ছবি: সংগৃহীত।
দেড় বছর আগেই মেয়াদ শেষ। তবু পুনর্নিয়োগপত্র ছাড়াই পশ্চিমবঙ্গ স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্যের পদে কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন কাকলি রায় বসু। এই নিয়ে অভিযোগ ওঠায় স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য রাজেন্দ্র পাণ্ডে রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্তের মতামত চান। এজি তাঁকে অবিলম্বে সরিয়ে দিতে বলেন। তাঁকে সরিয়েও দেওয়া হয়। কিন্তু ‘রহস্যজনক’ কারণে এজি তাঁর ‘মতামত’ প্রত্যাহার করে নেন। স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয় জানিয়ে দেয়, পুনর্নিয়োগের আদেশনামা না-থাকলেও কাকলিদেবী সহ-উপাচার্য থাকবেন। কারণ নবান্ন এমনটাই চায়।
এই নাটক ঘিরে বিতর্কে জড়িয়ে পড়েছে স্বাস্থ্য দফতর। মুখ্যমন্ত্রী তথা স্বাস্থ্যমন্ত্রীর অনুমোদনক্রমে কোনও বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য নিয়োগ করেন রাজ্যপাল। স্বাস্থ্য ভবনের খবর, তিন বছরের মেয়াদে ২০১৬ সালের ১৬ মার্চ কাকলিদেবীকে সহ-উপাচার্য করা হয়েছিল। ২০১৯-এর ১৫ মার্চ সেই মেয়াদ শেষ হওয়া সত্ত্বেও দেড় বছর ধরে তাঁর ওই পদ আঁকড়ে থাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনের পরিপন্থী বলে উল্লেখ করে সম্প্রতি কিছু অভিযোগ জমা পড়ে। সহ-উপাচার্যের পদে কাকলিদেবীর পুনর্নিয়োগ চেয়ে রাজ্যপালের কাছে ফাইল পাঠায় সরকার। রাজভবনও প্রশ্ন তোলে, পুনর্নিয়োগপত্র ছাড়াই সহ-উপাচার্য কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন কী ভাবে?
স্বাস্থ্য ভবন জানাচ্ছে, উপাচার্য এই বিষয়ে মতামত চাইলে বৃহস্পতিবার এজি জানান, আইন অনুযায়ী কাকলিদেবী ওই পদে থাকতে পারেন না। অবিলম্বে তাঁকে সরিয়ে নতুন ভাবে পদ পূরণ করা হোক। বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার সে-দিনই কাকলিদেবীকে অব্যাহতি দেন। কিন্তু এজি রাত ৯টা নাগাদ রাজ্যের স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণ নিগমকে ই-মেল করে জানান, সহ-উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে সকালে দেওয়া ‘মতামত’ তিনি প্রত্যাহার করে নিচ্ছেন। কারণ, মতামত নেওয়ার সময় তাঁকে পুরো বিষয় জানানো হয়নি। স্বাস্থ্য দফতর যে ওই পদে নতুন করে নিয়োগ বা পুনর্নিয়োগের প্রস্তাব করেছে, তা তিনি জানতেন না। স্বাস্থ্যসচিব এজি-র সেই মেল উপাচার্যের কাছে পাঠিয়ে জানান, ‘যেমন আলোচনা হয়েছে, তেমন ব্যবস্থা করুন।’ রেজিস্ট্রার মাঝরাতে ফের একটি মেল-বার্তায় জানান, সহ-উপাচার্যকে অব্যাহতি দেওয়ার নির্দেশিকা বাতিল করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: পরিবেশ নিয়ে আপস নয়, রাজ্যকে জানাল আদালত
আরও পড়ুন: ছ’মাস বকেয়া দেয়নি সরকার, ক্ষুব্ধ ওষুধ সরবরাহকারীরা
স্বাস্থ্য ভবনের একাংশের বক্তব্য, এজি যে-ভাবে নিজের বক্তব্য থেকে সরে গিয়েছেন, তা অভূতপূর্ব। তা ছাড়া সহ-উপাচার্য পদে নয়া নিয়োগের প্রস্তাব সরকারের বিবেচনাধীন থাকলেও নিয়োগপত্র ছাড়া কেউ কি সেই পদ দখল করে থাকতে পারেন?
স্বাস্থ্য দফতরের শীর্ষ কর্তারা এই বিষয়ে নীরব। বক্তব্য জানতে উপাচার্যের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা হয়েছিল। কিন্তু তিনি ফোন ধরেননি, জবাব দেননি এসএমএসেরও।