(বাঁ দিকে) মহুয়া মৈত্র। বিনোদ সোনকর (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।
তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্রের বিরুদ্ধে ‘টাকা ও উপহারের বিনিময়ে সংসদে প্রশ্ন তোলা’র অভিযোগ এনে লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লাকে চিঠি দিয়েছিলেন বিজেপি সাংসদ নিশিকান্ত দুবে। লোকসভার স্পিকারের কাছে মহুয়াকে নিলম্বিত (সাসপেন্ড) করারও দাবি জানিয়েছিলেন নিশিকান্ত। স্পিকার গোটা বিষয়টি লোকসভার এথিক্স কমিটির কাছে পাঠিয়েছেন। শুক্রবার তা নিয়ে মুখ খুললেন এথিক্স কমিটির প্রধান তথা বিজেপি সাংসদ বিনোদ সোনকর।
নিশিকান্তের অভিযোগ, মহুয়া তাঁর সংসদের আইডি ব্যবসায়ী দর্শন হীরানন্দানিকে দিয়ে দিয়েছিলেন। তা ব্যবহার করে হীরানন্দানি আদানিদের বিরুদ্ধে প্রশ্ন নথিভুক্ত করতেন। মহুয়া সেগুলিই তুলতেন সংসদে। জড়িয়ে দিতেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নামও। এই প্রসঙ্গে এথিক্স কমিটির প্রধান সোনকর বলেছেন, ‘‘সংদের লগিং আইডি সাংসদ বাদ দিয়ে অন্য কারও ব্যবহার করা গুরুতর অপরাধ। যে অভিযোগ উঠেছে, তা সংসদের ইতিহাসে নজিরবিহীন।’’
মহুয়াকে ঘিরে যে বিতর্ক দানা বেধেছে তা নয়া মাত্রা পায় বৃহস্পতিবার। সংবাদ সংস্থা পিটিআই দাবি করে, হীরানন্দানি ‘হলফনামা’য় স্বীকার করেছেন যে তিনি মহুয়াকে ব্যবহার করে লোকসভায় আদানি গোষ্ঠী সম্পর্কিত প্রশ্ন তুলিয়েছেন। মহুয়া শিল্পপতিকে সংসদের লগ-ইন আইডি দিয়েছিলেন বলে অভিযোগ তুলেছিলেন নিশিকান্ত। সেটাও স্বীকার করেছেন হীরানন্দানি। ওই হলফনামার সত্যাসত্য নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন মহুয়া। সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইনও। শুক্রবার সোনকর বলেন, ‘‘ব্যবসায়ীর (হীরানন্দানি) তরফে আমরা এখনও কোনও চিঠি পাইনি।’’
পাল্টা মহুয়া এক্স হ্যান্ডেলে লেখেন, ‘‘এথিক্স কমিটির প্রধান সংবাজমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেছেন। যা লোকসভার নিয়মের বাইরে। আমি তাঁকে বলতে চাই, কী করে হলফনামা ফাঁস হল তা তদন্ত করে দেখা উচিত।’’ সেই সঙ্গে কৃষ্ণনগরের সাংসদ আরও বলেন, ‘‘আমি আবারও বলছি, বিজেপির এখন একটাই উদ্দেশ্য, আমায় লোকসভা থেকে বাইরে বের করে দেওয়া, যাতে আমি আদানি নিয়ে কিছু বলতে না পারি।’’
মহুয়ার বিরুদ্ধে বিভিন্ন উপহার নেওয়ার যে অভিযোগ উঠেছে তাতেও মান্যতা দেওয়া হয়েছে হীরানন্দানির ‘হলফনামা’য়। বলা হয়েছে, মাঝেমাঝেই নানা আবদার করা হত। দাবি থাকত বিলাসবহুল সামগ্রী, দিল্লির সরকারি বাসভবন সংস্কার করিয়ে দেওয়ার। ছুটি কাটানো বা বেড়ানোর খরচের জন্যও দাবি করা হত।
এরই মধ্যে নিশিকান্ত দুবেকে সংসদের এথিক্স কমিটি ২৬ অক্টোবর হাজিরা দিতে বলেছে। যদিও মহুয়াকে তারা এখনও ডাকেনি। অন্য দিকে মহুয়া যে মানহানির মামলা দায়ের করেছেন, তার শুনানি আগামী ৩১ অক্টোবর।