প্রতীকী চিত্র।
ভিন্ জাতের এক যুবকের সঙ্গে সম্পর্কে রাখার ‘অপরাধে’ সাত বছর আগে সালিশি সভায় গণধর্ষিতা হতে হয়েছিল তাঁকে। বীরভূমের লাভপুরের সুবলপুরের সেই নির্যাতিতা আদিবাসী তরুণীর অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে। তিনি বিষ খেয়ে আত্মঘাতী হয়েছেন বলেই পুলিশের অনুমান। পুলিশ জানায়, আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগে এক যুবক ও তাঁর স্ত্রীকে আটক করা হয়েছে।
২০১৪ সালের জানুয়ারিতে ওই আদিবাসী তরুণী ও তাঁর সঙ্গীকে রাতভর গাছে বেঁধে মারধর করা হয়। পর দিন সালিশি বসিয়ে দু’জনকে জরিমানা করা হয়। অভিযোগ ছিল, জরিমানার টাকা দিতে না পারায় গ্রামের মাঝি-হাড়াম কয়েক জন যুবককে ওই মেয়েটিকে নিয়ে ‘ফূর্তি’ করার নিদান দেন। ওই রাতেই তরুণীকে গণধর্ষণ করা হয় বলে অভিযোগ। মোড়ল-সহ ১৩ জনের যাবজ্জীবন সাজা হয়।
ঘটনার পরে বেশ কিছু দিন হোমে ছিলেন ওই নির্যাতিতা। নিজের গ্রাম সুবলপুরে আর ফিরতে চাননি তিনি। পরে স্থানীয় টালিপাড়া গ্রামে তাঁকে পুনবার্সনের ব্যবস্থা করে দেয় প্রশাসন। সেখানেই মা, ভাই এবং ভাইয়ের স্ত্রীর সঙ্গে থাকতেন। তাঁর নিরাপত্তার জন্য ২৪ ঘণ্টা পুলিশ প্রহরাও ছিল।
পুলিশ সূত্রে জানা যাচ্ছে, সোমবার দুপুরে ফোন পেয়ে বাড়ি থেকে কিছুটা দূরে চন্দ্রচূড়তলায় এক স্থানীয় যুবক ও তাঁর স্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে যান ওই তরুণী। তাঁর নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা এক সিভিক ভলান্টিয়ার ও পুলিশ কর্মীকে ‘গোপন কথা আছে’ বলে দূরে সরে যেতে বলেন তিনি। ওই দম্পতির সঙ্গে বচসায় জড়িয়ে পড়েন নির্যাতিতা। বচসা চলাকালীন তিনি কোঁচর থেকে কীটনাশকের শিশি বার করে গলায় ঢালেন।
ওই পুলিশকর্মী এবং সিভিক ভলেন্টিয়ার তাঁকে লাভপুর গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি করান। সেখান থেকে বোলপুর মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকেরা জানান, তাঁর মৃত্যু হয়েছে। নির্যাতিতার বোন বলেন, ‘আমার দিদি মুনিস খাটতে যেত। সেই সূত্রে ওই যুবকের সঙ্গে আলাপ হয়। বিয়ের কথা গোপন করে দিদির সঙ্গে সে মেলামেশা করে। বিয়ের কথা জানাজানি হওয়ার পর থেকেই সে দিদিকে এড়িয়ে যেত।’’ তাঁর অভিযোগ, এ দিন ওই দম্পতিই ফোনে ডেকে তাঁর দিদিকে অপমান করেন। তাই দিদি আত্মহত্যা করেছেন।