গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
আরও শক্তি বাড়িয়ে ভয়ঙ্কর রূপ নিয়েছে ঘূর্ণিঝড় বুলবুল। এ রাজ্যের সাগরদ্বীপ থেকে প্রায় ১২৫ কিলোমিটার দূরে রয়েছে অতি ভয়ঙ্কর এই ঘূর্ণিঝড়টি। কলকাতা থেকে এর দূরত্ব প্রায় ৩০০ কিলোমিটার।
গতি বাড়িয়ে বুলবুল দ্রুত এগিয়ে আসছে পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের দিকে। ফলে সকাল থেকে উপকূলবর্তী জেলাগুলোতে শুরু হয়েছে তুমুল বৃষ্টি, সঙ্গে বইছে ঝোড়ো হাওয়া। কলকাতাতেও ঝোড়ো হাওয়ার সঙ্গে চলছে বৃষ্টি।
আলিপুর আবহাওয়া দফতর সূত্রে খবর, শনিবার রাত ৮টা থেকে ১২টার মধ্যে এ রাজ্যের সাগর দ্বীপ ও বাংলাদেশের খেপুপাড়ার মধ্যবর্তী এলাকায় আছড়ে পড়বে বুলবুল। এই মুহূর্তে ঘূর্ণিঝড়টি বাংলাদেশের খেপুপাড়া থেকে প্রায় ৩০০ কিলোমিটার দূরে রয়েছে। ওড়িশার পারাদ্বীপ থেকে প্রায় ১১৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছে এটি। অন্য দিকে, দিঘা থেকে প্রায় ১২০ কিলোমিটার দূরে রয়েছে বুলবুল।
সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসাবে রাজ্যের উপকূলবর্তী জেলা থেকে বহু মানুষজনকে সরিয়ে আনা হয়েছে। ছবি: সংগৃহীত।
আবহাওয়া বিজ্ঞানীদের অনুমান, বুলবুল আছড়ে পড়ার সময় এর গতিবেগ থাকবে প্রায় ১২০ কিলোমিটারের আশেপাশে। কোথাও কোথাও এর গতিবেগ হতে পারে ১৩৫ কিলোমিটারের কাছাকাছি। এই ভয়ঙ্কর ঘূর্ণিঝড়ের মোকাবিলায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করছে প্রশাসনও।
আরও পড়ুন: ঘূর্ণিঝড়ের সাতকাহন
১০ বছর আগে আয়লার বিপর্যয়ের কথা মাথায় রেখে এ রাজ্যের উপকূলবর্তী জেলা দক্ষিণ ২৪ পরগনা, সুন্দরবন, বকখালি, ঝড়খালি, সাগর— এ সব এলাকা থেকে বহু মানুষজনকে সরিয়ে আনা হয়েছে। ইতিমধ্যেই ওই সব জায়গায় প্রায় ৬০ থেকে ৭০ কিলোমিটার বেগে হাওয়া বইছে। সঙ্গে চলছে প্রবল বৃষ্টি। অন্য দিকে, দিঘা, মন্দারমণি, শঙ্করপুর, তাজপুর, বকখালি— এই সব সমুদ্রসৈকতে প্রবল জলোচ্ছ্বাসের আশঙ্কা রয়েছে। ইতিমধ্যেই পূর্ব মেদিনীপুরের বিভিন্ন জায়গা থেকে বহু মানুষকে সুরক্ষিত জায়গায় সরিয়ে আনা হয়েছে। জেলার পাশাপাশি কলকাতাতেও শুরু হয়েছে ভারী বৃষ্টি। আবহাওয়া দফতর সূত্রে খবর, কলকাতা-সহ দুই ২৪ পরগনা, পূর্ব মেদিনীপুর, হাওড়া, হুগলি ও নদিয়ায় আগামী ৪৮ ঘণ্টা বৃষ্টি চলবে।
আরও পড়ুন: সব স্কুল বন্ধ, ঝড় সামলাতে সরানো হচ্ছে লোকজন
আরও পড়ুন: বাইরের খাবার নিয়ে যাওয়া বন্ধ ইকো পার্কে
দুই ২৪ পরগনা, পূর্ব মেদিনীপুর, কলকাতা, হাওড়া, হুগলি এবং নদিয়া— বুলবুলের জেরে এই সাতটি জেলার সমস্ত স্কুল-কলেজে ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। নদীপথে ফেরি চলাচল বন্ধ করা হয়েছে। রাজ্যে উপকূলে বিভিন্ন জায়গায় জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী মোতায়েন রয়েছে। কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটলে দ্রুত যাতে ব্যবস্থা নেওয়া যায়, তা নিয়ে সতর্ক থাকছে প্রশাসন।