অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।
সাধারণ সংবাদমাধ্যমগুলির বিরুদ্ধে কার্যত জেহাদ ঘোষণা করে নিজের দলের সোশ্যাল মিডিয়াকে হাতিয়ার করতে কর্মীদের নির্দেশ দিলেন তৃণমূলের যুব সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
নজরুল মঞ্চে তৃণমূলের ‘ডিজিটাল কনক্লেভ’-এ সোমবার অভিষেক বলেন, ‘‘আমরা কোনও সংবাদমাধ্যম, নিউজ চ্যানেল, সংবাদের পত্রিকার উপর নির্ভরশীল নই। আমরা আপনাদের (কনক্লেভে উপস্থিত কর্মীদের) উপর নির্ভরশীল।’’
তৃণমূলের বিরুদ্ধে বিজেপি, কংগ্রেস, সিপিএমের পাশাপাশি গণমাধ্যমগুলি বিভিন্ন সময়ে কুৎসা করে বলে অভিষেকের অভিযোগ। সেই অভিযোগ নস্যাৎ করতে ফেসবুক, টুইটার, ইনস্টাগ্রামের মতো বিভিন্ন মাধ্যমে সরব হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন যুব সভাপতি। যেখানেই কুৎসা হবে, ‘ভুয়ো খবর’ হবে, সঙ্গে সঙ্গে তথ্য পরিসংখ্যান দিয়ে জবাব দিতে হবে তৃণমূলের কর্মীদের। যুব তৃণমূল সভাপতি বলেন, ‘‘বিজেপির ফেসবুক পেজ এমনকী বিজেপির সমর্থকদের ফেসবুক পেজে নির্ভুল তথ্য-পরিসংখ্যান দিয়ে জবাব দিতে হবে। তাহলেই সমানে সমানে লড়াইটা হবে।’’
রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা ছাত্র-যুবদের এই অনুষ্ঠানে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় উপস্থিত ছিলেন না। তবে তাঁর রেকর্ড করা বার্তা শোনানো হয়। সেখানে মুখ্যমন্ত্রী ভুয়ো খবর সম্পর্কে সচেতন করতে গিয়ে বলেছেন, ‘‘রাজ্য সরকার কর্মীদের পদোন্নতি দিচ্ছে না বলে খবর প্রচারিত হয়েছে। এমন আবার হয় নাকি!’’ এ দিনই বিকেলে নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে পুজো কমিটিগুলির সঙ্গে বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী একই অভিযোগ করেন। একই সঙ্গে গত বছর দশমীর দিন দুর্গাপুজোর বিসর্জনের সঙ্গেই মহরম ছিল। সেই প্রসঙ্গ টেনে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘গত বছর বিসর্জন, মহরম, বখরি ইদ একসঙ্গে হয়েছিল। একটিও ঘটনা ঘটেনি। তাই নিয়ে সোশ্যাল নেটওয়ার্কে কত কুৎসা, ভুয়ো খবর! এ সব করে ছবি বিলোবে আর দাঙ্গা লেগে যাবে।’’ বিরোধীদের কাছে তাঁর হুঁশিয়ারি, ‘‘আগুন নিয়ে খেলবেন না।’’ ভুয়ো খবর মোকাবিলায় দলের কর্মীদের মমতা বলেন, ‘‘সোশ্যাল মিডিয়ায় বিজেপিকে কে কেমন জবাব দিতে পারছেন, তা খতিয়ে দেখে পুরস্কার দেওয়া হবে।’’
২০১৯-এর লোকসভা ভোটের আগে এই লড়াইয়ের জন্য রাজ্যের প্রত্যেক বিধানসভা কেন্দ্রে ১০০ জন করে সাইবার-সৈনিক তৈরির লক্ষ্য বেঁধে দিয়েছেন অভিষেক। সেই সৈনিকদের বিজেপির বিরুদ্ধে সাইবার দুনিয়ায় আক্রমণের পাশাপাশি তৃণমূল-বিমুখদের আবার দলে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করতে হবে বলে এই কনক্লেভে নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।