আবার একই নম্বর যমজ দুই ভাইয়ের

বীরভূমের মহম্মদবাজারের কাঁইজুলির যমজ দুই ভাই ঋত্বিক এবং সৌপ্তিক চক্রবর্তী। কাঁইজুলি হেমচন্দ্র হাইস্কুলের দুই ছাত্র মাধ্যমিকে যুগ্ম ভাবে স্কুলের শীর্ষে।

Advertisement

অর্ঘ্য ঘোষ

মহম্মদবাজার শেষ আপডেট: ২৮ মে ২০১৭ ০৪:০০
Share:

কৃতী: ঋত্বিক (বাঁ-দিকে) এবং সৌপ্তিক চক্রবর্তী (ডান দিকে) । —নিজস্ব চিত্র।

জন্ম-সময়ের ফারাক ৪০ মিনিট। কিন্তু জীবনের প্রথম বড় পরীক্ষায় দু’ভাইয়ের পাওয়া নম্বর একদম এক। ৬৪৭! একই নম্বর ইংরেজি (৯০), ইতিহাস (৮৭) এবং ভূগোলে (৯৭)।

Advertisement

ওরা বীরভূমের মহম্মদবাজারের কাঁইজুলির যমজ দুই ভাই ঋত্বিক এবং সৌপ্তিক চক্রবর্তী। কাঁইজুলি হেমচন্দ্র হাইস্কুলের দুই ছাত্র মাধ্যমিকে যুগ্ম ভাবে স্কুলের শীর্ষে।

স্কুলের কাছেই বাড়ি ঋত্বিকদের। তিন ভাই। দাদা শৌভিক কোচবিহারের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থায় কর্মরত। বাবা শান্তনু চক্রবর্তী ব্যবসায়ী। মা সান্ত্বনাদেবী কাঁথাস্টিচের কাজ করেন। বাবা-মা জানালেন, প্রথম শ্রেণি থেকে পালা করে দুই ভাই প্রথম বা দ্বিতীয় হয়ে এসেছে। কিন্তু টেস্ট পরীক্ষায় ৪০ মিনিটের বড় দাদা ঋত্বিকের থেকে চার নম্বর বেশি পায় সৌপ্তিক। পেয়েছিল ৬২৭।

Advertisement

খাওয়া-দাওয়া, শোওয়া, পড়াশোনা— সবই দু’জনের এক সঙ্গে। প্রিয় বিষয় অঙ্কই হোক বা প্রিয় খেলা ফুটবল—তাতেও মিল। ভবিষ্যতে দু’জনেই ডাক্তার হয়ে প্রত্যন্ত এলাকায় চিকিৎসা করতে চায়। ডাক্তারিতে ‘স্পেশ্যালাইজ’ করার ইচ্ছেও একই বিষয়ে। ঋত্বিক-শৌপ্তিক বলছে, ‘‘যখন ডাক্তার হব, তখনও একটাই চেম্বার থাকবে।’’

বাবা শান্তনুবাবু জানান, একই রকমের জামা-প্যান্ট কেনা হয় ওদের জন্য। রকমফের হলে ওরা তা ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে পরে। প্রধান শিক্ষক সুভাষ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘স্কুলেও ওরা হরি-হর আত্মা। ওরা এক নম্বর পাওয়ায় খুব খুশি হয়েছি।’’

পরীক্ষায় যমজদের একই নম্বর পাওয়া এ রাজ্যে নতুন নয়। ২০০৫-এ উত্তর ২৪ পরগনার গাইঘাটার রজত ও রাকেশ সরকার মাধ্যমিকে ৫৭৭ নম্বর পান। ২০১৩ সালে সিবিএসই-র দ্বাদশ শ্রেণির পরীক্ষায় একই গ্রেড পান সল্টলেকের বাসিন্দা দুই বোন— নন্দিতা ও নম্রতা বাগচী। দু’জনেই ‘এ+’। উদাহরণ রয়েছে তার আগেও। রাজ্যের প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী অসীম দাশগুপ্ত এবং তাঁর সহোদর ইন্ডিয়ান স্ট্যাটিস্টিক্যাল ইনস্টিটিউটের (আইএসআই) প্রাক্তন অধ্যাপক অতীশ দাশগুপ্ত স্কুল ফাইনালে একই নম্বর পেয়েছিলেন।

ফের যমজদের একই নম্বর পাওয়ার খবর শুনে আনন্দ লুকোননি অসীমবাবু। মাধ্যমিকের ওই নম্বরের সূত্রেই গাইঘাটার রজত-রাকেশকে পড়াশোনায় সাহায্য করেছিলেন তিনি। সে যোগাযোগ এখনও অটুট। শনিবার অসীমবাবু বলেন, ‘‘ঋত্বিক ও সৌপ্তিকের জন্য শুভকামনা রইল। ওরা এ ভাবেই এক সঙ্গে বড় হোক।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement