Ram Mandir Inauguration

অযোধ্যার রূপটানে এ রাজ্যের দু’হাজার কুইন্টাল গাঁদা

মোট ৩০টি ট্রাক-বোঝাই গাঁদা ফুল ইতিমধ্যেই পৌঁছে গিয়েছে অযোধ্যায়। জানা যাচ্ছে, যার মধ্যে ৬০০ কুইন্টাল গাঁদা ফুলে সাজানো হবে রামমন্দির। বাকি গাঁদায় সাজানো হবে অযোধ্যার পথঘাট, মন্দির।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২১ জানুয়ারি ২০২৪ ০৭:৩৯
Share:

— প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

অযোধ্যায় রামমন্দির উদ্বোধন উপলক্ষে সাজো সাজো রব গোটা দেশ জুড়ে। পিছিয়ে নেই এ রাজ্যও। বাংলার গাঁদা ফুল ও মিষ্টি যাচ্ছে অযোধ্যায়। অযোধ্যা নগরী এবং রামমন্দিরকে সাজিয়ে তুলতে পৌঁছে গিয়েছে রাজ্যের বিভিন্ন জেলা থেকে দু’হাজার কুইন্টাল গাঁদা ফুল। রয়েছে বাংলার শীতকালীন মিষ্টি পিঠে এবং পাটিসাপ্টাও। নয়া নামকরণে সেই রাম-পিঠে, রাম-পাটিসাপ্টা যাচ্ছে ‘রাম-রাজ্যে’।

Advertisement

মোট ৩০টি ট্রাক-বোঝাই গাঁদা ফুল ইতিমধ্যেই পৌঁছে গিয়েছে অযোধ্যায়। জানা যাচ্ছে, যার মধ্যে ৬০০ কুইন্টাল গাঁদা ফুলে সাজানো হবে রামমন্দির। বাকি গাঁদায় সাজানো হবে অযোধ্যার পথঘাট, মন্দির। এ রাজ্যের বেশির ভাগ গাঁদা ফুল গিয়েছে নদিয়ার রানাঘাট, ধুবুলিয়া, পূর্ব মেদিনীপুরের কোলাঘাট থেকে। ওই সব এলাকায় বিঘার পর বিঘা জুড়ে হয় গাঁদা ফুলের চাষ। গাঁদার এমন বিপুল বরাত পেয়ে বেজায় খুশি রানাঘাটের ফুল ব্যবসায়ী রমেন ঘোষ। তাঁর কথায়, ‘‘অযোধ্যার রামমন্দিরে আমার জমিতে চাষ করা গাঁদার জায়গা হবে ভেবে খুবই আনন্দ হচ্ছে।’’ সামনেই মেয়ের বিয়ে কোলাঘাটের ফুল ব্যবসায়ী শ্রীকান্ত মাইতির। শ্রীকান্ত বলছেন, ‘‘বিয়ের খরচ অনেক। অযোধ্যায় বিপুল পরিমাণ গাঁদা পাঠিয়ে যে টাকা পেয়েছি, তা দিয়ে বিয়ের খরচ অনেকটাই সামলানো যাবে।’’ হাওড়ার ‘মল্লিকঘাট ফুলবাজার ব্যবসায়ী সমিতি’ জানাচ্ছে, ওই তিন জায়গা থেকেই মূলত গাঁদা ফুল পাড়ি দিয়েছে অযোধ্যায়। সব মিলিয়ে রামমন্দির উদ্বোধন উপলক্ষে ফুরফুরে মেজাজে রয়েছেন রমেন, শ্রীকান্তদের মতো আরও অনেক ফুল ব্যবসায়ী।

বছরভর পশ্চিমবঙ্গ থেকে ফুলের কারবার করেন অযোধ্যার বাসিন্দা, ফুল ব্যবসায়ী মোহিত কুমার। শনিবার সেখান থেকে ফোনে মোহিত বলেন, ‘‘পশ্চিমবঙ্গের গাঁদা ফুল
অসাধারণ। বাংলার গাঁদাই শ্রেষ্ঠ। শীতের মরসুমে টানা এক সপ্তাহ সতেজ থাকতে পারে। তাই অযোধ্যার বেশির ভাগ গাঁদাফুল পশ্চিমবঙ্গ থেকে আনানো হয়েছে।’’

Advertisement

‘মল্লিকঘাট ফুলবাজার পরিচালন সমিতি’র ভাইস চেয়ারম্যান স্বপন বর্মণ বলেন, ‘‘সারা দেশের সিংহভাগ মন্দিরের ফুল যায় এ রাজ্য থেকে। গাঁদা ফুল একটু বেশি দিন তাজা থাকে বলে অযোধ্যায় এর চাহিদা বেশি। নদিয়া, পূর্ব মেদিনীপুরের প্রান্তিক চাষিদের থেকে সরাসরি বায়না করেছে বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা।’’ ‘মল্লিকঘাট ফুলবাজার হকার সংগ্রাম কমিটি’র সাধারণ সম্পাদক মানিক রায় বলেন, ‘‘রামমন্দির উদ্বোধন উপলক্ষে ট্রেনেও গাঁদা ফুলের বরাত গিয়েছে। শুক্রবার ট্রেনে করে ৫০ ঝুড়ি ওই ফুল পাড়ি দিয়েছে।’’

শীতের মরসুমে এ রাজ্যের পিঠে, পাটিসাপ্টার কদর দেশজোড়া। তাদের বিশেষ রূপ দিয়ে পাঠানো হচ্ছে অযোধ্যায়। শহরের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা দক্ষিণ কলকাতার যাদবপুরে এক মিষ্টান্ন প্রস্তুতকারক সংস্থার কাছে সপ্তাহখানেক আগে বায়না দিয়েছে। ওই সংস্থার কর্ণধার রাজদীপ পালের কথায়, ‘‘এক-একটি পাটিসাপ্টা দেড় ফুট দৈর্ঘের। গাজর দিয়ে তৈরি গেরুয়া রংয়ের ভেষজ পিঠেও তৈরি হয়েছে। থাকছে সোনার পিঠে, রুপোর পিঠে। সব মিলিয়ে একশো কেজির বায়না এসেছে। এদের নামকরণ করা হয়েছে রাম-পিঠে আর রাম-পাটিসাপ্টা।’’ জানা গিয়েছে, শঙ্খ, মালাই, ননী-সহ ২৫ রকম মিষ্টান্নের পদ সাজিয়ে বাংলা থেকে ভোগের ডালি যাচ্ছে রাম-রাজ্যে। শুক্রবারই ৫০ কেজি মিষ্টি বিমানে অযোধ্যায় পাড়ি দিয়েছে। বাকি মিষ্টি আজ, রবিবার বিমানে কলকাতা ছাড়বে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement