সফর: বিশাখাপত্তনম-আরাকু রেলপথে চলে এই ট্রেন। এ ধরনের কাচমোড়া ট্রেন এ বার দেখা যাবে ডুয়ার্সেও। —নিজস্ব চিত্র।
এপ্রিলেই তার দৌড় শুরু হয়েছে বিশাখাপত্তনম-আরাকু রেলপথে। তার পরে মুম্বই-গোয়া শাখায়। কাশ্মীর উপত্যকাতেও তার সফর শুরু হল বলে। কাচমোড়া সেই ট্রেন এ বার আসছে ডুয়ার্সে। তার কামরায় ৩৬০ ডিগ্রি ঘুরতে পারা আসনে বসে সেখানকার জঙ্গল, চা-বাগান আর নদী-পাহাড়ের সৌন্দর্য উপভোগের সুযোগ মিলবে নতুন বছরে।
কেন্দ্রীয় পর্যটন মন্ত্রকের পূর্বাঞ্চলীয় অধিকর্তা জয়প্রকাশ সাউ বুধবার জানান, ইন্ডিয়ান রেলওয়ে কেটারিং অ্যান্ড ট্যুরিজম কর্পোরেশন বা আইআরসিটিসি তাঁদের কাছে প্রস্তাব জমা দিলেই পর্যটন মন্ত্রক এই বিষয়ে প্রক্রিয়া চালু করে দেবে। কাচমোড়া প্রতিটি কামরা তৈরির খরচ সাড়ে তিন কোটি টাকারও বেশি। তা দেবে পর্যটন মন্ত্রক। আইআরসিটিসি-র পূর্বাঞ্চলের গ্রুপ জেনারেল ম্যানেজার দেবাশিস চন্দ্র বলেন, ‘‘আমরা শীঘ্রই পর্যটন মন্ত্রকে সবিস্তার প্রস্তাব জমা দিচ্ছি।’’ সে-ক্ষেত্রে নিউ জলপাইগুড়ি থেকে ডুয়ার্স হয়ে গুয়াহাটি পর্যন্ত রেলপথে বিশেষ ট্রেন চলবে পরের বছরই, আশ্বাস জয়প্রকাশবাবুর।
এ দিন বণিকসভা ইন্ডিয়ান চেম্বার অব কমার্স আয়োজিত ‘ট্রাভেল ইন্ডিয়া ২০১৭’ শীর্ষক পর্যটন সম্মেলনের দ্বিতীয় তথা শেষ দিনে নিজের বক্তৃতায় দেবাশিসবাবু জানান, পশ্চিমবঙ্গ তথা পূর্বাঞ্চল ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলে পর্যটক টানতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে পারে কাচমোড়া ট্রেন।
বিশাখাপত্তনম-আরাকু রেলপথে কাচমোড়া কামরায় প্রতিটি আসনের ভাড়া ৬৬৫ টাকা। গোটা পশ্চিমবঙ্গ ও উত্তর-পূর্বের মধ্যে সব চেয়ে বেশি পর্যটক টানে দার্জিলিং। আগে বছরে গড়ে সাড়ে তিন লক্ষ ভারতীয় এবং ৫০ হাজার বিদেশি পর্যটকের সমাগম হতো সেখানে। কিন্তু অশান্তির জেরে এ বছর গ্রীষ্মের পর থেকে পর্যটক নেই। পাহাড় ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হলেও অধিকাংশ পর্যটক সেখানে যেতে সাহস পাচ্ছেন না।
দার্জিলিঙের বিকল্প গন্তব্য যে গড়ে তোলা উচিত, সেই বিষয়ে ভাবনাচিন্তা শুরু হয়েছে। এক দিকে গজলডোবায় বড় ধরনের পর্যটন হাব তৈরি হচ্ছে। সেই সঙ্গে বিকল্প পর্যটন কেন্দ্র তৈরির ক্ষেত্রে কাচমোড়া ট্রেনের কামরায় ডুয়ার্স চিরে গুয়াহাটি যাত্রা বড় ভূমিকা নিতে পারে বলে মনে করছেন পর্যটন শিল্পে যুক্ত অনেকে।
রেলের খবর, ভিস্টাডোম কোচ বা কাচমোড়া কামরা এখন তাদের হাতে নেই। পর্যটন মন্ত্রক সবুজ সঙ্কেত দিলে কামরা তৈরি করতে ছ’-আট মাস লাগবে। সে-ক্ষেত্রে ২০১৮-র শীতের ছুটিতেই ওই ট্রেন ডুয়ার্সের জঙ্গল, চা-বাগান চিরে ছুটতে পারে।