সত্যজিৎ বিশ্বাস।
কৃষ্ণগঞ্জের তৃণমূল বিধায়ক সত্যজিৎ বিশ্বাস খুনের মামলায় আগামী কাল, সোমবার রানাঘাট আদালতে ফের একটি চার্জশিট পেশ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। পুলিশের একটি সূত্রের দাবি, তদন্তে যা পাওয়া গিয়েছে, তার ভিত্তিতে বিজেপি-র প্রথম সারির দুই নেতার নামে ওই খুনের ষড়যন্ত্রে যুক্ত থাকার অভিযোগ আনার যথেষ্ট সম্ভাবনা রয়েছে। তবে এক জন নেতার বিরুদ্ধে আরও তদন্ত চালানোর পথ খোলা রাখা হতে পারে বলেও ওই সূত্রের দাবি।
২০১৯ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি, সরস্বতী পুজোর আগের রাতে নদিয়ার হাঁসখালিতে নিজের বাড়ির কাছেই গুলিতে খুন হন সত্যজিৎ বিশ্বাস। তদন্তে নেমে সিআইডি পাঁচ জনকে গ্রেফতার করে। এফআইআরে ওই দুই নেতার নাম ‘সন্দেহভাজন’ হিসাবে ছিল। ধৃত তিন জনের বিরুদ্ধে পরে চার্জশিট পেশ করা হয়। প্রমাণাভাবে ধৃত বাকি দু’জনকে মামলা থেকে নিষ্কৃতি দেওয়ার আবেদন জানিয়েছিল সিআইডি। গত বছর ১৪ জুন ওই দু’জনকে নিষ্কৃতি দেওয়া হয়। আর এফআইআর-এ নাম থাকলেও চার্জশিটে দুই নেতার নাম ছিল না।
তবে দুই নেতার বিরুদ্ধে তদন্ত চলায় তাঁদের নাম বাদ যাওয়া আইনসঙ্গত হয়নি দাবি করে গত বছর ২০ অগস্ট আদালতে রিভিশন পিটিশন দাখিল করেছিলেন জনৈক মিলন সাহা। ১৬ ডিসেম্বর আদালত জানায়, ওই আবেদন যুক্তিসঙ্গত। দুই নেতার নাম চার্জশিটে না থাকা আইনসঙ্গত হয়নি। ফলে তাঁদের বিরুদ্ধে তদন্ত চলবে।
পুলিশের আর একটি সূত্রের দাবি, তাদের হাতে আসা ‘কল ডিটেল রেকর্ড’ অনুযায়ী খুনের দিন ওই দুই নেতার মধ্যে এক জনের সঙ্গে ফোনে একাধিক বার কথা হয়েছিল তিন ধৃতের অন্যতম নির্মল ঘোষের। নির্মল তখন দলের বগুলা মণ্ডল
সভাপতি ছিলেন। পরের দিন, ১০ ফেব্রুয়ারি মূল অভিযুক্ত অভিজিৎ পুন্ডারির সঙ্গেও ওই নেতার মোবাইলে যোগাযোগ হয়েছিল। ১১ ফেব্রুয়ারি ফের দু’বার তাঁর সঙ্গে অভিজিতের ফোনে কথা হয়। তদন্তকারীদের একটি সূত্রের দাবি, হাঁসখালি এলাকায় বিজেপির সংগঠন বাড়ানোর জন্য মতুয়া
সম্প্রদায়ের মুখ, সত্যজিৎকে খুনের ষড়যন্ত্র করা হয়েছিল। অভিজিৎ এবং তার সঙ্গী সুজিত মণ্ডল সে কারণে নির্মলের বাড়িতে গিয়ে তার সাহায্য চায়। নির্মলই তাদের আগ্নেয়াস্ত্র জোগাড় করে দেয়। এ বছর ৮, ৯, ১৫ ও ১৬ ফেব্রুয়ারি ওই নেতাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ভবানী ভবনে ডেকেছিল সিআইডি। একটি সূত্রের দাবি, তিনি কিছু প্রশ্নের উত্তর দিলেও অভিযুক্ত তিন জনের সঙ্গে পূর্ব যোগাযোগ বা অভিজিৎ পুন্ডারির সঙ্গে কথাবার্তার প্রসঙ্গ এড়িয়ে যান।