সাংবাদিক বৈঠকে মলয়, ব্রাত্য, ডেরেক
ত্রিপুরায় আইপ্যাকের ২৩ জন সমীক্ষককে আটকে রাখার বিরুদ্ধে সরব হয়ে আক্রমণের ঝাঁঝ আরও বাড়াচ্ছে তৃণমূল। মোদী-শাহ জমানায় গোটা দেশ জুড়ে যে ভাবে ‘স্বৈরতন্ত্র’ চলছে, বিজেপি শাসিত ত্রিপুরা তার ব্যতিক্রম নয়। পুরনো গুজরাত মডেলেই ত্রিপুরায় সরকার চালাচ্ছেন বিপ্লব দেব। আইপ্যাকের আটক হওয়া কর্মীরা ছাড়া পেতেই বৃহস্পতিবার আগরতলায় সাংবাদিক বৈঠক করে এ কথা বললেন ব্রাত্য বসু, ডেরেক ও’ব্রায়েনরা।
বৃহস্পতিবার সকালে আগরতলা পৌঁছেছেন তৃণমূলের রাজ্যসভার দলনেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন ও বারাসতের সাংসদ কাকলি ঘোষ দস্তিদার। তৃণমূলের নেতারা সাংবাদিক বৈঠকের প্রস্তুতি নেওয়ার সময়েও হানা দেয় পুলিশ। বৈঠকে কত জন উপস্থিত থাকবেন, কোভিডবিধি মেনে চলা হচ্ছে কি না ইত্যাদি বিষয় নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় ব্রাত্য, মলয় ঘটকদের। ক্ষুব্ধ ডেরেক বলেন, ‘‘আমরা কী করছি না-করছি, দেখার জন্য ১০০ জন পুলিশকর্মী পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। আমি রাজ্যসভার সাংসদ। আমায় জঙ্গি বলে মনে হয়?’’
ত্রিপুরায় বিরোধীদের কণ্ঠরোধ করা হচ্ছে বলে অভিযোগ তুলে মলয় বলেন, ‘‘এখানে সাধারণ মানুষের উপর যে ভাবে অত্যাচার হচ্ছে, তাতে এই সরকারেরও পতন হবে।’’ ত্রিপুরায় জুলুমবাজি চালাচ্ছে বিজেপি সরকার। যার জেরে সাধারণ মানুষের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। সেখানেও দিদিকে চেয়ে ‘খেলা হবে’ স্লোগান তোলা হচ্ছে, বললেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য। তাঁর কথায়, ‘‘ত্রিপুরার মানুষ আগে বাম দেখেছেন। এখনও রাম দেখছেন। এর পর কাম অর্থাৎ কাজ দেখতে চাইছেন। তৃণমূলকে ভয় পেতে শুরু করেছে বিপ্লব দেবের সরকার।’’
ডেরেক বলেন, ‘‘ত্রিপুরায় আইপ্যাক কর্মীদের আটক করার নির্দেশ দিল্লি থেকে অমিত শাহ দিয়েছিলেন। গুজরাত মডেলেই ত্রিপুরা শাসন করছে বিজেপি। গোটা দেশে একই পরিস্থিতি। সংসদে বিরোধী সাংসদদের কথা বলতে দেওয়া হচ্ছে না। বাংলায় নির্বাচনের আগে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ফোনে আড়ি পাতা হয়েছিল। পেগাসাস নিয়ে সংসদে আলোচনা চায় তৃণমূল, কিন্তু বিজেপি তাতে রাজি নয়। ফোন ট্যাপিং ইস্যুতে বিচারবিভাগীয় তদন্ত চায় তৃণমূল।’’
ত্রিপুরায় সমীক্ষার কাজে যাওয়া আইপ্যাকের কর্মীদের বিপ্লব দেবের সরকার আটকে রাখায় বিষয়টি ভাল চোখে দেখেননি তৃণমূল নেতৃত্ব। সমীক্ষকদের আটক হওয়ার খবর পেয়েই সে রাজ্যে ছুটে গিয়েছিলেন ব্রাত্য, মলয়, ঋতব্রতরা। বৃহস্পতিবার ডেরেকও এলেন। জানালেন, শুক্রবার সাড়ে ১২টা নাগাদ ত্রিপুরা পৌঁছচ্ছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও। ২০২৩ সালে ত্রিপুরার বিধানসভা নির্বাচনের জন্য এখন থেকেই ঝাঁপাতে চাইছে তৃণমূল। আর সেই কারণেই সে রাজ্যে দলের সাংগঠনিক সিদ্ধান্ত এবং দলীয় কর্মসূচি বিষয়ক তথ্য মানুষের কাছে তুলে ধরতে শুধু ত্রিপুরার জন্য একটি আলাদা টুইটার হ্যান্ডেল খোলা হয়েছে জোড়াফুল শিবিরের পক্ষ থেকে, বললেন ডেরেক।