Jhargram

‘চোর সন্দেহে দশম শ্রেণির ছাত্রকে ফাঁড়িতে নিয়ে গিয়ে মারধর পুলিশের’! ঝাড়গ্রামে শোরগোল, পথ অবরোধ

বাইক চোর ‘সন্দেহে’ স্কুলপড়ুয়া ছাত্রকে ফাঁড়িতে তুলে নিয়ে গিয়ে মারধরের অভিযোগ উঠেছে পুলিশের বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবার থেকেই তা নিয়ে উত্তেজনা তৈরি হয়েছিল ঝাড়গ্রামের মানিকপাড়া এলাকায়।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

ঝাড়গ্রাম শেষ আপডেট: ২৯ জুন ২০২৪ ২০:৫২
Share:

—নিজস্ব চিত্র।

বাইক চোর ‘সন্দেহে’ স্কুলপড়ুয়া ছাত্রকে ফাঁড়িতে তুলে নিয়ে গিয়ে মারধরের অভিযোগ উঠেছে পুলিশের বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবার থেকেই তা নিয়ে উত্তেজনা তৈরি হয়েছিল ঝাড়গ্রামের মানিকপাড়া এলাকায়। নাবালককে মারধরের সেই অভিযোগে শনিবার প্রায় চার ঘণ্টা মানিকপাড়া ফাঁড়ির অন্তর্গত রাশুয়া গ্রামে পথ অবরোধ করলেন গ্রামবাসীরা। তাতে শামিল হতে দেখা গেল আদিবাসী নেগাচারি কুড়মি সমাজের নেতৃত্বকে।

Advertisement

গত মঙ্গলবার রাশুয়া গ্রামে একটি বাইক চুরির ঘটনা ঘটে। সেই ঘটনার তদন্তে নামে পুলিশ। স্থানীয় সূত্রে খবর, বাইক চুরির অভিযোগে মানিকপাড়ার দশম শ্রেণির বছর ষোলোর এক ছাত্রকে বৃহস্পতিবার ফাঁড়িতে ডেকে পাঠায় পুলিশ। সেই মতো ওই নাবালক, তার কাকা ও এক সহপাঠী ফাঁড়িতে যায়। কিছু ক্ষণ পরেই সহপাঠী ও কাকাকে ছেড়ে দেয় পুলিশ। অভিযোগ, অভিযুক্ত নাবালককে আটকে রাখা হয়। পরিবারের দাবি, পরে ফাঁড়ি থেকে নাবালক যখন বাড়ি ফেরে, ঠিক মতো হাঁটতে পারছিল না সে। তাকে বেধড়ক মারধর করা হয়েছে। নাবালকের বাবা পেশায় কাঠের মিস্ত্রি। তিনি বলেন, ‘‘কেন থানায় ডেকে নিয়ে গিয়েছিল, জানি না। সেখানে ওর কাকুকে ছেড়ে দিলেও ছেলেকে আটকে রাখে। যখন বাড়ি ফিরেছে, তখন হাঁটতে পারছিল না। ওকে মারধর করেছে। ছেলের রক্তবমি হচ্ছিল।’’

পরিবার জানিয়েছে, শুক্রবার নাবালককে মানিকপাড়া গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। এর পর শনিবার তাকে নিয়ে যাওয়া হয় ঝাড়গ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। এরই সঙ্গে মানিকপাড়া ফাঁড়ির আইসিকে অপসারণ এবং তাঁর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে শনিবার সকাল ৮টা থেকে রাশুয়া গ্রামের রাস্তা অবরোধ করেন গ্রামবাসীরা। গ্রামবাসীদের প্রশ্ন, কী ভাবে পুলিশ এক জন নবালককে শুধুমাত্র সন্দেহের বশে ফাঁড়িতে নিয়ে গিয়ে অমানবিক ভাবে মারধর করল? পরে অবশ্য বেলা ১২টা নাগাদ পুলিশি তদন্তের আশ্বাসে অবরোধ ওঠে।

Advertisement

কিন্তু গ্রামে এখনও উত্তেজনা রয়েছে। আদিবাসী নেগাচারি কুড়মি সমাজের নেতা অনুপ মাহাতো বলেন, ‘‘নাবালক ছাত্রকে শুধুমাত্র সন্দেহের বশে ফাঁড়িতে নিয়ে গিয়ে থার্ড ডিগ্রি প্রয়োগ করেছে পুলিশ। পুলিশের মারে সে গুরুতর জখম হয়েছে। আমরা এই ঘটনার প্রতিবাদ করছি। আমরা আদালতের দ্বারস্থ হব। পুলিশ সুপারের কাছেও পিটিশন দেব। আমরা ওই আইসির অপসারণ আর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাইছি।’’ গ্রামবাসী রবীন্দ্রনাথ মাহাতো বলেন, ‘‘ফাঁড়ির আইসির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিলে আন্দোলন চলবে। জেলাশাসক, পুলিশ সুপার-সহ প্রয়োজনে শিশু সুরক্ষা দফতরে বিষয়টি জানানো হবে।’’

পুলিশের বিরুদ্ধে ওঠা মারধরের অভিযোগের প্রেক্ষিতে ঝাড়গ্রামের এক পুলিশের আধিকারিক বলেন, ‘‘মারধর হয়েছে কি না, সেটা সিসিটিভি ফুটেজ পরীক্ষা করলে বোঝা যাবে। গোটা ঘটনার তদন্ত করবেন ঝাড়গ্রামের সিনিয়র অফিসার। অভিযোগ সত্য হলে সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আবার অভিযোগ যদি মিথ্যে হয়, আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement