বাবুল সুপ্রিয়। —ফাইল চিত্র।
বিদেশে গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়লেন সঙ্গীতশিল্পী তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়। আর তাঁর এই অসুস্থতার জেরে আরও এক বার বিতর্ক শুরু হয়ে গেল যাদবপুর-কাণ্ড নিয়ে। মাথায় যন্ত্রণার জেরে ক্যালিফোর্নিয়ার হাসপাতালে নিয়ে যেতে হয়েছিল তাঁকে। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে আক্রান্ত হওয়ার পর থেকেই এই যন্ত্রণা শুরু হয়েছে বলে সোশ্যাল মিডিয়ায় জানিয়েছেন বাবুল। তা নিয়ে আবার পড়েছেন ট্রোলের মুখেও।
৫ অক্টোবর অর্থাৎ মহাসপ্তমীর সন্ধ্যায় লস অ্যাঞ্জেলেসে (ক্যালিফোর্নিয়া) অনুষ্ঠান ছিল বাবুলের। ১৩ অক্টোবর অর্থাৎ আগামী রবিবার আবার বাবুলের অনুষ্ঠান রয়েছে লন্ডনে। সেখানে হ্যারো মিউজিক ফেস্টিভ্যালে গান গাইবেন তিনি। কিন্তু এ সবের মাঝেই ঘটেছে বিপত্তি। লস অ্যাঞ্জেলেসের অনুষ্ঠান ভাল ভাবেই মিটে গিয়েছে। কিন্তু মাথায় যন্ত্রণার জেরে তাঁকে হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হয়েছে।
সোশ্যাল মিডিয়ায় বাবুল সুপ্রিয় নিজেই জানিয়েছেন তাঁর অসুস্থতার কথা। মাথার খুলির ভিতরে তিনি যন্ত্রণা অনুভব করছেন বলে জানিয়েছেন শিল্পী। বাঁ কানের উপরের দিক থেকে বাঁ চোখের মণির পিছন পর্যন্ত তীব্র যন্ত্রণা হচ্ছে বলে বাবুল জানিয়েছেন। তিনি লিখেছেন, ‘‘গত পাঁচ দিন ধরে অসহ্য যন্ত্রণা হচ্ছে।’’
বিক্ষোভের দিন যাদবপুরে বাবুল সুপ্রিয়। —ফাইল চিত্র।
আরও পড়ুন: ব্যাঙ্কিং ক্ষেত্রেও অশনি সঙ্কেত! লাফিয়ে বাড়ছে অনুৎপাদক সম্পদের পরিমাণ
সঙ্গীতশিল্পী তথা রাজনীতিক বাবুল সুপ্রিয়র মাথার ভিতরে এই যন্ত্রণা আমেরিকায় গিয়ে শুরু হয়নি বলে তাঁর দাবি। বাবুলের অভিযোগ, গত মাসে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে হেনস্থা এবং শারীরিক নিগ্রহের শিকার হওয়ার পর থেকেই মাথায় এই যন্ত্রণা শুরু হয়েছে তাঁর। তিনি লিখেছেন যে, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে তাঁর দিকে পাথর ছোড়া হয়েছিল, কালো পতাকার মোটা লাঠি দিয়ে তাঁকে আঘাত করা হয়েছিল এবং খুব জোরে ঘুসি মারা হয়েছিল। সেই আঘাত থেকেই মাথায় এই যন্ত্রণা শুরু হয়েছে বলে তিনি দাবি করেছেন।
সোশ্যাল মিডিয়ায় বাবুলের এই পোস্ট দেখে তাঁর শুভানুধ্যায়ী এবং সমর্থকরা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন এবং দ্রুত আরোগ্য কামনা করেছেন। কিন্তু উল্টো প্রতিক্রিয়াও দেখা গিয়েছে। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে কী এমন ঘটেছিল যে, তার জেরে মাথার খুলির ভিতরে যন্ত্রণা শুরু হয়ে গেল? প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে। চুল টানার জেরে মাথার খুলির ভিতরে যন্ত্রণা! চুলের চিকিৎসা করানো দরকার— কটাক্ষ কারও। কেউ আবার লিখেছেন— বাবুল সুপ্রিয় যে অসুস্থ, তা আগেই বোঝা গিয়েছিল, যখন সতীদাহ রদে বিদ্যাসাগরের অবদান ব্যাখ্যা করেছিলেন তিনি।
অসুস্থতা এতটাই বেড়েছে যে, বিদেশ সফরে থাকা অবস্থায় হাসতাপালে নিয়ে যেতে হয়েছে বাবুল সুপ্রিয়কে— এমন একটা বিষয় নিয়েও কটাক্ষ! বিস্ময় প্রকাশ করেছেন বাবুলের ঘনিষ্ঠরা। উল্টো দিক থেকে প্রশ্ন তোলা হচ্ছে— নিজের অসুস্থতাকে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘটনার সঙ্গে কেন জোড়ার চেষ্টা করলেন বাবুল? কেন মাথায় যন্ত্রণার দায় এসএফআই এবং নকশালদের উপরে চাপানোর চেষ্টা করলেন?
আরও পড়ুন: হালিশহরে দুষ্কৃতীরাজ! ছেলেকে না পেয়ে বাবাকে খুন করল আততায়ীরা
বাবুল নিজে অবশ্য এই সব কটাক্ষের জবাব দেওয়ার চেষ্টা করেননি। কিন্তু তিনি সরকারি খরচে আমেরিকায় চিকিৎসা করাতে গিয়েছেন বলে যাঁরা সোশ্যাল মিডিয়ায় লিখেছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে বাবুল মুখ খুলেছেন। নিজের পোস্টে বাবুল জানিয়েছেন, প্রথমত, তিনি চিকিৎসা করানোর জন্য আমেরিকায় যাননি, গিয়েছেন গানের অনুষ্ঠান করতে। দ্বিতীয়ত, তিনি সরকারি খরচে যাননি, নিজের খরচেই গিয়েছেন বলেও বাবুল জানিয়েছেন। তৃতীয়ত, আমেরিকায় গিয়ে তাঁর মাথার যন্ত্রণা খুবই বেড়েছে এবং আমেরিকায় তাঁর স্বাস্থ্য বিমা রয়েছে বলে স্ত্রী ও বন্ধুরা তাঁকে অবিলম্বে হাসপাতালে যাওয়ার পরামর্শ দেন বলেও বাবুল জানিয়েছেন।