প্রথম: ৬৯০। অন্বেষা পাইন, বিবেকানন্দ শিক্ষানিকেতন হাইস্কুল, বাঁকু়ড়া (উপরে), দ্বিতীয়: ৬৮৯ মোজাম্মেল হক (বাঁ-দিকে), বাঁকুড়া জেলা স্কুল, বাঁকু়ড়া এবং অনির্বাণ খাঁড়া (ডান দিকে), রামনগর নুটবিহারী পালচৌধুরী হাইস্কুল, হুগলি। তৃতীয়: ৬৮৮, দীপ্তেশ পাল (নীচে), রামপুরহাট জিতেন্দ্রলাল বিদ্যাভবন, বীরভূম।
টিভিটা রেজাল্টের দিন সকালেই বিগড়েছিল। শনিবার সকাল ৯টা নাগাদ যখন সারা রাজ্য টিভিতে বাঁকুড়ার অন্বেষা পাইনের নাম জানছে, সে নিজেই তা দেখতে পায়নি। খবরটা প্রথম আসে তার বাবার এক বন্ধুর ফোনে— স্কুলের পরীক্ষায় কখনও প্রথম না হলেও মাধ্যমিকের মেধা তালিকায় প্রথম নামটাই অন্বেষার।
অন্বেষা পাইন, মোজাম্মেল হক, অনির্বাণ খাঁড়া ও দীপ্তেশ পাল। মাধ্যমিকের মেধা তালিকায় এ বার প্রথম তিনটি স্থানে এই চার জন। নম্বরের ফারাক এক করে। মোজাম্মেল ও অনির্বাণ যুগ্ম ভাবে দ্বিতীয়। এই চার কৃতী পড়ুয়াই জেলার স্কুলে পড়েছে। আর এদের মধ্যে তিন জনেই চায় ডাক্তার হতে।
বাঁকু়ড়ার জুনবেদিয়ার অন্বেষা বাঁকুড়া বিবেকানন্দ শিক্ষানিকেতন হাইস্কুলের ছাত্রী। ৭০০-র মধ্যে পেয়েছে ৬৯০। প্রিয় বিষয়, পদার্থবিজ্ঞান। লক্ষ্য, ডাক্তার হওয়া। অন্বেষার বাবা বিশ্বনাথ পাইন একটি স্কুলের প্রধান শিক্ষক। মা তনুশ্রী পাইন গৃহবধূ। তাঁরা জানান, দশ জন গৃহশিক্ষক থাকলেও সব সময়ে বইয়ে মুখ গুঁজে থাকার মেয়ে নয় অন্বেষা। নাচ-গানের তালিম নিয়েছে নিয়মিত। বাঁধা ছিল, টিভিতে গানের অনুষ্ঠান দেখা। অন্বেষা বলে, ‘‘সময় বেঁধে পড়তে আমার ভাল লাগে না। যখন ইচ্ছে হয়, তখনই পড়তে বসি।’’
৬৮৯ পেয়ে দ্বিতীয় হয়েছে বাঁকুড়া জেলা স্কুলের ছাত্র, পাটপুরের মোজাম্মেল হক। তার বাবা হাজি আব্দুল মাবুদ অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক। মা জাহানারা বেগম গৃহবধূ। তার প্রিয় বিষয় জীবনবিজ্ঞান। ইচ্ছে ডাক্তার হওয়ার। সে বলে, “স্কুলে নিয়মিত গ্রুপ স্টাডি হতো। বাড়িতেও পড়তাম। তবে নিয়ম করে নয়। কিছু না বুঝলে স্কুলের শিক্ষকদের সাহায্য নিতাম।”
দ্বিতীয় স্থানে হুগলির তারকেশ্বরের প্রত্যন্ত গ্রাম জগজীবনপুরের অনির্বাণ খাঁড়াও। সে-ও চায় ডাক্তার হতে। তারকেশ্বরের রামনগর নুটবিহারী পালচৌধুরী উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্র অনির্বাণ গল্পের বই পড়তে ও গান শুনতে ভালবাসে। সে বলে, ‘‘পড়াশোনার ধরাবাঁধা সময় ছিল না। তবে পরীক্ষার এক মাস আগে থেকে গভীর রাত পর্যন্ত পড়েছি।’’
৬৮৮ পেয়ে মেধা তালিকায় তৃতীয় বীরভূমের রামপুরহাট জিতেন্দ্রলাল বিদ্যাভবনের ছাত্র দীপ্তেশ পাল। ইচ্ছে, ইন্ডিয়ান স্ট্যাটিস্টিক্যাল ইনস্টিটিউটে অঙ্ক নিয়ে পড়ার। ভালবাসা বলতে ফেলুদার গল্প আর বিরাট কোহালির খেলা। দীপ্তেশ বলে, ‘‘দিনে সাত-আট ঘণ্টার বেশি পড়িনি। তবে পাঠ্যবইগুলো খুঁটিয়ে পড়েছি।’’ মাধ্যমিকের আগে গানের রেওয়াজে ছেদ পড়েছিল। সেটাই ফের শুরু করতে চায় দীপ্তেশ।