water

Water Connection: জল সংযোগে রাজ্য কোথায়, তুঙ্গে তরজা

রাজ্যে পানীয় জলের সমস্যা নতুন নয়। সংযোগ কম থাকার পাশাপাশি পানীয় জলে আর্সেনিক, ফ্লুয়োরাইড, লৌহ এবং লবণের দূষণ-বিপদও রয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১০ মার্চ ২০২২ ০৫:২১
Share:

প্রতীকী চিত্র।

বাড়ি-বাড়ি পরিস্রুত পানীয় জল পৌঁছে দেওয়ার প্রকল্প ‘দ্রুত এগোচ্ছে’ বলে সম্প্রতি বারবারই দাবি করেছে রাজ্য। অথচ বুধবার জল-জীবন প্রকল্পের পর্যালোচনা বৈঠকের পরে কেন্দ্রের প্রকাশিত তথ্যে ফুটে উঠেছে কার্যত উল্টো ছবি!

Advertisement

ওই হিসাব অনুযায়ী, রাজ্যে গ্রামীণ এলাকায় মাত্র ২০% বাড়িতে ওই জলের সংযোগ আছে। এর মধ্যে ২০১৯ সালে প্রকল্প ঘোষণা থেকে এ পর্যন্ত ১৯% পরিবার সংযোগ পেয়েছে (১% আগেই ছিল)। অথচ বিহারে তা ৯১%। রাজ্যের অবশ্য দাবি, কাজের অগ্রগতির দিক থেকে এগিয়ে বাংলাই।

কেন্দ্রীয় জলসম্পদ মন্ত্রী গজেন্দ্র সিংহ শেখাওয়াত এ দিন সাংবাদিক বৈঠকে বলেন, “কেন্দ্র অর্থ বরাদ্দ করলেও, রাজ্য তা খরচ করতে পারছে না। আমি রাজ্যের প্রতিনিধিদের দ্রুত কাজ করতে বলেছি।” এই প্রকল্প নিয়ে কেন্দ্র-রাজ্যের রাজনৈতিক টানাপড়েনের প্রসঙ্গ সাংবাদিক বৈঠকে উঠেছে। মন্ত্রী বলেন, “পানীয় জল নিয়ে রাজনীতির কথা ভাবতেও পারি না। এই কাজে ঢিলেমির মানে রাজ্যের মানুষের প্রতি রাজ্য সরকারের দায়বদ্ধতার অভাব রয়েছে।”

Advertisement

প্রসঙ্গত কেন্দ্রের তথ্য অনুযায়ী, দেশে জল-জীবন প্রকল্পে সব থেকে পিছনে উত্তরপ্রদেশ। সেখানে প্রায় ১৩% পরিবারে সংযোগ পৌঁছেছে। সে ক্ষেত্রেও রাজ্য সরকারকে কাঠগড়ায় তোলা হচ্ছে কি না, সেই প্রশ্নের অবশ্য উত্তর মেলেনি।

রাজ্যের তরফে পাল্টা তথ্য দিয়ে জনস্বাস্থ্য কারিগরি মন্ত্রী পুলক রায় বলেন, “গত বছর ১ এপ্রিল থেকে এ বছর ৮ মার্চ পর্যন্ত ২১ লক্ষ ৪০ হাজার ৪৮১টি বাড়িতে সংযোগ দেওয়া হয়েছে। সব রাজ্যের মধ্যে প্রথমে রয়েছে বাংলা। দ্বিতীয় কর্নাটক, তবে এ রাজ্যের সঙ্গে তাদের ব্যবধান প্রায় ৫ লক্ষ। এ তো কেন্দ্রেরই তথ্য! রাজ্য কাজ করছে না, বলা হয় কী ভাবে!”

এ দিন জল-জীবন প্রকল্পের নাম বদলের প্রসঙ্গও উঠেছে। রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী টুইট করে জানান, তিনি কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলে এই প্রকল্পের নাম বদলের বিষয়টি জানিয়েছেন। গজেন্দ্র বলেন, “কোনও রাজ্য যদি প্রকল্পের নাম বদল করে, তা হলে কেন্দ্র টাকা দেবে না। রাজ্যের প্রতিনিধিদের এ কথা স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।”

রাজ্যের প্রশাসনিক কর্তাদের পাল্টা বক্তব্য, এই প্রকল্পে কেন্দ্র-রাজ্যের অংশীদারি ৫০% করে। এ ছাড়া, প্রকল্প কার্যকর ও পরিচালনা করা, তার রক্ষণাবেক্ষণ ইত্যাদি রাজ্যের হাতে। সে দিক থেকে দেখলে রাজ্যের তরফে বরাদ্দ বেশি। অর্থাৎ, একে নিছক কেন্দ্রীয় প্রকল্পের নাম বদল হিসেবে দেখতে নারাজ তাঁরা।

রাজ্যে পানীয় জলের সমস্যা নতুন নয়। সংযোগ কম থাকার পাশাপাশি পানীয় জলে আর্সেনিক, ফ্লুয়োরাইড, লৌহ এবং লবণের দূষণ-বিপদও রয়েছে। সেই দিকগুলি তুলে গজেন্দ্রর কটাক্ষ, “পাঁচ বছর ধরে কেন্দ্র জাতীয় গ্রামীণ পানীয় জল প্রকল্পে টাকা দিয়েছে। কিন্তু রাজ্য কাজ করতে পারছে না।” পুলকের পাল্টা বক্তব্য, “জলের গুণগত মানের দিক থেকে দেশে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে এ রাজ্য।”

জল-জীবন প্রকল্পে এ দিন নতুন বরাদ্দের ঘোষণা করেছে কেন্দ্র। মন্ত্রী জানান, ২০২২-২৩ অর্থবর্ষের জন্য পশ্চিমবঙ্গ, বিহার, ওড়িশা, ঝাড়খণ্ড, ছত্তীসগঢ় এবং মিজোরামকে মোট ১৩,১০৫ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে পশ্চিমবঙ্গের জন্য ৫২১৮ কোটি। অনেক সময় অভিযোগ ওঠে, কেন্দ্র টাকা সময়ে দিচ্ছে না। গজেন্দ্রর জবাব, আগের বছরের বকেয়া টাকার হিসাব ধরে কাজ অনুযায়ী তিনটি কিস্তিতে বরাদ্দ দেওয়া হয়। প্রথম কিস্তির টাকার কাজ শেষ না করলে, দ্বিতীয় কিস্তি মিলবে না।

এর পাশাপাশি স্বচ্ছ ভারত অভিযানের গ্রামীণ পর্বও চালু করছে কেন্দ্র। গ্রামে বর্জ্য অপসারণ-সহ পরিবেশ রক্ষার জন্য এই প্রকল্প। তাতে উপরোক্ত রাজ্যগুলির জন্য মোট বরাদ্দ ১৩৪৪ কোটি টাকা। তার মধ্যে রাজ্যের ভাগে ৩৬১ কোটি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement