উদয়ন গুহের সেই পোস্টের একটি অংশ।
সিএএ সমর্থনে প্রচারে এসে দিনহাটার উন্নয়নকে গরু পাচার, নারী পাচার, তোলা আদায়ের সঙ্গে তুলনা করেন বিজেপির রাজ্য সাধারণ সম্পাদক রাজু বন্দ্যোপাধ্যায়। বিজেপি নেতার এই বক্তব্যের প্রতিবাদে সোশ্যাল মিডিয়ায় সরব হলেন দিনহাটার পুরপ্রধান তথা বিধায়ক উদয়ন গুহ। অনেকেই উদয়ন গুহের সেই বক্তব্যের সঙ্গে একমত হয়ে বিজেপি নেতাকে কটাক্ষ করেন।
উদয়ন তাঁর ফেসবুক পোস্টে জানান, এ রাজ্যে শমীক ভট্টাচার্যের মতো দু’-একজনকে বাদ দিয়ে বাকি কোনও বিজেপি নেতার সাধারণ বুদ্ধি বা রাজনৈতিক পরিপক্বতার ব্যাপারে রাজ্যের মানুষের যথেষ্ট সন্দেহ আছে। রাজু বন্দ্যোপাধ্যায়কে কেউ ধর্তব্যের মধ্যে আনেন না।
তিনি উল্লেখ করেন, গরু পাচার শুধু দিনহাটায় কেন, ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের প্রতিটি জায়গার সমস্যা। কাঁটাতারের বেড়া, ইঞ্চিতে ইঞ্চিতে সীমান্তরক্ষীদের টহল, প্রতি পদে পদে সাধারণ মানুষের বিএসএফের হাতে হেনস্থার পরেও কাদের মদতে পাচারকারীরা কাঁটাতারের বেড়া টপকে বা যেখানে নদী দু’দেশের সীমানা ভাগ করেছে সেই নদী পার করে গরু পাচার করে তা নিয়েও তিনি প্রশ্ন তোলেন।
বিজেপি নেতার উদ্দেশে তিনি লেখেন, ‘‘রাজু বন্দ্যোপাধ্যায়ের হয়তো জানা নেই অথবা মনে নেই সীমান্তরক্ষী বাহিনী কেন্দ্রীয় সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। আর এই দফতরের ভারপ্রাপ্ত মন্ত্রী হলেন অমিত শাহ।’’
বিধায়ক তাঁর ফেসবুক ওয়ালে লিখেছেন, ‘‘রাজু বন্দ্যোপাধ্যায়ের চেয়ে আমি দিনহাটাকে একটু বেশি চিনি বা জানি।’’ বিজেপি নেতার বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে তিনি উল্লেখ করেন, দিনহাটা অনেক মেয়ে হয়তো ভালবেসে, বিশ্বাস করে তাঁর প্রিয়জনের হাত ধরে ঘর ছেড়েছে। কোনও কোনও ক্ষেত্রে কাউকে হয়তো বা ঠকতেও হয়েছে। কিন্তু নারী পাচারের জন্য কুখ্যাত এই কথাগুলি বলে তিনি শুধু উদয়ন গুহ বা তৃণমূল দলকেই নয়, দিনহাটার সাধারণ মানুষকেও চরম অপমান করেন।
উদয়ন জানান, আসলে যখন কোনও রাজনৈতিক বক্তব্য থাকে না তখন কিছু মানুষের পাগলের প্রলাপই হয় একমাত্র অবলম্বন। দিনহাটার মানুষ কতটা রাজনৈতিক সচেতন তা সকলে না জানলেও এই রাজনৈতিক সচেতনতাকে শ্রদ্ধা করেন তিনি। বিজেপি নেতার পাগলের প্রলাপের জবাব সঠিক সময়ে দেবেন দিনহাটার মানুষ।
বিজেপির রাজ্য সাধারণ সম্পাদক রাজু বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘দিনহাটার মানুষ সে দিনই অপমানিত হয়েছেন যে দিন কমল গুহের ছেলে ফরওয়ার্ড ব্লক ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। আর আমি যা বলেছি তা ওই এলাকার মানুষের কাছে জেনেই বলেছি।’’
বিজেপির জেলা সম্পাদক সুদেব কর্মকার বলেন, ‘‘তৃণমূলের ওই নেতার পায়ের তলা থেকে মাটি সরে গিয়েছে। তাই সত্যি কথা তিনি আর মেনে নিতে পারছেন না। পুরভোটেই সব পরিষ্কার হয়ে যাবে।’’