—প্রতীকী ছবি।
ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ডস ব্যুরোর (এনসিআরবি) রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০২২ সালে পশ্চিমবঙ্গে রাষ্ট্রদ্রোহ বিরোধী আইনে মামলা দায়ের হয়েছে ২১৬টি। আর বেআইনি কার্যকলাপ প্রতিরোধ আইনে (ইউএপিএ) দায়ের হওয়া মামলার সংখ্যা দু’টি।
অথচ ওই রিপোর্ট অনুযায়ীই, ইউএপিএ-তে সব থেকে বেশি মামলা হয়েছে মণিপুরে (১৬৭)। সেখানে বিজেপি-জোটের সরকার রয়েছে। তার পরেই রয়েছে বিজেপিশাসিত অসম (১৩৩)। এর পরে রয়েছে আর এক বিজেপিশাসিত রাজ্য উত্তরপ্রদেশ (১০১)। ঝাড়খণ্ডে বেআইনি কার্যকলাপ প্রতিরোধ আইনে মামলা হয়েছে ৭১টি। গুজরাত, হিমাচল প্রদেশ, মিজ়োরাম, রাজস্থান, সিকিম, তেলঙ্গানাতে অবশ্য ওই আইনে কোনও মামলা রুজু হয়নি।
সব চেয়ে বেশি রাষ্ট্রবিরোধী কাজকর্মের অভিযোগে মামলাও হয়েছে যোগী আদিত্যনাথের রাজ্য উত্তরপ্রদেশে (২২০৭)। এর পরেই রয়েছে তামিলনাড়ু (৬১৮), কেরল (২৯৭) এবং অসম (২৯৩)। বিরোধী শিবিরের একাংশের অভিযোগ, ইউএপিএ এবং রাষ্ট্রবিরোধী আইনে বিরুদ্ধ স্বরকে স্তব্ধ করার অভিযোগ অনেক সময়ই উঠেছে শাসকদলের বিরুদ্ধে। দেখা যাচ্ছে, সেই প্রবণতা বেশি বিজেপিশাসিত রাজ্যগুলিতেই। এই অভিযোগ প্রত্যাশিত ভাবেই অস্বীকার করেছে বিজেপি। বরং কড়া হাতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় দায়বদ্ধতার কথা বলছে তারা।
রিপোর্ট অনুযায়ী, পশ্চিমবঙ্গে সাইবার অপরাধের সংখ্যাও কমছে। গত বছর সাইবার অপরাধের মামলা হয়েছে ৪০১টি। যা তার আগের বছরের তুলনায় ১১২টি কম। ২০২০ সালেও সেই সংখ্যা ছিল ৭১২। রিপোর্ট অনুযায়ী, গত বছর সব চেয়ে বেশি সাইবার অপরাধের মামলা দায়ের হয়েছে তেলঙ্গানায় (১৫২৯৭)। এর পরেই রয়েছে কর্নাটক (১২৫৫৬), উত্তরপ্রদেশ (১০১১৭)। এ রাজ্যের চেয়ে কম সাইবার অপরাধের মামলা দায়ের হয়েছে অসম বাদে উত্তর-পূর্ব ভারতের ছ’টি রাজ্যে। হিমাচল প্রদেশ এবং গোয়াতেও সাইবার অপরাধের সংখ্যা কম। যদিও রাজ্য পুলিশের একটি মহলের মতে, পশ্চিমবঙ্গে যে হারে সাইবার অপরাধ ঘটছে, তার সঙ্গে মিল নেই ওই তথ্যের।
পুলিশের নিচুতলার একাংশের অভিযোগ, সাইবার অপরাধের অভিযোগ এলে মামলা রুজু না করে শুধু জেনারেল ডায়েরি করা হয়। তদন্তে প্রয়োজন পড়লে তবে মামলা রুজু করা হয়। কারণ, সাইবার অপরাধের নির্দিষ্ট ধারায় মামলা করলে তার তদন্তভার দিতে হবে ইন্সপেক্টর পদমর্যাদার অফিসারের হাতে। কিন্তু থানায় এক জনের বেশি ইন্সপেক্টর থাকেন না। সূত্রের খবর, বর্তমানে রাজ্যে সাইবার ক্রাইম থানার সংখ্যা ৩৫টি। সেখানে মাসে গড়ে তিন থেকে চারটি মামলা দায়ের হচ্ছে। বিধাননগর কিংবা কলকাতা পুলিশের সাইবার অপরাধ থানায় সেই সংখ্যা অনেকটাই বেশি। অফিশিয়াল সিক্রেট আইনের আওতাতেও তিনটি মামলা রুজু করা হয়েছে ওই বছরে।