হাওড়া সেতুতে আদিবাসীদের মিছিল। নিজস্ব চিত্র।
আবারও আদিবাসীদের মিছিলের জেরে স্তব্ধ হয়ে গেল হাওড়া সেতু। যার জেরে কলকাতাগামী এবং হাওড়ামুখী যান চলাচল প্রায় স্তব্ধ হয়ে গিয়েছে। চরম ভোগান্তির মুখে পড়তে হচ্ছে নিত্যযাত্রীদের। এই মিছিলের জেরে স্ট্র্যান্ড রোড, ব্রেবোর্ন রোড এবং মহাত্মা গান্ধী রোডে ব্যাপক যানজটের সৃষ্টি হয়েছে।
বৃহস্পতিবার সাড়ে ১১টা নাগাদ হাওড়া সেতু ধরে আদিবাসীদের বিরাট মিছিল ধর্মতলার উদ্দেশে রওনা দিয়েছে। ভারত জাকাত মাজি পরগনা-র ডাকে এই মিছিলের আয়োজন। ধর্মতলায় সমাবেশ করার কথা রয়েছে তাদের। আদিবাসী এই সংগঠনের তরফে জানানো হয়েছে, আদিবাসীদের বেশ কিছু দাবিদাওয়া নিয়েই এই সমাবেশের আয়োজন। তাদের দাবি, সংশোধিত বন সংরক্ষণ আইন (২০২৩) বাতিল করতে হবে। আদিবাসীদের ‘ধরম কোড’ দিতে হবে। এ ছাড়াও সাঁওতাল ভাষাকে মর্যাদা দেওয়ার দাবি তুলেছেন আদিবাসীরা।
আদিবাসীদের আচমকা এই মিছিলের জেরে চরম ভোগান্তির মুখে পড়তে হচ্ছে নিত্যযাত্রীদের। একের পর এক বাস হাওড়া সেতুতে ওঠার মুখে দাঁড়িয়ে। হাওড়াগামী যানবাহনগুলি যেমন আসতে পারছে না, তেমনই কলকাতামুখী যানবাহনগুলিও থমকে গিয়েছে এই মিছিলের জের। হাওড়া সেতু ধরে মিছিল ধর্মতলার দিকে যাচ্ছে। ফলে সেতু সংলগ্ন ব্রেবোর্ন রোড, স্ট্র্যান্ড রোড এবং মহাত্মা গান্ধী রোডে থমকে গিয়েছে যান চলাচল। বার বার এ রকম মিছিলের জেরে ভোগান্তির মুখে পড়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বহু নিত্যযাত্রী।
এর আগেও আদিবাসীদের এমনই মিছিলের জেরে অফিসের ব্যস্ত সময়ে চরম ভোগান্তির শিকার হতে হয়েছিল নিত্যযাত্রী থেকে সাধারণ মানুষকে। দিনভর সেই মিছিলের জেরে শহরের একাংশ প্রায় থমকে গিয়েছিল। গত ২৯ সেপ্টেম্বর এমনই এক ব্যস্ত দিনে আচমকাই হাওড়া সেতু অবরোধ করে আদিবাসীরা। রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষ হাওড়ায় হাজির হন। তার পর তাঁরা মিছিল করে ধর্মতলায় যান। তাঁদের দাবি ছিল, কুড়মি-মাহাতোরা চাইছেন জোর করে তফসিলি জনজাতির তকমা পেতে। রাজনৈতিক মদতও পাচ্ছেন তাঁরা। তারই প্রতিবাদে পথে নামে ‘ইউনাইটেড ফোরাম অফ অল আদিবাসী অর্গানাইজেশন্স’। সেপ্টেম্বরের সেই মিছিলের জেরে গাড়ির চাকা স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিল। হাওড়া থেকে ফেরি বা লঞ্চে উঠে বাবুঘাট চত্বরে এসেও বিপাকে পড়েন যাত্রীরা। অত্যধিক ভিড়ের কারণে লঞ্চ পরিষেবা কিছু সময় বন্ধ রাখতে হয়। পরে লঞ্চে করে মধ্য কলকাতায় পৌঁছেও বাস বা অন্য গণপরিবহণ না থাকায় অসুবিধার মুখে পড়েন যাত্রীরা। বেলা গড়াতে ভিড় বাড়তে থাকে মেট্রোতেও।