যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে দেখতে হাসপাতালে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। — নিজস্ব চিত্র।
অসুস্থ হয়ে চিকিৎসাধীন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ভাস্কর গুপ্ত। সকালেই তাঁকে ভর্তি করানো হয়েছে বাইপাসের ধারের এক হাসপাতালে। সেই আবহে এ বার অসুস্থ উপাচার্যকে দেখতে হাসপাতালে গেলেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু।
বুধবার বিকেল ৪টে পর্যন্ত সময় দেওয়া হয়েছিল উপাচার্যকে। বেঁধে দেওয়া এই সময়সীমার মধ্যেই তাঁকে ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে কথা বলতে বলা হয়েছিল। অন্যথায় বৃহত্তর আন্দোলনের পথে হাঁটার হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন যাদবপুরের আন্দোলনরত পড়ুয়ারা। তার মাঝেই বুধবার সকালে অসুস্থ হয়ে পড়েন খোদ উপাচার্য! পরিবারের তরফে তড়িঘড়ি তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। বুধবার বিকেলে সেখানেই তাঁকে দেখতে গিয়েছেন ব্রাত্য। আগের ঘটনার থেকে ‘শিক্ষা’ নিয়ে এ বার শিক্ষামন্ত্রীর চারপাশে ছিল কড়া নিরাপত্তার ঘেরাটোপ। তার মাঝেই গাড়ি করে হাসপাতালে ঢুকতে দেখা যায় তাঁকে।
উপাচার্যের পরিবারের তরফে জানানো হয়েছে, শনিবারের পর থেকেই অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন ভাস্কর। সকালে তাঁর রক্তচাপের মাত্রা অতিরিক্ত বেড়ে যায়। ওষুধে কোনও কাজ না হওয়ায় তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। এই মূহূর্তে ভাস্করের রক্তচাপ ১৭০-৯০ এর মধ্যে রয়েছে। মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণের আশঙ্কাও দেখছেন চিকিৎসকেরা। ভাস্করের চিকিৎসক অরিন্দম বিশ্বাসের কথায়, ‘‘ওঁর রক্তচাপ ওঠানামা করছে। ওষুধ দিয়েও তা নিয়ন্ত্রণে আনা যাচ্ছিল না। যে হেতু বছর কয়েক আগে এক বার ওঁর সেরিব্রাল অ্যাটাক হয়ে গিয়েছে, তাই আমরা দ্রুত তাঁকে ভর্তি করে নিয়েছি।’’
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ভাস্কর গুপ্ত। — ফাইল চিত্র।
অন্য দিকে, মঙ্গলবার রাত থেকেই বিশ্ববিদ্যালয়ের অরবিন্দ ভবনের সামনে অবস্থানে বসে রয়েছেন পড়ুয়ারা। বুধবার বিকেল ৪টে পর্যন্ত সময় দেওয়া হয়েছিল উপাচার্যকে। তবে বুধবারও বিশ্ববিদ্যালয়ে আসেননি উপাচার্য! বিশ্ববিদ্যালয়ে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির পরে শনিবার রাতে আহতদের দেখতে হাসপাতালে গিয়েছিলেন ভাস্কর। সেখানে তাঁকে পড়ুয়াদের বিক্ষোভের মুখে পড়তে হয়। উপাচার্যের পরনের পাঞ্জাবিও ছিঁড়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। সেই থেকেই অসুস্থ হয়ে পড়েছেন তিনি। মঙ্গলবার ভাস্কর বলেন, ‘‘এই মুহূর্তে আমার শারীরিক অবস্থা ভাল নয়। ডাক্তার আমাকে বিশ্রাম নিতে বলেছেন। তাই ডাক্তার পরামর্শ দিলেই আমি পুনরায় বিশ্ববিদ্যালয়ে যাব।’’
গত শনিবার যাদবপুরে রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুকে হেনস্থার অভিযোগ ওঠে। তাঁকে ঘিরে যখন বিক্ষোভ চলছে, সেই সময় মন্ত্রী আহত হন বলে অভিযোগ। জখম হন শিক্ষামন্ত্রীকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখানো দুই পড়ুয়াও। অভিযোগ, দুই পড়ুয়ার মধ্যে এক জনকে চাপা দিয়েছে মন্ত্রীর গাড়ি। অন্য জনের পায়ের উপর দিয়ে গাড়ির চাকা চলে গিয়েছে। সেই থেকেই উত্তাল যাদবপুর।