সাংবাদিক বৈঠকে জনসংযোগ আধিকারিক। নিজস্ব চিত্র
রাতের অন্ধকারে হস্টেলে ঢুকে হামলার ঘটনার রেশ মেলাতে না মেলাতেই সিআইএসএফ-বিতর্ক ফের মাথাচাড়া দিতে পারে বিশ্বভারতীতে। কারণ, ক্যাম্পাসে কেন্দ্রীয় বাহিনী চেয়ে আবেদন জানাতে চলেছেন বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ।
শুক্রবার এ কথা জানিয়েছেন বিশ্বভারতীর ভারপ্রাপ্ত জনসংযোগ আধিকারিক অনির্বাণ সরকার। বুধবার রাতে বিদ্যাভবন বয়েজ হস্টেলে লাঠি-উইকেট নিয়ে ছাত্রদের উপরে হামলার ঘটনায় নিরাপত্তায় ভুগছেন পড়ুয়ারা। সেই নিরাপত্তাহীনতা কাটাতে এবং বিশৃঙ্খলা এড়াতেই সিআইএসএফ মোতায়েনের ভাবনা বলে তাঁর দাবি। সিআইএসএফ নিয়ে আগেও বিক্ষোভে উত্তাল হয়েছে বিশ্বভারতী। নতুন করে সিআইএসএফ চাওয়ার সিদ্ধান্তে বিতর্ক বাড়ার আশঙ্কা।
হামলার ঘটনায় বিদ্যাভবন বয়েজ হস্টেলের ওয়ার্ডেনকে পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। তিন সদস্যের তদন্ত কমিটিও গঠন করেছেন কর্তৃপক্ষ। তদন্ত কমিটিতে রয়েছেন কলকাতা হাইকোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি জ্যোতির্ময় ভট্টাচার্য এবং বিশ্বভারতীর কর্মসমিতির দুই সদস্য দুলাল চন্দ্র ঘোষ ও মঞ্জুমোহন মুখোপাধ্যায়। শুক্রবার বিশ্বভারতীর একটি বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, গত ৮ জানুয়ারি সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের (সিএএ) পক্ষে বক্তৃতা অনুষ্ঠানে সাংসদ স্বপন দাশগুপ্তকে আটকে রাখার তদন্তও এই কমিটি করবে। অনির্বাণবাবু বলেন, ‘‘দুটি ঘটনার সামগ্রিক বিষয় খতিয়ে দেখে তদন্ত কমিটিকে এক মাসের মধ্যে উপাচার্যের কাছে রিপোর্ট জমা করতে বলা হয়েছে। রিপোর্ট দেওয়ার পরে কর্তৃপক্ষ সেই মতো ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।’’
এই কমিটি নিয়ে অবশ্য প্রশ্ন তুলেছে ছাত্রছাত্রী ঐক্য মঞ্চ। এ দিন এক প্রেস বিবৃতিতে তারা জানিয়েছে, ‘বিভিন্ন যথোপযুক্ত কারণে এই তদন্ত কমিটির নিরপেক্ষতা নিয়ে ছাত্রছাত্রীদের মনে প্রশ্নচিহ্ন রয়েছে।’ তাদের দাবি, সম্প্রতি সিএএ-র সমর্থনে এক হাজার জন তথাকথিত ‘বুদ্ধিজীবী’ চিঠি দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীকে। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন তদন্ত কমিটিতে থাকা দুলালচন্দ্রবাবু (প্রধানমন্ত্রী মনোনীত কর্মসমিতির সদস্য) ও মঞ্জুমোহনবাবুও। বিবৃতিতে প্রশ্ন তোলা হয়েছে, সিএএ-র সমর্থনকারী কেউ ওই আইনের পক্ষে আয়োজিত সেমিনারের বিরোধিতায় করা ছাত্রবিক্ষোভের নিরপেক্ষ তদন্ত কী ভাবে করবেন?
সাধারণ ছাত্রছাত্রীরা এ দিনও প্রতিবাদে মুখর হয়েছেন। হামলায় যে তিন জনের নাম মূল অভিযুক্ত হিসেবে উঠেছিল, তাঁদের মধ্যে অচিন্ত্য বাগদি ও সাবের আলি বক্সকে বৃহস্পতিবার পুলিশ ধরেছে। কিন্তু, অন্য অভিযুক্ত সুলভ কর্মকারকে কেন এখনও গ্রেফতার করা গেল না, সে প্রশ্ন তুলেছেন ছাত্রছাত্রী ঐক্য মঞ্চ। বিশ্বভারতীর ছাত্র মইনুল হোসেন, সোমনাথ সৌ, জয়দীপ সাহারা বলেন, ‘‘আমরা চাই অবিলম্বে সুলভ-সহ আরও যারা বুধবার রাতে হামলা চালিয়েছে, তাদের অবিলম্বে গ্রেফতার করা হোক।’’