ঠাকুরবাড়িতে কংগ্রেসের প্রদীপ, আক্রমণ তৃণমূলের

এ রাজ্যে ভোটের দামামা বাজলেই গাইঘাটার ঠাকুরনগরে মতুয়াদের ঠাকুরবাড়িতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাদের আনাগোনা বাড়ে। এ বার বিধানসভা নির্বাচনের আগে, রবিবার দুপুরে সেখানে দেখা গেল কংগ্রেস সাংসদ তথা রাজ্যসভার স্বরাষ্ট্র বিষয়ক স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারম্যান প্রদীপ ভট্টাচার্যকে। তাঁর সঙ্গে ছিলেন জেলা কংগ্রেস সভাপতি (গ্রামীণ) অমিত মজুমদার-সহ দলের কিছু নেতাও।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

গাইঘাটা শেষ আপডেট: ২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ ০৩:৩৬
Share:

প্রদীপ ভট্টাচার্য

এ রাজ্যে ভোটের দামামা বাজলেই গাইঘাটার ঠাকুরনগরে মতুয়াদের ঠাকুরবাড়িতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাদের আনাগোনা বাড়ে। এ বার বিধানসভা নির্বাচনের আগে, রবিবার দুপুরে সেখানে দেখা গেল কংগ্রেস সাংসদ তথা রাজ্যসভার স্বরাষ্ট্র বিষয়ক স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারম্যান প্রদীপ ভট্টাচার্যকে। তাঁর সঙ্গে ছিলেন জেলা কংগ্রেস সভাপতি (গ্রামীণ) অমিত মজুমদার-সহ দলের কিছু নেতাও। মতুয়া মহাসঙ্ঘের প্রধান উপদেষ্টা বীণাপাণিদেবীকে (বড়মা) প্রণাম করে প্রদীপবাবু-সহ কংগ্রেস নেতারা কিছুক্ষণ কথাও বলেন। সেখানে ছিলেন বনগাঁর তৃণমূল সাংসদ তথা ‘বড়মা’র বড় পুত্রবধূ মমতাবালা ঠাকুর-সহ মতুয়া মহাসঙ্ঘের কয়েক জন কর্তা।

Advertisement

প্রদীপবাবুর এই সফর রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে অভিযোগ তুলেছে শাসকদল। রাজ্যের প্রায় ৭২টি বিধানসভা এলাকা তফসিলি সম্প্রদায় অধ্যুষিত। তাদের মধ্যে মতুয়াদের প্রভাব রয়েছে। দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে মতুয়াদের সমর্থন পেয়ে আসছে তৃণমূল। এ বার ওই ভোট কংগ্রেসের অনুকূলে আনার জন্যই প্রদীপবাবুর এই সফর বলে মনে করছেন তৃণমূল নেতারা। যদিও মমতাবালাদেবী এ নিয়ে ভিন্ন মত প্রকাশ করেছেন।

জেলা তৃণমূল সভাপতি তথা খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেন, ‘‘কংগ্রেসের নতুন দোসর হয়েছে সিপিএম। এত দিন প্রদীপবাবুরা বড়মাকে চিনতেন না। বড়মা ওদের কাছে অচ্ছুৎ ছিলেন। ভোটের আগে ওদের জোকারের ভূমিকায় দেখা যাচ্ছে। ওরা যতই জোট বাঁধুক না কেন, বিধানসভা ভোটে এই জেলায় নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে।’’ খাদ্যমন্ত্রীর অভিযোগ উড়িয়ে প্রদীপবাবুর দাবি, ‘‘আমি ভোটের জন্য এখানে আসি, এ কথা যাঁরা বলছেন, তাঁরা অজ্ঞান। তাঁদের কথায় মাথা না ঘামানোই ভাল। এটি একটি সংকীর্ণ রাজনীতির পরিচয়।’’ বনগাঁর তৃণমূল সাংসদ মমতাবালাদেবীও দাবি করেন, ‘‘প্রদীপবাবু রাজনৈতিক উদ্দেশে এসেছেন বলে আমার মনে হয় না। উনি এখানে কোনও রাজনৈতিক কথা বলেননি।’’ তা হলে প্রদীপবাবু কেন এসেছিলেন? কংগ্রেস সাংসদ জানান, মতুয়া মহাসঙ্ঘ-সহ দেশের ৭-৮টি রাজ্যের নানা সংগঠন দীর্ঘদিন ধরেই দাবি তুলছে, ও পার বাংলা থেকে উদ্বাস্তু হয়ে এসে যাঁরা এ দেশে দীর্ঘদিন
ধরে বসবাস করছেন, তাঁদের
ভারতীয় নাগরিকত্ব দিতে হবে।
এই বিষয়টি বহু বছর ধরে ঝুলে রয়েছে। একই সঙ্গে তাঁর দাবি, গত সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে ভারতীয় নাগরিকত্বের বিষয়টি নিয়ে তিনি আলোচনা করেন। কেন্দ্র সরকার জানিয়েছে, উদ্বাস্তুদের ভিসা, পাসপোর্ট-সহ নথিপত্র না থাকলেও তাঁরা এ দেশে স্থায়ী ভাবে বসবাস করতে পারবেন। এ দিন এই বিষয়টি জানাতেই তিনি মতুয়াবাড়িতে এসেছিলেন। প্রদীপবাবু বলেন, ‘‘বিষয়টি নিয়ে আমি কেন্দ্রের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছি। উদ্বাস্তুদের ভারতীয় নাগরিকত্ব দেওয়ার দাবিটি ফের তুলব। এ কথা ঠাকুরবাড়িতে এসে আগেও জানিয়েছি।’’ প্রদীপবাবুর সঙ্গী অমিতবাবুর দাবি, ‘‘মতুয়াদের মধ্যে থেকে কংগ্রেসের টিকিটে কাউকে প্রার্থী করা হলে দল যে তাঁর পাশে থাকবে, এ দিন বড়মাকে সেই আশ্বাস দিয়েছেন প্রদীপবাবু।’’

Advertisement

কংগ্রেসের এই উদ্যোগ যাতে তাঁদের পালের হাওয়া কেড়ে নিতে না পারে, সে জন্য রাজ্য সরকার যে মতুয়াদের পাশে রয়েছে, এ দিন তা জানাতে ভোলেননি জ্যোতিপ্রিয়বাবু। তাঁর দাবি, ‘‘ও পার বাংলা থেকে এসে যাঁরা অন্তত পাঁচ বছর এ রাজ্যে বাস করছেন, তাঁদের নাগরিকত্ব দেওয়া নিয়ে দিন কয়েক আগেই রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকে সিদ্ধান্ত নিয়ে কেন্দ্রকে জানানো হয়েছে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement