নিয়োগের সুপারিশ করেছে স্কুল সার্ভিস কমিশন (এসএসসি)। কিন্তু মামলার জেরে স্কুলশিক্ষক নিয়োগের প্রক্রিয়া আটকে থাকায় সোমবার কলকাতা হাইকোর্টে কার্যত ধর্নায় বসে পড়েন উচ্চ প্রাথমিকের কর্মশিক্ষা ও শারীরশিক্ষার শিক্ষকপদ প্রার্থীরা। বিচারপতি মৌসুমী ভট্টাচার্যের এজলাসের বাইরে জনা ষাটেক প্রার্থী ধর্নায় যোগ দেন। পরে হাইকোর্টের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা পুলিশকর্মীরা তাঁদের বুঝিয়েসুজিয়ে ধর্না চালিয়ে যাওয়া থেকে বিরত করেন।
ওই প্রার্থীদের আইনজীবী এক্রামুল বারি জানান, ২০১৮ সালে দেড় হাজারের বেশি প্রার্থীর মেধা-তালিকা প্রকাশ করা হয়। এসএসসি-র সুপারিশ মেনে সাতশোর বেশি প্রার্থীকে নিয়োগপত্র দেয় মধ্যশিক্ষা পর্ষদ। কিন্তু এর মধ্যে নিয়োগে স্বচ্ছতা নেই বলে অভিযোগ তুলে মেধা-তালিকায় নাম না-থাকা বেশ কিছু প্রার্থী চলতি বছরের জানুয়ারিতে হাইকোর্টে মামলা করেন। বিচারপতি শেখর ববি শরাফ নিয়োগ প্রক্রিয়ার উপরে সাত দিনের স্থগিতাদেশ জারি করেন। পরে মামলাটি যায় বিচারপতি মৌসুমী ভট্টাচার্যের এজলাসে। তিনি স্থগিতাদেশের মেয়াদ বাড়িয়ে দেন।
এক্রামুল জানান, যাঁদের চাকরি দিতে সুপারিশ করা হয়েছিল, তাঁদের বেশ কয়েক জন বিচারপতি ভট্টাচার্যের আদালতে নতুন একটি মামলা করে জানান, স্থগিতাদেশ থাকায় তাঁরা চাকরি পাচ্ছেন না। সেটি প্রত্যাহার করা হোক। বিচারপতি ভট্টাচার্য স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার না-করে জানান, তিনি মূল মামলাটি শুনবেন এবং যাঁদের নাম সুপারিশ করা হয়েছে, তাঁদেরও মূল মামলায় যুক্ত করতে হবে। বিচারপতি ভট্টাচার্য স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার না-করায় যাঁদের নিয়োগের সুপারিশ করা হয়েছে, সেই প্রার্থারা বিচারপতি সম্বুদ্ধ চক্রবর্তীর ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হন।
এ দিন বিচারপতি ভট্টাচার্যের আদালতে মূল মামলাটির শুনানি ছিল। বিচারপতি জানিয়ে দেন, যে-হেতু ডিভিশন বেঞ্চে আপিল মামলার নিষ্পত্তি হয়নি, তাই তিনি এ দিন মামলাটি শুনবেন না। সাত দিনের মধ্যে আপিল মামলার নিষ্পত্তি করিয়ে আনার জন্য আইনজীবী এক্রামুলকে নির্দেশ দেন বিচারপতি ভট্টাচার্য।
এ দিনই ডিভিশন বেঞ্চে আপিল মামলাটি ওঠে। কিন্তু বিচারপতি চক্রবর্তী ব্যক্তিগত কারণে মামলাটি শুনবেন না বলে জানিয়ে অন্য কোনও ডিভিশন বেঞ্চে তার শুনানির ব্যবস্থা করার জন্য সেটি প্রধান বিচারপতির কার্যালয়ে পাঠিয়ে দেন। নিয়োগের জন্য যাঁদের নাম সুপারিশ করা হয়েছে, তাঁরা ধৈর্য হারিয়ে ফেলেন। বেলা সাড়ে ১১টা নাগাদ তাঁরা বিচারপতি ভট্টাচার্যের এজলাসের সামনে ধর্নায় বসে পড়েন। পুলিশ জানায়, ওই প্রার্থীরা সেখানে শান্তিপূর্ণ ভাবেই বসে ছিলেন। প্রধান বিচারপতির কার্যালয় অন্য কোনও ডিভিশন বেঞ্চকে দিয়ে আপিল মামলাটির দ্রুত নিষ্পত্তি করিয়ে দেবে, এই আশ্বাস পেয়ে প্রার্থীরা মিনিট চল্লিশ পরে উঠে যান।