Budget 2020

আয়ুষ্মানেই স্বাস্থ্য আটকে থাকলে কী হবে বাংলার

এ দিন বাজেটের অভিমুখ হিসেবে অর্থমন্ত্রী যে-তিনটি বিষয়ে জোর দেন, ‘অ্যাসপিরেশনাল ইন্ডিয়া’ তার অন্যতম।

Advertisement

সৌরভ দত্ত

কলকাতা শেষ আপডেট: ০২ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০১:২৮
Share:

ফাইল চিত্র।

বক্তৃতার গোড়ায় ভারত গড়ার প্রশ্নে স্বাস্থ্যের কথা বলে শনিবার কিছুটা আশা জাগিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সেটা আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্পেই সীমাবদ্ধ রইল বলে চিকিৎসক সমাজের একাংশের পর্যবেক্ষণ।

Advertisement

এ দিন বাজেটের অভিমুখ হিসেবে অর্থমন্ত্রী যে-তিনটি বিষয়ে জোর দেন, ‘অ্যাসপিরেশনাল ইন্ডিয়া’ তার অন্যতম। অর্থমন্ত্রীর বাজেট-বক্তৃতায় শিক্ষা ও কর্মসংস্থানের সুযোগের পাশাপাশি সেই ধারণার মধ্যে রয়েছে সুনিশ্চিত স্বাস্থ্য পরিষেবা। কিন্তু বাজেটে স্বাস্থ্যের বরাদ্দ (৬৪,৫১৬ কোটি থেকে বাড়িয়ে ৬৯,২৩৩ কোটি টাকা) শুনে সকলের জন্য পরিষেবা কী ভাবে সুনিশ্চিত হবে, সংশয় প্রকাশ করছেন অনেক চিকিৎসকই। প্রয়োজনের তুলনায় এ বারের বরাদ্দ যথেষ্ট নয় বলেই মনে করা হচ্ছে।

স্বাস্থ্য পরিষেবা সুনিশ্চিত করতে আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্পের সম্প্রসারণে জোর দেন অর্থমন্ত্রী। এখন ‘আয়ুষ্মান ভারত, প্রধানমন্ত্রী জন আরোগ্য যোজনা’র আওতায় আছে কুড়ি হাজার নথিভুক্ত হাসপাতাল। টিয়ার-২ এবং টিয়ার-৩ শহরে যে এই প্রকল্পের আওতায় আরও হাসপাতালের প্রয়োজন বলে মন্তব্য করে সরকারি ও বেসরকারি যৌথ উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন সীতারামন। প্রথম পর্বে যে-১১২টি জেলায় আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্পের আওতায় কোনও হাসপাতাল নেই, তাদের প্রাধান্য দেওয়া হবে বলে বাজেট-প্রস্তাবে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী। চিকিৎসার বিভিন্ন ধরনের যন্ত্রের উপরে কর থেকে যে-অর্থ আসবে, এই ধরনের হাসপাতালের পরিকাঠামো নির্মাণে তা খরচ করা হবে বলে জানানো হয়েছে বাজেট-প্রস্তাবে। সীতারামন জানান, সব জেলাতেই জন ঔষধি কেন্দ্র সম্প্রসারিত হবে।

Advertisement

আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্প চালু করেনি পশ্চিমবঙ্গ। ফলে বাজেটে প্রস্তাবিত সুযোগ-সুবিধা বঙ্গের স্বাস্থ্য পরিষেবায় কী ভাবে পাওয়া যাবে, সেই প্রশ্ন তুলেছেন চিকিৎসকদের একাংশ।

কার্ডিয়োথোরাসিক চিকিৎসক কুণাল সরকার বলেন, ‘‘আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্পের জন্য অধিকাংশ বেসরকারি হাসপাতাল ভর্তুকির ফাঁদে পড়ে গিয়েছে। প্রশাসনিক চাপে বেসরকারি হাসপাতালগুলি তা মেনে নিলেও দীর্ঘদিন এই ব্যবস্থা স্থায়ী হবে না। দেশের ৮৫ শতাংশ মানুষ বেসরকারি স্বাস্থ্য পরিষেবার উপরে নির্ভরশীল, এটা ভুললে চলবে না। নতুন পরিকাঠামো গড়ুন। কিন্তু সবার আগে বর্তমান স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে বাস্তবসম্মত করতে হবে।’’ ক্যানসার চিকিৎসক সুবীর গঙ্গোপাধ্যায় জানাচ্ছেন, যন্ত্রের দাম বাড়লে চিকিৎসার খরচও বাড়বে। তাঁর কথায়, ‘‘চিকিৎসার খরচ কমানো লক্ষ্য হওয়া উচিত। তার জন্য রোগ প্রতিরোধ কর্মসূচিকে প্রাধান্য দিতে হবে।’’

স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দের সমালোচনা করতে গিয়ে তৃণমূল সাংসদ শান্তনু সেন জানান, আয়ুষ্মান ভারতে ৫০ কোটি মানুষকে পরিষেবা দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছে কেন্দ্র। তার জন্য গত বছর ওই প্রকল্পে যে-অর্থ বরাদ্দ করা হয়েছিল, সেটা পর্যাপ্ত ছিল না। এ বছরেও বরাদ্দের পরিমাণ
একই রয়েছে। ‘‘যে-সব হাসপাতাল রয়েছে, তার পরিকাঠামো উন্নয়ন না-করে পিপিপি মডেলে নতুন হাসপাতাল তো বেসরকারিকরণেরই নামান্তর! আয়ুষ্মান ভারত এ রাজ্যে না-থাকায় বঙ্গবাসী কিছু হারাননি। তাঁদের জন্য স্বাস্থ্যসাথী রয়েছে,’’ বলেন শান্তনুবাবু।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement