অনুব্রত মণ্ডল। —ফাইল চিত্র।
তৃণমূল নেতা অনুব্রত মণ্ডলের বিরুদ্ধে আবার শুরু হতে চলেছে বিচার পর্ব। আগামী ফেব্রুয়ারি মাসেই গরু পাচার মামলার যাবতীয় শুনানি হবে। তার আগে ওই মামলা সংক্রান্ত একাধিক চার্জশিটের কপি, বিভিন্ন রিপোর্টের প্রতিলিপি-সহ এক লক্ষ পাতার নথি অনুব্রতের কাছে পৌঁছে দিল সিবিআই। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার একটি সূত্রে খবর, শুধু অনুব্রতই নন, গরু পাচার মামলার ১২ জন অভিযুক্তকেই এক লক্ষ পাতার নথি সরবরাহ করা হয়েছে। মামলার বিচার পর্ব শুরু হওয়ার আগে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে অভিযুক্তদের কাছে ওই নথি তুলে দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে সিবিআই।
বস্তুত, গত ২২ জানুয়ারি সিবিআইয়ের আইনজীবী তথা কেন্দ্রের অতিরিক্ত জেনারেল এসভি রাজু জানান, সংশ্লিষ্ট মামলার তদন্ত শেষ। চার্জশিট জমা দিয়ে দেওয়া হবে। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ রয়েছে, আগামী ২২ ফেব্রুয়ারি থেকে বিচারপ্রক্রিয়া শুরু করার। বিচারপতি বেলা এম ত্রিবেদী এবং পঙ্কজ মিথলের বেঞ্চ ওই নির্দেশ দেয়।
গরু পাচার মামলায় অনুব্রত এক বছরের বেশি সময় জেলে। ওই মামলায় চারটি চার্জশিট জমা পড়েছে। কিন্তু এখনও বিচার শুরু হয়নি। কারণ, তদন্ত শেষ হয়নি। অন্য দিকে, মূল অভিযুক্ত-সহ বেশ কয়েক জন জামিন পেয়ে গিয়েছেন। শুধু অনুব্রত জামিন পাচ্ছেন না। জেলে থাকাকালীন অনুব্রতের বিরুদ্ধে বিশেষ সিবিআই আদালতের বিচারককে হুমকি চিঠি পাঠানোর অভিযোগ ওঠে। বলা হয়, অনুব্রতকে জামিন না দিলে বিচারকের পরিবারের লোকেদের মাদকের মামলায় ফাঁসানো হবে। সুপ্রিম কোর্ট তা নিয়ে প্রশ্ন তুললে আজ রোহতগি যুক্তি দেন, বর্ধমান আদালতের কর্মী বাপ্পা চট্টোপাধ্যায়ের নামে ওই চিঠি পাঠানো হয়। ব্যক্তিগত রেষারেষির জেরে আইনজীবী সুদীপ্ত রায় বাপ্পার নামে সেই চিঠিটি পাঠান। তার সঙ্গে অনুব্রতের সম্পর্ক নেই। সুদীপ্তকে গ্রেফতারও করে পুলিশ।
অনুব্রতকে প্রথমে গ্রেফতার করে সিবিআই। প্রথমে আসানসোল সংশোধনাগারে রাখা হয়েছিল কেষ্টকে। পরে তিহাড় জেলে নিয়ে যাওয়া হয় তৃণমূল নেতাকে। তখন থেকে তিহাড়েই বন্দি অনুব্রত। পরে তাঁর মেয়ে সুকন্যা মণ্ডলকেও গ্রেফতার করা হয়। কিন্তু অনুব্রত মামলার ট্রায়াল কিছুতেই শুরু হচ্ছিল না। এর মধ্যে বেশ কয়েক বার কেষ্ট জামিনের আর্জি জানিয়েছিলেন। কিন্তু প্রত্যেক বারই খারিজ হয়েছে। তাই বিচারপ্রক্রিয়া শুরু করা নিয়ে অনুব্রতের আইনজীবী সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন। অন্য দিকে, ইডির আইনজীবী এসভি রাজু সুপ্রিম কোর্টে অনুব্রতের জামিনের আর্জির বিরোধিতা করেন। তিনি সওয়ালে জানান, অনুব্রতই মূল অভিযুক্ত। জামিন পেলে তিনি সাক্ষ্য প্রমাণ নষ্ট করতে পারেন। উল্লেখ্য, অনুব্রত মণ্ডলের মামলা দিল্লির রাউস অ্যাভিনিউ আদালতে চলছে।