বঙ্গ সংস্কৃতি মেলা ২০২১
বাতাসে হিমেল পরশ। সন্ধে বাড়লেই শরীর ছুঁয়ে যাচ্ছে ঠাণ্ডা হাওয়া। এমন মরসুমকে আরও জমাটি করে তুলতে হাজির হচ্ছে উত্তর ২৪ পরগনার উড়ান বঙ্গ সংস্কৃতি মেলা। মেলা প্রাঙ্গন ইছাপুর আনন্দমঠ বিদ্যাপীঠের মাঠ। ২০২১-এ দ্বিতীয় বছরে পা দিল এই মেলা। বঙ্গ সংস্কৃতির ঐতিহ্যের নানান রঙের রঙিন সম্ভার নিয়ে হাজির থাকবে মেলায়। মেলা চলবে ২২ ডিসেম্বর থেকে ২৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত।
বিগত দুই বছরে করোনা আবহে বদলে গিয়েছে সব কিছু। নানান বাধ্যবাধকতায় বসতে পারেনি মেলা। সেই সব কিছু ভুলিয়ে বাংলা ও বাঙালির সংস্কৃতির অপার ঐতিহ্য়ের ডালি নিয়ে ফের হাজির হয়েছে উড়ান। যে প্রাঙ্গনে মানুষের মধ্যে মিলে মিশে যাবে লোকসংস্কৃতি। নাচ, গান, থেকে শিল্প নিদর্শন, খাওয়া-দাওয়া — বর্ষশেষের আসরে মেলা প্রাঙ্গনে উড়ানের অপেক্ষায় দিন গুনছে বাঙালি।
শুধুমাত্র বর্ষশেষের আনন্দে মেতে ওঠা কিংবা লোকসংস্কৃতি চর্চাই নয়, এই মেলার অন্যতম লক্ষ্য হল বাংলাকৃষ্টির প্রতি নতুন প্রজন্মের আকর্ষণ তৈরি করা। এবং সেই সঙ্গে, ছোট ছোট অস্থায়ী, অপ্রতিষ্ঠানিক ছোট ব্যবসায়ীদের মরশুমি রোজগারের ব্যবস্থা তৈরি করে দেওয়া। মেলা মানেই ভিন্ন সংস্কৃতির, ভিন্ন বর্গের, ভিন্ন সত্ত্বার মানুষের মিলন, সংহতি। সেই সংহতিকে সামনে রেখেই নতুন প্রতিশ্রুতিবান শিল্পীদের পরিচিতি তৈরি করে দেওয়া ও তাঁদের পরিবেশনার জন্য নিঃশর্ত সুযোগ দেওয়াও এই মেলার উদ্দেশ্য। সর্বোপরি নির্মল আনন্দের এক অমল মঞ্চ তৈরি করে দেবে এই মেলা।
বিভিন্ন ধরনের বাংলার হস্তশিল্পের বৈচিত্রময় সম্ভার থাকছে এই মেলায়। অন্ততপক্ষে ৪০টি স্টলে পাওয়া যাবে দেশের বিভিন্ন জায়গার শাড়ি, পোশাক, চামড়া ও কাপড়ের উপরে কারুকাজ করা ব্যাগ, হাতে তৈরি গয়না, প্রসাধনী, সাজের রকমারি উপকরণ, ঘর সাজানোর শৌখিন দ্রব্যাদি সহ আরও কত কি!
মেলায় যাবেন আর ভুরিভোজ হবে না, তা কখনও হয়? আগতদের রসনাকে তৃপ্ত করার জন্য মেলায় থাকছে অতি লোভনীয় খাবারের দোকান। রসমালাই, রসগোল্লা থেকে জনাই এর মনোহরা, শান্তিপুরের নিখুতি, কৃষ্ণনগরের সরভাজা,সরপুরিয়া, শক্তিগড়ের ল্যাংচা, বর্ধমানের সীতাভোগ, মিহিদানা, চন্দননগরের জলভরা নবদ্বীপের দই — কী নেই! এ তো গেল মিষ্টির কথা। আরও থাকছে বিরিয়ানি, কাবাব, মোমো, চাট, ঘুঘনি, চা, কফি, বাদাম ভাজা.....। মেলা প্রাঙ্গনে থাকছে বিখ্যাত প্রকাশনার বুকস্টল, লিটিল ম্যাগাজিন। নাচ,গান, আবৃত্তি, কবি সম্মেলন, সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা,সেমিনার, ম্যাজিক শো — প্রতিদিন এই সব কিছু এক সঙ্গে মাতিয়ে তুলবে মেলা প্রাঙ্গন। নিয়মিত উপস্থিত থাকবেন চলচ্চিত্র ও দূরদর্শনের একঝাঁক শিল্পী।
সর্বোপরি বাংলা সংস্কৃতির সুর-তাল-ছন্দের বিরলতম আয়োজন এই "উড়ান বঙ্গসংস্কৃতি মেলা"। অন্যান্য বছরের থেকে আরও বেশি আনন্দ এক আকাশের নীচে মিলেমিশে যাবে বাংলা সংস্কৃতির রূপরেখা।