ঝাড়গ্রামে পড়ে গুলির খোল। মঙ্গলবার রাতে। নিজস্ব চিত্র
তৃণমূল বনাম বিজেপি। রাজনৈতিক ক্ষমতা দখলের লড়াইয়ে মঙ্গলবার উত্তপ্ত হয়েছিল ঝাড়গ্রাম শহর। তৃণমূলের অভিযোগের ভিত্তিতে বুধবার দুই বিজেপি কর্মীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
পুলিশের পক্ষপাতমূলক ভূমিকা নিয়ে সরব হয়েছে গেরুয়া শিবির। বিজেপির ঝাড়গ্রাম জেলা সভাপতি সুখময় শতপথী বলেন, “তৃণমূলের সশস্ত্র বাহিনী প্রকাশ্য রাস্তায় বোমাবাজি করল। আমাদের দলীয় কার্যালয়ে হামলা চালাল। গুলি চালাল। অথচ আমাদের দলের কর্মীদের পুলিশ গ্রেফতার করল।” ঝাড়গ্রামের পুলিশ সুপার অমিতকুমার ভরত রাঠৌর বলেন, ‘‘একপক্ষ অভিযোগ করেছে। সেই ভিত্তিতে দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অন্যপক্ষ অভিযোগ করলে খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’ মঙ্গলবার রাতের ঘটনায় গেরুয়া শিবিরের দিকেই আঙুল তুলছে শাসক দল। তৃণমূলের ঝাড়গ্রাম জেলা সভাপতি অজিত মাইতির কথায়, “বিজেপি বাইরে থেকে অস্ত্র ও দুষ্কৃতী নিয়ে এসে গোলমাল পাকাচ্ছে। ওরাই আমাদের বাইক মিছিলে হামলা চালায়। আমরা প্রতিরোধ করলে বিজেপিকে খুঁজে পাওয়া যাবে না।”
চলতি নভেম্বরে ঝাড়গ্রাম পুরসভার ভোট। তার আগে রাজনীতির এই কাজিয়ায় অশনি সঙ্কেত দেখছেন অরণ্যশহরবাসী। এ দিন বিজেপি কার্যালয় লাগোয়া গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় মোতায়েন রয়েছে পুলিশ।
ঠিক কী হয়েছিল মঙ্গলবার রাতে? বিজেপির অভিযোগ, তাদের জেলা সদর কার্যালয়ে আচমকা হামলা চালায় তৃণমূলের বাইক বাহিনী। ওই হামলার নেতৃত্বে ছিলেন টিএমসিপি-র ঝাড়গ্রাম জেলা কার্যকরী সভাপতি আর্য ঘোষ এবং শহর তৃণমূলের নেতা নবু গোয়ালা। ওই সময় বিজেপির জেলা কার্যালয়ে ছিলেন দলের রাজ্য সাংগঠনিক সম্পাদক সুব্রত চট্টোপাধ্যায়। কয়েকদিন আগে বিজেপি কর্মীদের মারধরের অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। তারই প্রতিবাদে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় থানায় গিয়েছিলেন বিজেপি কর্মীরা। এরপরই শান্তি মিছিল বার করে তৃণমূল। অভিযোগ, রাত সাড়ে আটটা নাগাদ ওই বাইক মিছিল বিজেপির জেলা সদর কার্যালয়ের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় শুরু হয় গোলমাল। বিজেপির অভিযোগ, তৃণমূলের বাহিনী দলীয় কার্যালয় ঘিরে ইটপাথর ছুড়তে থাকে। শূন্যে গুলিও ছোড়া হয় বলে অভিযোগ।
অন্য দিকে, বিজেপি কর্মীদের হাতে তৃণমূলের বাইক বাহিনীর সদস্যেরা আক্রান্ত হন বলে অভিযোগ। তৃণমূল কর্মীদের সাতটি বাইক ভাঙচুর করা হয়। তিরে জখম হন এক তৃণমূল কর্মী। পরে ফের শাসকদলের লোকজন বিজেপির কার্যালয়ের অদূরে মিছিল শুরু করে। শুরু হয় বোমাবাজি। গভীর রাতে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।