ছবি সৌজন্য: দ্য টেলিগ্রাফইন্ডিয়া।
নন্দীগ্রামে বিধায়ক নেই তৃণমূলের। তাই সরকারি পরিষেবা ও পঞ্চায়েত প্রশাসনকে হাতিয়ার করেই নন্দীগ্রামের মানুষের কাছে পৌঁছনোর নীল নকশা তৈরি করেছে শাসকদল। ফলাফল প্রকাশের পর এক সপ্তাহ কেটে গিয়েছে। পূর্ব মেদিনীপুর জেলার ভোটের ফলাফল তথা নেতা-কর্মীদের কাজের পর্যালোচনা করে বেশ কিছু সিদ্ধান্ত কার্যকর করার পথে তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্ব। তার সঙ্গেই দলীয় বিধায়ক না থাকা সত্ত্বেও নন্দীগ্রামের মতো সংবেদনশীল আসনে কী ভাবে সরকারি পরিষেবা পৌঁছে দেওয়া যায়, সেই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। খবর, সোমবার মন্ত্রিসভার শপথগ্রহণের পরেই হবে দফতর বণ্টন। তার পরেই সংশ্লিষ্ট দফতর মারফত নন্দীগ্রামে পরিষেবা পৌঁছনোর কাজ শুরু হবে। এ ভাবে এক দিকে যেমন জনপরিষেবা দেওয়ার পথ সুগম হবে, তেমনই নন্দীগ্রামের বিজেপি বিধায়ককেও রাজনৈতিক ভাবে জবাব দেওয়া যাবে।
নন্দীগ্রামে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে লড়াই হয়েছিল বিজেপি-র শুভেন্দু অধিকারীর। নির্বাচন কমিশনের ঘোষিত ফলাফলে শুভেন্দু অল্প ভোটের ব্যবধানে জয়ী হলেও, তা মানতে নারাজ তৃণমূল নেতৃত্ব। বিষয়টি নিয়ে তাঁরা আদালতে যাওয়ার ঘোষণা করেছেন। কিন্তু তাতে নন্দীগ্রামের জমি ফিরে পেতে যে সরকারি পরিষেবাই একমাত্র হাতিয়ার, তা বুঝেছেন তৃণমূল নেতারা। তাই আগামী ৫ বছর বিজেপি বিধায়ক ছাড়াই সরকারি পরিষেবা নন্দীগ্রামের জনতার কাছে পৌঁছে দিতে বদ্ধপরিকর তৃণমূল। এ ক্ষেত্রে কোনও ফাঁক রাখতে নারাজ জোড়াফুল শিবির। মমতার উন্নয়ন যাতে নন্দীগ্রামের প্রতিটি কোনায় পৌঁছে যায়, সেই লক্ষ্যই আপাতত স্থির হয়েছে। এই কৌশল নিলে বিধায়ক হিসেবে শুভেন্দুও চাপে পড়বেন বলেই মত তাঁদের।
এই পরিষেবা দিতে তৃণমূল নেতৃত্বের হাতিয়ার নন্দীগ্রাম-১ ও ২ নম্বর পঞ্চায়েত সমিতি। নন্দীগ্রাম-১ পঞ্চায়েত সমিতির অধীনে রয়েছে ১০টি গ্রাম পঞ্চায়েত। আর নন্দীগ্রাম-২ পঞ্চায়েত সমিতির অধীনে ৭টি। শুভেন্দু তৃণমূল ছেড়ে বিজেপি-তে গেলেও, এখনও পঞ্চায়েত সমিতি থেকে শুরু করে গ্রাম পঞ্চায়েতগুলি শাসকদলের হাতেই রয়েছে। তাই পঞ্চায়েত প্রশাসন মারফত পরিষেবা পৌঁছনোর কাজ হবে বলে জানা গিয়েছে। পূর্ব মেদিনীপুর জেলা তৃণমূলের সভাপতি তথা তমলুকের বিধায়ক সৌমেন মহাপাত্র বলেন, ‘‘নন্দীগ্রামের মানুষকে সরকারি সুযোগ সুবিধা দেওয়া হবে পঞ্চায়েত প্রশাসন মারফত। মুখ্যমন্ত্রী আমাদের নির্দেশ দিয়েছেন, যাতে কোনও ভাবেই সরকারি পরিষেবা থেকে নন্দীগ্রামের জনতা যেন বঞ্চিত না হন। আমরা সে ভাবেই পরিকল্পনা করেছি।’’