সোমবার বিএলআরও-এর দফতরে শুনানিতে অমর্ত্য সেনের জমি মিউটেশনের বিরুদ্ধে আপত্তি করেছে বিশ্বভারতী। গ্রাফিক: সনৎ সিংহ।
১.৩৮ একর নয়, বিশ্বভারতীর তরফে অমর্ত্য সেনের বাবা আশুতোষ সেনকে ১.২৫ একর জমি লিজ় দেওয়া হয়েছিল। ফলে ওই জমি নিজের নামে মিউটেশন করাতে পারেন না অমর্ত্য। সোমবার বোলপুরের ব্লক ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতর (বিএলআরও)-এ দফতরে জমি মিউটেশনের শুনানিতে অমর্ত্যের বিরুদ্ধে আপত্তি তুলে এই দাবি করল বিশ্বভারতী। এমনই জানিয়েছেন বিশ্বভারতীর তরফে শুনানিতে হাজির হওয়া আইনজীবী।
সোমবার বিএলআরও দফতরে শুনানি শুরু হলেও তা শেষ হয়নি। অমর্ত্যর আইনজীবী গোরাচাঁদ চক্রবর্তী দাবি করেন, বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে সময় চেয়ে নেওয়া হয়েছে। যদিও বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের তরফে আইনজীবী সুচরিতা বিশ্বাসের পাল্টা দাবি, ‘‘অমর্ত্য সেনের বাবা ১.২৫ একর জমির লিজ নিয়েছিলেন। সে ক্ষেত্রে তিনি এই জমির মিউটেশন করতে পারেন না। এ নিয়ে আমরা আপত্তি জানিয়েছি। পরে শুনানির তারিখ দেওয়া হবে।’’
বিতর্কের মধ্যেই নিজের নামে জমির ‘মিউটেশন’ করানোর জন্য বিএলআরও দফতরে সোমবার উপস্থিত ছিলেন অমর্ত্যের আইনজীবী। ছিলেন বিশ্বভারতীর আইনজীবী এবং বিএলআরও রেজিস্ট্রার সঞ্জয়কুমার দাস।
সূত্রের খবর, বিশ্বভারতীর কাছ থেকে অমর্ত্যর বাবা আশুতোষ সেনের জমি লিজ নেওয়ার নথিপত্রও প্রকাশ্যে এসেছে। ১৯৪৩ সালে ওই চুক্তিপত্র হয়েছিল। সেই নথি অনুযায়ী, ১.২৫ একর জমিই লিজ নেওয়া হয়েছিল বলেও সূত্রের খবর। সোমবার ওই নথিপত্র বিএলআরও-র কাছে জমা দেওয়ার কথা বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের।
বিশ্বভারতীর দাবি, অমর্ত্যর বাবা আশুতোষকে ’৪৩ সালে কখনই ১.৩৮ একর জমি লিজ় দেওয়া হয়নি। ১.২৫ একর জমি লিজ় দেওয়া হয়েছিল। তার ভিত্তিতে বিশ্বভারতী ১৩ ডেসিম্যাল জমি দখলের অভিযোগ করেছে অমর্ত্যের বিরুদ্ধে। সে জমি ফেরতের দাবি তুলেছে বিশ্বভারতী। ওই বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের আরও দাবি, ১৯৪৩ সালে বিশ্বভারতী এবং আশুতোষ সেনের মধ্যে স্বাক্ষরিত লিজ়ের নিবন্ধিত দলিল ও ২০০৬ সালে কর্মসমিতিতে পাশ হওয়া প্রস্তাব থেকে স্পষ্ট, আশুতোষ বা অমর্ত্যকে ১.৩৮ একর জমি তো দূরের কথা, বিশ্বভারতীর কোনও জমিরই মালিকানা দেওয়া হয়নি। শান্তিনিকেতনে ‘প্রতীচী’ নামে প্রাঙ্গণে অমর্ত্যর বাসভবনটিও বিশ্বভারতীর মালিকানাধীন জমিতে গড়ে উঠেছে।
এই জমি বিতর্কের মধ্যেই অমর্ত্যের বাড়ি গিয়ে কিছু সরকারি নথিপত্র তুলে দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সূত্রের দাবি, ১.২৫ একর নয়, আদতে ১.৩৮ একরই অমর্ত্যের পৈতৃক জমি হিসাবে সরকারি খাতায় নথিভুক্ত রয়েছে। জমি বিতর্কের মধ্যেই একটি সরকারি নথি প্রকাশ্যে এলে দেখা যায়, অমর্ত্যের বাবাকে বিশ্বভারতীর তরফে ১.৩৮ একর জমিই লিজ় দেওয়া হয়েছিল।