবর।
বুধবার বিশ্বভারতী একটি লিখিত বিবৃতিতে জানিয়েছে, শিক্ষাভবনের বর্তমান অধ্যক্ষ তথা পদার্থবিদ্যা বিভাগের নবনিযুক্ত বিভাগীয় প্রধান তারাপ্রসাদ চট্টোপাধ্যায় এ দিন কর্মসচিবকে চিঠি লিখে জানান, পদার্থবিদ্যার বিভাগীয় প্রধানের ঘরে সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ নথি ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে আছে এবং উইপোকার আক্রমণে বৈঠক বা ভর্তি সংক্রান্ত বহু নথি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। মঙ্গলবারই তারাপ্রসাদবাবু বিভাগীয় প্রধানের দায়িত্ব নেন। তাঁর এই চিঠি হাতে পাওয়ার পরে এ দিনই সকালে সহ-কর্মসচিব উৎপল হাজরা ও সেকশন অফিসার সন্দীপ কোলে ঘটনার সত্যতা যাচাই করতে বিভাগে যান। তাঁদের রিপোর্টের ভিত্তিতে এ দিন বিকেল চারটে নাগাদ বিভাগে পৌঁছন উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী, কর্মসচিব এবং কয়েক জন আধিকারিক।
বিশ্বভারতীর দাবি, উপস্থিত অধ্যাপকেরা উপাচার্যের বিরুদ্ধে তীব্র ‘উষ্মা’ প্রকাশ করেন। কিন্তু, উইপোকার হানায় কাগজ নষ্ট সত্যিই হয়েছে দেখে বিভাগীয় প্রধানের ঘর এবং একটি স্টোর রুম সিল করে দেওয়া হয়। কার বা কাদের গাফিলতিতে এমন ঘটনা ঘটল, তা তদন্ত করে দেখতে প্রাক্তন কর্মসচিব আশা মুখোপাধ্যায় ও উৎপল হাজরাকে নিয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। বিশ্বভারতী জানিয়েছে, আগামী দুই দিনের মধ্যে এই কমিটির রিপোর্টের ভিত্তিতে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
যদিও একটি লিখিত বয়ানে এ দিন পদার্থবিদ্যার ১৮ জন অধ্যাপক দাবি করেছেন, এ দিন তাঁদের পূর্বনির্ধারিত বৈঠকের সময়ে হঠাৎ উপস্থিত হয়ে তাঁদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন উপাচার্য। তঁদের আরও অভিযোগ, ক’দিন আগে ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপকদের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ‘আটকে রাখার’ ঘটনায় পদার্থবিদ্যার দুই অধ্যাপকের মুখ খোলার কারণেই বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের এ দিনের পদক্ষেপ। বিশ্বভারতী অবশ্য জানিয়েছে, সে দিন আটকে রাখার কোনও ঘটনাই ঘটেনি। উপাচার্য ওই অধ্যাপকদের সঙ্গে বৈঠক করছিলেন। ঘটনাচক্রে তার পরেই পদার্থবিদ্যার বিভাগীয় প্রধান মানস মাইতিকে ওই পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। তাঁরই স্থলাভিষিক্ত হন তারাপ্রসাদবাবু।
বিশ্বভারতীর এক আধিকারিক বলেন, ‘‘বিভাগীয় প্রধানের চিঠি পেয়েই পদক্ষেপ করা হয়েছে। এর পিছনে অন্য কারণ খোঁজা ঠিক নয়।’’