হুগলির আরামবাগ পঞ্চায়েত সমিতির তৃণমূল সভাপতি গুণধর খাঁড়া। নিজস্ব চিত্র
দুই মেয়ের চাকরিতে যে আচমকা খাঁড়া নামবে কে ভেবেছিল!
গুণধর খাঁড়া এতদিন দিব্যি ছিলেন তাঁর ধানের বীজের ব্যবসা ও রাজনীতি নিয়ে। হুগলির আরামবাগ পঞ্চায়েত সমিতির তৃণমূল সভাপতি গুণধর। ২০১৭ সালে তাঁর দুই মেয়ে প্রাথমিক স্কুলে চাকরি পান তাঁদের শ্বশুরবাড়ির এলাকাতেই। রাজ্যে যে ২৬৯ জন প্রাথমিক শিক্ষক-শিক্ষিকার নিয়োগ বাতিলের নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাই কোর্ট, সেই তালিকায় রয়েছেন গুণধরের দুই মেয়েও— শিবানী খাঁড়া এবং সীমা খাঁড়া পরামানিক।
গুণধর বলেন, ‘‘আমার দুই মেয়ে বা আমি এ নিয়ে এখনও সরকারি স্তর থেকে কোনও খবর পাইনি। হাতে কোনও কাগজ পাইনি। তাই এ নিয়ে বলার জায়গাও নেই। আগাম কিছু বলতে যাব কেন?’’
শিবানী কোনও মন্তব্য করতে অস্বীকার করেন। তাঁর স্কুলের প্রধান শিক্ষক অষ্টম সাঁতরা বলেন, “আমরা কোনও কাগজপত্র এখনও পাইনি। শিবানী ২০১৭ সালের ৬ ডিসেম্বর স্কুলে যোগ দেন। এতদিন একসঙ্গে কাজ করেছি। এখন বিষয়টা নিয়ে আমাদের খুব খারাপ লাগছে। কোনও অনিয়ম হয়ে থাকলে যাঁদের হাতে তা হয়েছে, তাঁদের সাজা দেওয়া হোক।’’
মঙ্গলবার রাজ্য প্রাথমিক শিক্ষা সংসদ সূত্রে চাকরি খোয়ানো প্রাথমিকের যে সব শিক্ষক-শিক্ষিকার নামের তালিকা সামনে এসেছে, তার মধ্যে রয়েছেন হুগলির বলাগড় ব্লক যুব তৃণমূল সভাপতি রাহুল দেব ঘোষও। তিনি জিরাটের একটি স্কুলে শিক্ষকতা করছিলেন। তাঁর বাড়ি ইনছুরায়।
চাকরি খোয়ানো নিয়ে মন্তব্য করতে চাননি রাহুলও। তিনি বলেন, ‘‘আমি এ বিষয়ে কোনও চিঠি পাইনি। তাই কোনও উত্তর দিতে পারব না।’’ হাওড়ার শ্যামপুর-২ পঞ্চায়েত সমিতির পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ রামপ্রসাদ মণ্ডলের ছেলে তনুময়ও চাকরি খুইয়েছেন। তিনি শ্যামপুর-২ ব্লকের একটি স্কুলে শিক্ষকতা করতেন। রামপ্রসাদের দাবি, ‘‘ছেলে লিখিত পরীক্ষা এবং ইন্টারভিউ দিয়ে চাকরি পেয়েছিল। শুনলাম, যাঁদের চাকরি চলে গিয়েছে, সেই তালিকায় ছেলের নাম আছে। কেন এটা হল, বুঝতে পারছি না। ছেলে কোনও অসদুপায় অবলম্বন করেনি।’’ তৃণমূল নেতাদের এই বিষয়টি সামনে আসায় অস্বস্তিতে দলের নেতারা। হুগলি জেলার তৃণমূল নেতা দিলীপ যাদব বলেন, “বিষয়টি বিচারাধীন । তাই মন্তব্য করব না।”
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।